Advertisement
E-Paper

দুর্ভাগ্যজনক আক্রমণ! আগুনটা কিন্তু ধরে রাখতে হবে

প্রদীপের নীচেই অন্ধকারটা সবচেয়ে বেশি থাকে। অন্ধ সংস্কারে আচ্ছন্ন একটা সমাজকে আলো দেখাতে চেয়েছিলেন যিনি সেই কনকদুর্গা নিজের পরিবারের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না। নিজের বাড়িতে আক্রান্ত হতে হল কনকদুর্গাকে, আক্রান্ত হতে হল নিজের পরিবারের হাতে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৩৩
নিজের বাড়িতেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত কনক দুর্গা। ছবি: রয়টার্স।

নিজের বাড়িতেই শাশুড়ির হাতে আক্রান্ত কনক দুর্গা। ছবি: রয়টার্স।

প্রদীপের নীচেই অন্ধকারটা সবচেয়ে বেশি থাকে। অন্ধ সংস্কারে আচ্ছন্ন একটা সমাজকে আলো দেখাতে চেয়েছিলেন যিনি সেই কনকদুর্গা নিজের পরিবারের হাত থেকে রক্ষা পেলেন না। নিজের বাড়িতে আক্রান্ত হতে হল কনকদুর্গাকে, আক্রান্ত হতে হল নিজের পরিজনের হাতে।

কেরলের শবরীমালা পাহাড়ে আয়াপ্পা স্বামীর মন্দিরে প্রবেশ করে ইতিহাস গড়েছেন কনকদুর্গা। প্রবল প্রতিবন্ধকতা ছিল, প্রাণ সংশয় ছিল। সব তুচ্ছ করে শবরীমালার মন্দিরে পৌঁছেছিলেন কনকদুর্গা।

বিন্দু ও কনকদুর্গার শবরীমালা প্রবেশ গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। কেরল তো বিক্ষোভে উত্তাল হয়েইছিল। ভারতের অন্যান্য প্রান্তেও গেরুয়া বিক্ষোভ প্রকাশ্যে আসছিল।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

ইতিহাস যাঁরা তৈরি করেন, তাঁরা নিজেদের যাত্রাপথে নিজেদের ঘর থেকেই খুব বড় বাধার সম্মুখীন হন। বিশেষত, সমাজ সংস্কারদের ক্ষেত্রেই এমনটা ঘটে থাকে। চৈতন্য মহাপ্রভুকে নিজের নবদ্বীপেই বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল প্রথমে। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর যে ধর্মের সংস্কারের জন্য এক অসম সাহসী লড়াই করেছিলেন, সেই ধর্মের স্বঘোষিত রক্ষকরাই বিদ্যাসাগরকে সব থেকে বেশি আক্রমণ করেছিলেন। এক পর্যায়ে পৌঁছেও নিজের পরিবারে বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল বিদ্যাসাগরকে। এ বার বোঝা গেল কেরলের কনকদুর্গা কম বড় বৈপ্লবিক কাজ করেননি। সামাজিক বিরোধিতা তো ছিলই, নিজের ঘরেও বিরোধিতা ছিল তীব্র। সব অগ্রাহ্য করে, প্রাণ ভয় তুচ্ছ করে শবরীমালার মন্দিরে প্রবেশ করার প্রতিজ্ঞা পূর্ণ করেছিলেন কনকদুর্গা। ভবিষ্যতের জন্য দিশারি হয়ে উঠেছিলেন। কিন্তু, এত কিছুর পরও নিজের বাড়িতে নিজের শাশুড়ির হাতে এমন মারাত্মক ভাবে আক্রন্ত হতে হবে, তা সম্ভবত কনকদুর্গা আশা করেননি।

আরও পড়ুন: শবরীমালায় ঢুকে ইতিহাস গড়া কনক দুর্গা শাশুড়ির মারে হাসপাতালে

কনকদুর্গা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর দ্রুত আরোগ্যই কাম্য। তাঁর সঙ্গে যা ঘটল, সমাজ সংস্কারের লড়াইতে সামিল হওয়া অনেকের সঙ্গেই এমনটা ঘটে থাকে বলে আমরা জানি ঠিকই। তবু, এই আক্রমণকে দুর্ভাগ্যজনক তো বলতেই হচ্ছে। খেয়াল রাখা দরকার, এই আক্রমণ যেন সংগ্রামের আগুনটাকে নিভিয়ে দিতে না পারে, এই আক্রমণ যেন ভবিষ্যতের কনকদুর্গাদের পথ আগলে না দাঁড়াতে পারে।

Sabarimala Violence Kanaka Durga শবরীমালা কেরল Kerala Bindu Ammini Newsletter Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy