চন্দননগরে উর্দি বাজার মোড়ে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর একটি আবক্ষ মূর্তি আছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, মূর্তিটিতে চিরাচরিত গোল ফ্রেমের বদলে ত্রিভুজ আকৃতির চশমা পরানো হয়েছে। যা বেমানান এবং দৃষ্টিকটু। এতে নেতাজির মূর্তির সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। নেতাজি আজীবন গোল ফ্রেমের চশমা ব্যবহার করতেন। অবিলম্বে নেতাজির মূর্তি থেকে ওই চশমা খুলে ফেলা হোক। এবং গোল ফ্রেমের চশমা পরানো হোক। শুধু ওই মূর্তি বলে নয়, নেতাজির আরও অনেকগুলি মূর্তি আছে, সেখানে চিরাচরিত গোল ফ্রেমের চশমার বদলে অন্য আকারের চশমা ব্যবহার করা হয়েছে। সংশোধন প্রয়োজন।
বিশ্বনাথ বিশ্বাস
কলকাতা-১০৫
পরিবেশের স্বার্থে
আমার জানালা দিয়ে উত্তর দিকে তাকালেই দেখা যায় একটা পুকুর, যার রাশভারী নাম কালিগঙ্গা। তাই এই পুকুরে দীর্ঘ দিন ধরে চলে আসছে প্রতিমা বিসর্জন। আমাদের ছোটবেলায়, মানে ৪৫ বছর আগে এই পুকুরের ছিল ভরা যৌবন। এখন নানা রোগে জরাজীর্ণ। অনেকটাই শুকিয়ে গিয়েছে। তাই যারা প্রতিমা নিয়ে আসছে তারা বেশির ভাগই জলে না নেমে বাঁধানো ঘাটের নীচের সিঁড়ি থেকেই বিসর্জন দিচ্ছে। খারাপ ভাবে বলতে গেলে, প্রতিমা ছুড়ে দিচ্ছে। প্রতিমা জলে ডুবছে না। কেউ কেউ ধাক্কা মেরে একটু দূরে পাঠানোর চেষ্টা করছে মাত্র। কিন্তু জল কম, তাই প্রতিমা ভাসতে ভাসতে দূরে যেতে পারছে না। নিয়ম মেনে পুজো করার পরে বিসর্জনটা বড়ই নিদারুণ।
পর দিন সকাল হতেই আসে কিছু যুবক, যারা কাঠামো সমেত সব প্রতিমাই পুকুর পাড়ে তুলে রাখে। তার পর লরি এসে সব নিয়ে চলে যায়। অর্থাৎ যাঁরা প্রতিমা বানান তাঁদের কাছে বিক্রি করে দেয়, ‘রি-সাইকল’ করার জন্য।
বিদেশে তো প্রতিমার বিসর্জন হয় না। বাক্সবন্দি হয়ে চলে যায় কারও বাড়িতে, পরের বছর আবার আসবে বলে। আমাদের এখানে যদি প্রতিমা জলে বিসর্জন না দিয়ে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয় তা হলে কেমন হয়? যাঁর কাছ থেকে প্রতিমা আনা হয়েছিল, তাঁকেই ফেরত দেওয়া হল। শুধু প্রতিমা ক’দিন ব্যবহার করার জন্য তাঁকে তাঁর পারিশ্রমিক দেওয়া হল। প্রতিমার জন্য খরচা তা হলে অনেকটাই কমবে, কিন্তু প্রতিমাশিল্পীদের কোনও রকম ক্ষতি হবে না। এই প্রথা চালু হলে, সমাজের কারও তো কোনও ক্ষতি হবেই না, বরং পুকুর, নদীর দূষণ কমবে। পরিবেশের স্বার্থে এই পরিবর্তন মানা কি খুবই অসম্ভব?
সুপ্রিয় রায়
গড়িয়া
বাস্তব জানলে
বেশ কয়েক মাস হল দক্ষিণ দমদম পুরসভা (ভ্যালুয়েশন বোর্ডের পুনর্মূল্যায়নের ভিত্তিতে) সম্পত্তিকর অনেকটাই বৃদ্ধি করেছে। এ কথা ঠিক, দিন দিন সমস্ত পুর পরিষেবা প্রদানের খরচ বেড়েছে। সুতরাং এটুকু বৃদ্ধি মেনে নেওয়া যুক্তিসঙ্গত। এ কথা বিবেচনা করে অনেকেই এই বৃদ্ধির বিরুদ্ধে অ্যাপিল করেননি। আবার অনেকে অ্যাপিল করেছেন এবং কিছুটা ছাড়ও পেয়েছেন।
কিন্তু পুরসভা একটু বাস্তবসম্মত সরজমিন তদন্ত করলে এবং তার ফলাফল ভ্যালুয়েশন বোর্ডের সামনে উপস্থাপন করলে, হয়তো এই কর বৃদ্ধির প্রয়োজন হত না। কারণ এই বর্ধিত করের বাবদ যে পরিমাণ আয় হবে, বাস্তবভিত্তিক অ্যাসেসমেন্ট হলে তার থেকেও অনেক বেশি কর বাবদ রাজস্ব পুরসভার ভাঁড়ারে জমা হবে। যেমন—
১) দক্ষিণ দমদম পুরসভা অঞ্চলে অবস্থিত শতকরা ৭০-৮০ ভাগ বাড়িতেই ভাড়াটিয়া আছে। প্রত্যেক বাড়িতে ভাড়াটিয়া সংখ্যা ১, ২ থেকে ১০ ঘর পর্যন্ত। এবং প্রতিটি ইউনিট বা ফ্যামিলির প্রদেয় ভাড়া মাসিক ৩০০০ টাকা থেকে ২৫০০০ পর্যন্ত (লোকেশন এবং বাড়ির স্ট্যান্ডার্ড অনুসারে প্রতি ইউনিট মাসিক ভাড়ায় এই পার্থক্য হয়ে থাকে)। দুঃখের বিষয়, পুরসভার রেকর্ডে হয় এই ভাড়াটিয়াদের কোনও অস্তিত্ব নেই; অথবা ৮-১০ ঘর ভাড়া থাকলে কোনও কোনও ক্ষেত্রে দু’একটি ভাড়াটিয়া রেকর্ডে এসেছেন। বাকিটা যে বাড়িওয়ালা যে মন্ত্রে ম্যানেজ করতে পারেন। সঠিক ছবিটা যদি রেকর্ডেড হত, তা হলে পুরসভার করবাবদ আয় তো বৃদ্ধি হতই, উপরন্তু ইনকাম ট্যাক্স বাবদ কেন্দ্রীয় সরকারেরও প্রচুর পরিমাণ আয়বৃদ্ধি হত। কারণ তখন ল্যান্ডলর্ড ও ভাড়াবাবদ আয়কে ‘ইনকাম ফর্ম আদার সোর্সেস’ হিসাবে দেখাতে বাধ্য থাকতেন।
২) বহু ফ্ল্যাটবাড়ি আছে, যাদের ১০-১৫ বছর আগে কনস্ট্রাকশন সম্পূর্ণ হয়ে ফ্ল্যাটগুলো বিক্রি হয়েছে এবং মালিকরা সপরিবার বসবাস করছেন। কিন্তু কোনও অজ্ঞাত কারণে সিসি বা কমপ্লিশন সার্টিফিকেট ইসু হয়নি। এবং স্বাভাবিক ভাবেই ফ্ল্যাট মালিকরাও সিসি-র জন্য কোনও তাগিদ অনুভব করছেন না। সিসি না হলে মিউটেশন হবে না। সুতরাং তাঁরা মহা আনন্দে পুরকর প্রদান না করেই সমস্ত পুর পরিষেবা ভোগ করছেন।
৩) এমনও বহু ফ্ল্যাট বাড়ি বা মাল্টি স্টোরিড বিল্ডিং আছে যেগুলির সিসি হয়েছে। তার মধ্যে কিছু ফ্ল্যাট মালিক মিউটেশন করিয়ে নিয়মিত পুরকর দিচ্ছেন। অথচ একই বিল্ডিংয়ের বাকি বেশ কিছু ফ্ল্যাট-ওনার মিউটেশন করাননি এবং পুরকর দেওয়ার দায়ও নেই।
কর্তব্য সচেতন নাগরিকরা কোনও রকম ওজর-আপত্তি ছাড়াই নিয়মিত পুরকর দিয়ে থাকেন এবং অনেকেই আগাম কর জমা করেন। ভ্যালুয়েশনের সময় তাঁরাই কেবল কর বৃদ্ধির আওতায় আসেন। আর আনরেকর্ডেড টেনান্ট বা সিসি না হওয়া আনরেকর্ডেড ফ্ল্যাট ওনার্স করের আওতায় না এসেও সমস্ত পুর পরিষেবা ভোগ করেন।
উপরোক্ত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত স্তরে ফিজ়িক্যাল ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে রি-অ্যাসেসমেন্ট করালে পুরসভার রেভিনিউ বহু গুণ বৃদ্ধি পাবে এবং সৎ ও কর্তব্য সচেতন করদাতাদের করবৃদ্ধির বোঝা অনেকটাই লাঘব করা সম্ভব হবে।
বিজয়া রায় চৌধুরী
কলকাতা-৭৭
বর্ণময় অভিজ্ঞতা
‘‘পান ও গুটখায় প্রথম দিনেই ‘বর্ণময়’ স্কাই ওয়াক’’ (৭-১১) শীর্ষক খবর পড়ে অবাক হইনি। আমরা যাঁরা সাধারণ মানুষ, তাঁদের প্রতি দিন, প্রতি মুহূর্তে এই ধরনের ‘বর্ণময়’ অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হয়। দু’একটি ঘটনা না বললেই নয়। এই তো কয়েক দিন আগে অশোকনগর থেকে হাবরা যাওয়ার জন্য অটোতে উঠেছি। অটোচালক গুটখা চিবোতে চিবোতে সারা রাস্তা ডান দিক থেকে পিক ফেলতে ফেলতে গেলেন। পাঁচ কিলোমিটার রাস্তায় কম করে বার দশেক পিক ফেললেন। আমি বসেছিলাম পিছনের সিটের ডান দিকে। নেমে মৃদু ভর্ৎসনার সুরে বললাম, এ ভাবে কেউ ডান দিকে পিক ফেলে? চালক প্রথমে অবাক হয়ে আমার দিকে তাকালেন। তার পর বললেন, ‘‘আপনার গায়ে লেগেছে?’’ চোখগুলো ঠিকরে বেরিয়ে আসছে তাঁর। এ বার আমি কড়া ভাষায় ভর্ৎসনা করে আমার ডান হাতে পিকের ফোঁটা দেখাতেই অটো স্টার্ট দিয়ে বেরিয়ে গেল।
২০১২ সালে মুম্বইতে গিয়েছিলাম। আমার ভাইয়ের এক বন্ধু ফুট ওভারব্রিজে উঠে পিক ফেলার সঙ্গে সঙ্গে, একটি ছেলে তার হাত ধরে ফেলল খপ করে। ব্রিজের এক প্রান্তে নিয়ে গিয়ে তাকে ২০০ টাকা জরিমানা করল। টাকার পরিমাণ এখন বেড়ে সম্ভবত ৫০০ হয়েছে। ফুটপাতে হাঁটতে হাঁটতে আরও এক দিন এই ঘটনার মুখোমুখি হয়েছিলাম। সে দিনও জরিমানা হয়েছিল পানের পিক ফেলা লোকটির।
লোকে লোকারণ্য বাণিজ্যনগর মুম্বই কিন্তু পিক-এ রঞ্জিত হয়নি। ছোটখাটো বিচ্ছিন্ন ঘটনার ছবি এখানে-সেখানে রয়েছে ঠিকই কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের রেলস্টেশনের সিঁড়ির মতো ডাস্টবিনে পরিণত হয়নি কোনও স্থান।
সোফিয়ার রহমান
অশোকনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ইমেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy