Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু

দোলন গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘যদি আমরা, নাস্তিকের দল, ধর্মের এই বিপর্যয়ের দিনে, জয়োল্লাসে মাতি, তা হলে আমরাও কিন্তু সাম্প্রদায়িক।’ (‘পাশাপাশি থাকাটা শিখতে হবে’, ২৯-৪ ) ধর্মের বিপর্যয় বলতে লেখক ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না।

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০১৭ ০১:১৬

নাস্তিকতা ধর্ম নয়

• দোলন গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, ‘যদি আমরা, নাস্তিকের দল, ধর্মের এই বিপর্যয়ের দিনে, জয়োল্লাসে মাতি, তা হলে আমরাও কিন্তু সাম্প্রদায়িক।’ (‘পাশাপাশি থাকাটা শিখতে হবে’, ২৯-৪ ) ধর্মের বিপর্যয় বলতে লেখক ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন, তা বোঝা যাচ্ছে না। ধর্মের বিপর্যয় বলতে যদি বোঝানো হয়, বিজ্ঞানসম্মত, কুসংস্কারমুক্ত শিক্ষার প্রচারের দ্বারা ধীরে ধীরে ধর্মের প্রতি মানুষের উদাসীনতা, নির্লিপ্ত মনোভাবের সৃষ্টি, ধর্মমুক্ত সমাজ গঠনের জন্য মানুষের সমষ্টিগত প্রয়াস, তা হলে নাস্তিকরা সেই ধর্মের বিপর্যয়কে স্বাগত জানাবে। কেননা, ধর্মগুলো বাস্তবে তাদের প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছে। ধর্মগুলো, নৈতিকতার একচেটিয়া উৎসও নয়। সবচেয়ে বড় কথা, ধর্মগুলোর নিজেদের পারস্পরিক রেষারেষি এখনও তীব্র, যার উদাহরণ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে স্পষ্ট। ধর্মগুলো হিংসা, হানাহানি সৃষ্টির অন্যতম কারণ।

অন্য দিকে, নাস্তিকরা ঈশ্বরের অস্তিত্বে অবিশ্বাসী। তাই, নাস্তিকতা কোনও ধর্ম নয় বা কোনও ধর্মগ্রন্থের প্রতি প্রশ্নহীন বিশ্বাস ও শ্রদ্ধাও নয়। সুতরাং, নাস্তিকরা কখনওই সাম্প্রদায়িক নয়। নাস্তিকরা কেউই চায় না, বিশেষ কোনও সম্প্রদায়ের উন্নতির স্বার্থে অন্য সম্প্রদায়ের ওপরে অত্যাচার, নিপীড়ন। তাদের কাছে সকল মানুষই সমান।

ধর্মীয় মৌলবাদের অবলুপ্তির জন্য ধর্ম নিয়ে সমালোচনার পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে, অন্য বিষয়ের মতো ধর্মকেও প্রতিনিয়ত প্রশ্নবিদ্ধ করতে হবে, খেয়াল রাখতে হবে বাক্‌স্বাধীনতা যাতে যথাযথ রক্ষিত হয়। গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল সমাজ গঠন করতে গেলে এইগুলোর দিকে খেয়াল রাখা জরুরি।

অনুপম সেনগুপ্ত

যাদবপুর, কলকাতা

অমরত্বের আশা

• ১৯৪৫ সালে ঘনাদার প্রথম আবির্ভাব। আজ তাঁর বয়স বাহাত্তর (বনমালী নস্কর লেনের ‘মেস’-এর ঠিকানার সমান সংখ্যা)। কবি, সাহিত্যিক, চিত্রনাট্যকার, গীতরচয়িতা, চিত্রপরিচালক, প্রযোজক প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘অমর’ সৃষ্টি ঘনাদা সত্যই কি ‘অমর’? ঘনাদার ‘অমরত্ব’-র দায় কিন্তু পাঠকের। তাঁর গুণমুগ্ধদের।

‘সত্যজিৎ রায় সোসাইটি’র মতো সংগঠন প্রেমেন্দ্র মিত্রের ক্ষেত্রে সে ভাবে তৈরি হয়নি। তাই, ফেলুদার সুবর্ণজয়ন্তীর মতো ঘনাদার বাহাত্তর বছর পালনও হবে না। প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছেলে হিসেবে আমরা যত দূর করা সম্ভব, করার চেষ্টা করেছি। প্রকাশকদের সাহায্যে একত্রিত ভাবে প্রকাশিত, পুনঃপ্রকাশিত হয়েছে তাঁর সেরা রচনা: কবিতা সমগ্র, গল্প সমগ্র, মামাবাবু সমগ্র, কল্পবিজ্ঞান সমগ্র ইত্যাদির সঙ্গে তিন খণ্ডে ‘ঘনাদা সমগ্র’ও।

ঘনাদার অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতা শুনত শিবু, শিশির, গৌর আর সুধীর। কল্পবিজ্ঞান, অ্যাকশন, অ্যাডভেঞ্চার থেকে ঐতিহাসিক চক্রান্ত— ছিল সবই। বেশির ভাগ গল্পেই ঘনাদা অসাধারণ জ্ঞানী, বুদ্ধিদীপ্ত নায়ক, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড ঘুরে বেড়িয়েছেন দুষ্ট আর কুচক্রীদের দমন করতে। মজার ব্যাপার, ঘনাদার গল্পে বর্ণিত ভৌগোলিক, ঐতিহাসিক বা বৈজ্ঞানিক তথ্য কিন্তু কল্পিত নয়।

১৯৭৪-এ ‘স্প্যান’ পত্রিকায় ‘কল্পবিজ্ঞানের জনক’ এইচ জি ওয়েলস-এর সঙ্গে তুলনা করা হয় প্রেমেন্দ্র মিত্রকে। সেখানে একটি সাক্ষাৎকারে প্রেমেন্দ্র মিত্র বলেছিলেন, ‘ঘনাদা বানিয়ে গল্প বলে ঠিকই, কিন্তু গল্পগুলোর একটা যথার্থ বৈজ্ঞানিক ভিত্তি আছে। আমি যত দূর পেরেছি সেগুলোকে প্রামাণিক আর নির্ভেজাল রাখার চেষ্টা করেছি।’

গিরিধারী সরকারের লেখার (‘তাই বলে...’, সম্পাদক সমীপেষু, ২৮-৪) সমর্থনে শুধু একটাই ইচ্ছে। ঘনাদার বয়স না-ই বা বাড়ল, না-ই বা হল ছবি অথবা ‘সোসাইটি’, বিদ্যালয়ে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ্য হলে হয়তো ‘অমর’ হলেও হয়ে যেতে পারেন ঘনাদা।

মৃন্ময় মিত্র

কলকাতা

ঘনাদা ফ্যান ক্লাব

• গিরিধারী সরকার চিঠিতে দু়ঃখ প্রকাশ করেছেন ঘনাদার নামে আজ পর্যন্ত কোনও সোসাইটি হয়নি বলে। যথার্থই হয়নি। তবে অকাল-প্রয়াত লেখক, প্রবন্ধকার এক অনন্যসাধারণ প্রতিভার অধিকারী সিদ্ধার্থ ঘোষ ‘ঘনাদা ফ্যান ক্লাব’ নামে এক সংঘ গড়ে তুলেছিলেন। এ ব্যাপারে স্বয়ং প্রেমেন্দ্র মিত্রের আশীর্বাদ ছিল এবং শ্রীঘোষ নিয়মিত তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেন। দুর্ভাগ্য, সিদ্ধার্থ ঘোষের জীবনে কিছু ব্যক্তিগত দুর্যোগ নেমে আসে। এবং ক্লাবটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সে রকম ভাবে কেউ এগিয়ে এসেছেন বলে শুনিনি।

সুব্রত ঘোষ

কলকাতা-৬৮

ভুলিনি

• ২০১৫ সালে প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘ঘনাদা’ পা রাখেন সত্তরে। সবিনয়ে জানাই, ঘনাদাকে ভুলিনি বলেই এই উপলক্ষে অন্তর্জালে সাজানো হয় ‘ঘনাদা গ্যালারি’। প্রথমে ফেসবুক পেজ, পরে ওয়েবসাইট রূপে। ‘ঘনাদা গ্যালারি’ প্রধানত অলংকরণ আর্কাইভ। দুষ্প্রাপ্য বার্ষিকী ও পত্রিকায় লুকোনো ঘনা-কাহিনির প্রথম প্রকাশিত চিত্রগুচ্ছ এখানে সংরক্ষিত। সঙ্গে তাঁর গ্রন্থের যাবতীয় প্রচ্ছদ, ছবি। এ ছাড়াও আছে প্রেমেন্দ্র মিত্রের সাক্ষাৎকার, বইয়ের বিজ্ঞাপন, ‘ঘনাদা ক্লাব’, কমিক‌্‌সে, অনুবাদে ও শ্রুতিমাধ্যমে ঘনশ্যাম দাস প্রভৃতি বিষয়ে সচিত্র অনলাইন প্রদর্শনী। প্রচারের অভাবে এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ হয়তো সবার নজরে আসেনি। ‘ঘনাদা গ্যালারি’ ওয়েবসাইট: http://ghanada.wix.com/ghanada-gallery

সৌরভ দত্ত

কলকাতা-১৯

একাদশ শ্রেণি

• প্রেমেন্দ্র মিত্রের ছোটগল্প ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ দ্বাদশ শ্রেণি নয়, একাদশ শ্রেণির বাংলা পাঠ্য বইতে আছে।

সায়ন তালুকদার

কলকাতা-৯০

নিয়ম খাটে না?

• বিহারের মাননীয় উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব ‘সিংহাসন’ আসীন (১-৫, পৃঃ ৭)! খুবই নান্দনিক দৃশ্য সন্দেহ নেই! কিন্তু, সিংহাসনটি বিহার সংগ্রহশালায় সযত্নে রক্ষিত সম্রাট অশোকের আসনের একটি আদল! সরকারি সংগ্রহশালার বস্তুসামগ্রী ব্যক্তিগত ব্যবহার্য তো নয়ই; স্পর্শও করা যায় না। দুষ্প্রাপ্য, প্রাচীন ও মূল্যবান জিনিসগুলি প্রদর্শন নিমিত্তই রাখা থাকে। পরবর্তী প্রজন্ম যেন এগুলি দেখে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করতে পারে।

মন্ত্রী বা উচ্চপদস্থদের ক্ষেত্রে কি সরকারি সংগ্রহশালার এ নিয়ম প্রযোজ্য নয়?

সাবির চাঁদ

রামপাড়া মাঙ্গনপাড়া হাইস্কুল(উ.মা), রেজিনগর, মুর্শিদাবাদ

ক্র্যাশ কোর্স

• ইদানীং সিবিআই জেরা রাজনীতিবিদদের একাংশের কাছে মূর্তিমান বিভীষিকা হয়ে দেখা দিয়েছে। অভিযুক্তদের কেউ আইনি পথে সিবিআই তদন্ত ঠেকাতে চান, কেউ বা তোতাপাখির মনিব বা তার তুতো ভাইদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা স্থাপন করে সিবিআই-এর মোকাবিলা করতে আগ্রহী। সিবিআই কর্তৃক গ্রেফতারের অব্যবহিত পরে অনেককে শরীর খারাপের অজুহাতে পাঁচতারা বেসরকারি হাসপাতালে কালযাপন করতে দেখা যায়। দিল্লি গিয়ে কেউ সেট করতে চাইলে অনেকে নাকি আতঙ্কে আপসেট হয়ে পড়েন। এই সাপ-লুডোর সাসপেন্স অধুনা রাজনীতির এক অন্যতম চিত্তাকর্ষক বিনোদন। আগামী দিনে রাজনৈতিক পেশায় যাঁরা সফল হতে চান, তাঁদের সিবিআই জেরা-সংক্রান্ত এপিসোড ঠিক ভাবে মোকাবিলা করার জন্য ক্র্যাশ কোর্স চালু করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

রাজশেখর দাস

কলকাতা-১২২

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy