‘শহরে ঋতুকালীন ছুটি’ শীর্ষক সংবাদপাঠে (৩১-১২) মিশ্র প্রতিক্রিয়া হল। এটা ঠিকই যে ‘পিরিয়ড’ নিয়ে ছুতমার্গ বা ট্যাবু অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা গিয়েছে। মেডিসিন শপে ‘স্যানিটারি ন্যাপকিন’ কিনতে গিয়ে মহিলা বা পুরুষ কেউই আজ অপ্রস্তুত হন না। কিছু কলেজে ভেন্ডিং মেশিন চালু করা গিয়েছে, জীবনশৈলী শিক্ষার পাঠ স্কুল থেকেই ছেলে-মেয়েরা লাভ করছে। আর সর্বজ্ঞানী গুগ্ল বা টিভির বিজ্ঞাপন বাকি ফাঁকটুকু পূরণ করে চলেছে।
এতৎসত্ত্বেও প্রশ্ন হল, আলাদা করে বছরে ১২টি ‘পিরিয়ড লিভ’ বিতরণ ঋতুমতী কর্মীকে আলাদা করে বিড়ম্বনায় ফেলবে কি না? নারীকে সৌন্দর্যায়নের নামে শাঁখা-সিঁদুর বা পায়ের মল পরিয়ে ‘দেগে’ দেওয়ার মতো এ পুরুষতন্ত্রের নতুন কোনও কৌশল নয় তো? একান্ত গোপনীয় এই শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়া সর্বসমক্ষে বেআব্রু করার জন্য কত জন মহিলা কর্মীই বা মানসিক ভাবে প্রস্তুত থাকবেন? সহ-পুরুষকর্মীরাও কি তা সত্যিই স্পোর্টিংলি মেনে নেবেন, আড়ালে আদৌ চর্চা করবেন না?
পাঠক খেয়াল রাখবেন, মেট্রোয় মহিলা যাত্রীদের উদ্দেশে যে পরিমাণ কটূক্তি ভেসে আসে, তা কিন্তু পরিণত বোধের সঙ্গে আদৌ খাপ খায় না। যে দেশে আজও ঋতুযোগ্যা কুমারী/ মহিলাদের এক বিশেষ মন্দিরে প্রবেশের অধিকার মেলে না, সেখানে এত দূর আধুনিকতা গুরুপাক হবে না তো? শেষমেশ, রজঃনিবৃত্তির সীমানায় দাঁড়িয়ে থাকা মহিলা কর্মীকে দরখাস্তের সঙ্গে অন্য কোনও প্রমাণ দাখিল করতে হবে কি!
সীমা দাস
সুকান্ত সরণি, ব্যারাকপুর
হয়রানি
বিবাহের দরুন ২৪-৯-২০১৩’য় আমি আমার ভোটার কার্ডে ঠিকানা, পদবি পরিবর্তন এবং পিতার নামের জায়গায় স্বামীর নাম টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে নথিভুক্ত করার জন্য ৬নং ফর্মে আবেদন করি। ২৮-১১-২০১৩’য় শ্বশুরবাড়ির ঠিকানায় আবেদন মতো আমার নাম ওঠে। গত তিনটি নির্বাচনে স্থানীয় বিদ্যালয়ের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ভোটও দিয়েছিলাম। হঠাৎ তিন বছর পরে টালিগঞ্জের ইলেকটোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের (ইআরও) থেকে একটি নোটিস পাই! তাতে বর্তমান ঠিকানার বাসিন্দা প্রমাণের কাগজপত্র দাখিলের কথা বলা হয়। সেই জন্য ভোটার তালিকায় আমার নাম রাখার জন্য আলিপুর নিউ ট্রেজ়ারি বিল্ডিংয়ে যাই। অস্টিয়ো-আর্থ্রাইটিসের দরুন হাঁটুর ব্যথার অসহ্য যন্ত্রণা সত্ত্বেও বহু কষ্টে বিশাল লম্বা লাইনে দাঁড়াই। অবশেষে অপেক্ষা করে ছ’ঘণ্টা পরে সাত তলায় ইআরও-র অফিসে উঠি। সেখানে হিয়ারিংয়ের সময় বর্তমান বাসস্থান প্রমাণের কাগজপত্রের সঙ্গে আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কাছে জমা দিই ১৫-১১-২০১৬’য়।
এর পরেও অযৌক্তিক ভাবে টালিগঞ্জের ইআরও আরও একটি নোটিস পাঠান। সেটি পেয়ে ১৬-৪-২০১৭’য় আবারও আলিপুরে যাই। এবং ভোটার তালিকায় নাম রাখার জন্য ব্যাঙ্কের পাসবই ও বর্তমান ঠিকানার স্থায়ী বাসিন্দা প্রমাণপত্রের একাধিক ফটোকপি-সহ পুনর্বার আবেদনপত্র জমা দিই ১৬-৪-২০১৭’য়। তখন ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের পরে নোটিসের উপরে ‘হিয়ারিং অ্যাকসেপ্টেড’ বলে লিখে দেন ইআরও-র আধিকারিক।
কিন্তু পরে জানতে পারি যে, বিবাহের পূর্বের ঠিকানা ১৫০ যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে আমার নাম বাদ যায়নি। অথচ আমি ২৪-৯-২০১৩’য় নাম বাদ দেওয়ার জন্য ফর্ম-৬’এর ডিক্লারেশন পোর্শন-এর নির্দেশ মতো আমার পূর্বতন বিধানসভা কেন্দ্রের নাম, রাজ্যের নাম, বাপের বাড়ির ঠিকানা, এপিক নং (যা অপরিবর্তিত) ইত্যাদি উল্লেখ করেছিলাম। নিয়ম অনুযায়ী পূর্বতন কেন্দ্র থেকে আমার নাম স্বাভাবিক ভাবেই বাদ যাওয়ার কথা। তাই আবারও আলিপুরে যাই। এবং নিজ উদ্যোগে পার্ট নং-২১৬’তে আমার নাম বাদ দেওয়ার জন্য ১৫০ যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ইআরও-র কাছে ৭নং ফর্মে আবেদন জমা দিই ২৫-৪-২০১৭’য়।
কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে আমাকে কিছু না জানিয়েই তুঘলকি সিদ্ধান্তে যাদবপুরের বদলে টালিগঞ্জ কেন্দ্রের ভোটার তালিকা (২২-৮-২০১৭’য় প্রকাশিত) থেকে আমার নাম বাদ দিয়ে দেন টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের ইআরও। এই জন্য গত ১২-৯-২০১৭’য় নাম নথিভুক্ত করার জন্য স্থানীয় আজাদগড় বালিকা বিদ্যালয়ে ৬নং ফর্মে পুনর্বার আবেদনপত্র জমা দিই। এবং ১৩-৯-২০১৭’য় যাদবপুর বিধানসভা কেন্দ্রের পার্ট নং ২১৬-তে নাম বাদ দেওয়ার জন্য বিজয়গড় বিদ্যাপীঠ যাই। সেখানে এক নতুন ‘নেতা’র ‘দাদাগিরি’তে ৭নং ফর্মে আবেদনপত্র জমা না নিয়েই বেলা তিনটের আগেই চলে যান সংশ্লিষ্ট ভোটকেন্দ্রের বিএলও। কিছু দিন পরে ৭নং ফর্মে পুনর্বার আবেদন জমা দিই।
অবশেষে টালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে আবার আমার নাম উঠেছে। কিন্তু চূড়ান্ত ভোটার তালিকা (১০-০১-২০১৮’য় প্রকাশিত) দেখে আমার চক্ষু চড়কগাছ— আমার পদবি ‘দাস’-এর পরিবর্তে ‘দে’ হয়েছে! আর ভানুমতীর ভেলকিতে ভোটার তালিকায় আমার স্বামীর নামের স্থানে পিতার নাম ‘সন্তোষ ক্র দে’ (সঠিক বানান হবে সন্তোষ কুমার দে) হয়ে গিয়েছে! তাই ৩০-০১-২০১৮’য় গাঁধী কলোনি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে গিয়েছিলাম। সেখানে বহু বার বলার পরেও উপস্থিত ইআরও-র আধিকারিক ও কর্মীরা তালিকার ভুল সংশোধনের কোনও ব্যবস্থা করেননি এবং আমার অভিযোগপত্রও নেননি।
এমন একুশে নিয়মকানুনের জন্য হয়তো আগামী দিনে আর ভোট দিতে পারব না। তাই প্রশ্ন জাগে, সঠিক কাগজপত্র-সহ ফর্ম পূরণ করার পরেও ভোটার এত হয়রান হবেন কেন? কমিশনের সংশ্লিষ্ট আধিকারিক ও কর্মীদের অজ্ঞতা ও ভুলের খেসারত ভোটারকে দিতে হবে কেন? একাধিক বার বিভিন্ন ফর্মে (৬, ৭ বা ৮ নম্বর) ভোটারকে আবেদন করতেই বা হবে কেন?
স্বপ্না দাস
কলকাতা-৪০
তদন্ত ধামাচাপা
সিবিআই বা ইডি আর্থিক দুর্নীতির কোনও তদন্ত শুরু করলে, যার বা যাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়, তারা সমস্বরে বলতে শুরু করে— এটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। মিডিয়াও হাবেভাবে বুঝিয়ে দেয় যে এই বক্তব্যে তারা সহমত পোষণ করছে। বরং তদন্তকে মাঝেমধ্যে যে ভাবে ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়ে রাখা হয় সেটাই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। যদি প্রতিবাদ জানাতেই হয়, তবে তদন্তের নামে এই প্রহসনের বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ জানানো উচিত। কিন্তু এ দেশে দেখা যায় উল্টো চিত্র! ঝিমিয়ে থাকা তদন্ত হয়তো একটু নড়াচড়া শুরু করল। তখন হয়তো সামনে কোনও নির্বাচন। অমনি বিরোধী দলগুলি চিৎকার শুরু করবে: প্রতিহিংসা, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত! কথাটা যে একেবারে ভুল তা নয়। কিন্তু ‘নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল’ নয় কি? এমনিতেই কেন্দ্রের শাসক দলের বিভিন্ন পারমিউটেশন কম্বিনেশনে দুর্নীতির তদন্ত কখনও ঝাঁপি খোলে কখনও ঝাঁপির মুখ বন্ধ হয়। সেখানে মাঝেমধ্যেই এমন ডামাডোল পাকিয়ে বিষয়টিকে ঘুলিয়ে দেওয়ার মানে কী?
প্রণব রাহা
দুর্গাপুর
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
ভ্রম সংশোধন
• গৌতম ভদ্রের ‘মাস্টারমশাই’ শীর্ষক প্রবন্ধে (পৃ ৪, ১৩-১) একটি লাইন ছাপা হয়েছে: ‘নব্বইয়ের দশকে অর্থনৈতিক ইতিহাস চর্চার রবরবা, তপন রায়চৌধুরী আর ধর্মা কুমার-এর সম্পাদনায় দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ইন্ডিয়াজ় ইকনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল হিস্ট্রি রিভিউ’-এর মতো পত্রিকার প্রকাশ শুরু হয়েছে।’— ‘নব্বইয়ের দশক’ নয়, হবে সত্তরের দশক।
• ‘মৃতকে বদলি’ শীর্ষক খবরে (দেশ, পৃ ৮, ১৩-১, জেলা সংস্করণ) ত্রিপুরার বন্ধ সংক্রান্ত খবর বসানো হয়েছে।
• ‘দূরের ট্রেনে কম সময়ে...’ শীর্ষক খবরের (রাজ্য, পৃ ৫, ১৪-১, কিছু সংস্করণ) শিরোনামে জলের বদলে দল লেখা হয়েছে।
অনিচ্ছাকৃত এই ভুলগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy