Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: এটা কী হচ্ছে?

এত মানুষ লকডাউনের কোনও রকম তোয়াক্কা না করে হাটে উপস্থিত ছিলেন। কেনাকাটা করেছেন।

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০০:২৩

এই ছবিগুলি ২৯ মার্চ, রবিবার, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গার হাটের। এত মানুষ লকডাউনের কোনও রকম তোয়াক্কা না করে হাটে উপস্থিত ছিলেন। কেনাকাটা করেছেন। গোষ্ঠী সংক্রমণ রুখতে যখন সরকার সব রকম চেষ্টায় ব্রতী, প্রাণপণ প্রচার চলছে, তখন এ রকম দৃশ্য খুবই চিন্তার বিষয়। এখনই মানুষের উপলব্ধি জাগ্রত না হলে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বিপদ রোখা একেবারে অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে।

মানস ঘোষ

কোন্নগর, হুগলি

উৎসবে রাশ

বাংলায় বারো মাসে তেরো পার্বণ। ৬ এপ্রিল জৈনদের ‘মহাবীর জয়ন্তী’, ৮ এপ্রিল ‘হনুমান জয়ন্তী ও পতাকা পূজা’, ৯ এপ্রিল মুসলিমদের ‘শবেবরাত’, ১০ এপ্রিল খ্রিস্টানদের ‘গুড ফ্রাইডে’। প্রতিটি উৎসবই সেই ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এগুলিকে কেন্দ্র করে জনসমাগম ঘটেই থাকে। এ ছাড়াও বাঙালির অন্যতম সেরা উৎসব ১৩ এপ্রিল চৈত্র সংক্রান্তি, গাজন এবং ১৪ এপ্রিল নববর্ষ উপলক্ষে প্রতি বছর বিভিন্ন জায়গায় মেলা, উৎসব অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। তাই সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে জরুরি বিজ্ঞপ্তি জারি করে সমস্ত রকম ধর্মীয় অনুষ্ঠান, মেলা অত্যন্ত কঠিন হাতে নিয়ন্ত্রণ করা উচিত। সবার স্বার্থে কোথাও যেন এ সব উপলক্ষে জনসমাবেশ না হয়, সে দিকে প্রশাসনের সঙ্গে সঙ্গে জনগণকেও লক্ষ রাখতে হবে। সবচেয়ে ভাল হয় যদি এ বছর এ সব বন্ধ থাকে, অথবা নিদেন পক্ষে পরিবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে। একযোগে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়তে হলে এটুকু আমাদের করতেই হবে।

গৌতম পতি

সালগেছিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর

ওযুধ ও নগদ

আমি দীর্ঘ দিন বার্ধক্যজনিত রোগে ও অন্যান্য রোগে ভুগছি।

প্রতি মাসে আমাকে ওষুধ কিনতে হয়, আমি বরাবরই অনলাইন, ক্যাশ অন ডেলিভারি সিস্টেমে ওষুধ কিনি। গত ২৪-৩ তারিখে ৯০০ টাকা মূল্যের ওষুধের অর্ডার দিই । কিন্তু ২৭-৩ তারিখে, ওষুধ ডেলিভারির মুহূর্তে সন্ধ্যাবেলায় আমাকে ফোন করে জানানো হয়, ক্যাশে নয়, অনলাইন পেমেন্ট করতে হবে। আমার সেই মুহূর্তে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ব্যালান্স যথেষ্ট ছিল না আর লকডাউনের মধ্যে ব্যাঙ্কে গিয়ে টাকা জমা দেওয়া সম্ভব ছিল না। সুতরাং ওরা আমার ওষুধ ডেলিভারি বন্ধ করে দিল! শেষ পর্যন্ত লকডাউনের মধ্যে পাড়ার দু’তিন দোকান ঘুরে ওষুধগুলো সংগ্রহ করি।

এখন আমার প্রশ্ন হল, টাকার মধ্যে দিয়ে ভাইরাস সংক্রমণ হবে— সেই ভয়ে কি ক্যাশ অন ডেলিভারি বন্ধ করে দিল? তাই যদি হয়, তা হলে তারা যে ওষুধের প্যাকেটগুলো আমাকে দিচ্ছে, সেগুলোতে তো তাদের হাতের ছোঁয়া লাগছে। তাতে সংক্রমণ ছড়াবে না ?

জীবেন্দ্রনাথ দত্ত

কলকাতা-৭৮

আমাদের সমস্যা

আমি মুর্শিদাবাদ জেলার কান্দি ব্লকের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের বাসিন্দা। আমাদের এলাকার মানুষেরা মূলত তিন ধরনের জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। কৃষিকাজ, দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদন আর ভিন্ রাজ্য তথা ভিন্ দেশে কাজ করে উপার্জন। আমাদের সমস্যাগুলো এখন এই রকম:

এক) জমায়েত থেকে বিরত থাকার জন্য মিল, ধান ক্রয়ের জন্য গঠিত কৃষাণমন্ডিগুলি ঝাঁপ বন্ধ করে দিয়েছে।

দুই) দুগ্ধজাত পণ্য উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত যাঁরা, তাঁদের অবস্থা আরও খারাপ। কারণ কুইন্টাল কুইন্টাল চাঁচি (খোয়াক্ষীর), ছানা বহরমপুর, কলকাতা, শিলিগুড়ি, দেওঘরে পৌঁছে দেবার জন্য যে পরিবহণ ব্যবস্থার দরকার পড়ে, তা এখন বন্ধ।

তিন) আমাদের অঞ্চল তথা ব্লকে রুজির সন্ধানে অন্য রাজ্য বা বিদেশে যাননি এমন সদস্যভুক্ত পরিবার খুব কমই আছে। এই দেশান্তরি হওয়ার পিছনে যথেষ্ট কারণও আছে। তার জন্য দু’দশক পিছিয়ে যেতে হবে।

২০০০ সালের বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এতটাই ছিল, রুজি-রোজগারের জন্য বিকল্প রাস্তার খোঁজে মানুষ হন্যে হয়ে ওঠে। তখন গ্রামপিছু পাকা বাড়ির সংখ্যাটা মেরেকেটে পাঁচ থেকে আট। বন্যার সময় এগুলিই ছিল মূলত আশ্রয়স্থল। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য রুটি, কাপড় আর পাকা বাড়ির প্রথমিক চাহিদাটা মেটানোর জন্য অনেকেই বাইরে পাড়ি দেন। সত্যি বলতে এই চাহিদাটা অনেকাংশে পূরণও হয়েছে।

এ বার আসি বর্তমান পরিস্থিতির কথায়। আমাদের এলাকার যাঁরা কর্মঠ শ্রমিক তাঁরাই দেশান্তরি হয়েছিলেন। মূলত পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে (সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার) তাঁরা কাজের সন্ধানে পাড়ি জমাতেন। শুধুমাত্র কান্দি ব্লকেই গত ৫ মার্চ থেকে ২২ মার্চ অবধি বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছেন অনেকে। এয়ারপোর্টে থার্মাল স্ক্রিনিং পেরিয়ে ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনের ফরমান নিয়ে তাঁরা গ্রামে প্রবেশ করেছেন।

কিন্তু নিয়মের তোয়াক্কা না করে তাঁদের মধ্যে বেশ কিছু লোক যথারীতি সবার সাথে মেলামেশা করা থেকে শুরু করে আত্মীয়দের বাড়ি যাওয়া, সবই করেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণ ও মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর স্থানীয় পঞ্চায়েত তথা ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রামে গ্রামে প্রচারের পর কিছুটা হলেও সচেতনতা দেখা যাচ্ছে। গ্রামে গ্রামে পুলিশের টহলদার গাড়ি ঘুরছে, কোথাও জটলা দেখলে তা ফাঁকাও করে দিচ্ছে। তবু অনেকে সে সব বারণ শুনছেন না। শুনলে, সবারই মঙ্গল।

অঙ্কুর পাণ্ডে

মাহাদিয়া, মুর্শিদাবাদ

কল্যাণী অবধি

শিয়ালদহ মেন শাখায় নৈহাটি পর্যন্ত বিশেষ লোকাল ট্রেন ‘অর্জুন’ চালু করার জন্য রেল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। সবিশেষ অনুরোধ, ট্রেনটি কল্যাণী পর্যন্ত চালু করুন। কারণ কল্যাণীতে তিনটি হাসপাতাল আছে। এই হাসপাতালগুলির সমস্ত কর্মচারীর উপকার হবে ।

সিদ্ধার্থ ভৌমিক

ইছাপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

ক্যানসার রোগী

‘করোনা-শঙ্কায় অবহেলা করা যাবে না ক্যানসারকে’ (২৯-৩) শীর্ষক প্রতিবেদনটি রাজ্যের ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের (বিশেষত প্রবীণদের) অসহায় অবস্থার দিকটি অত্যন্ত সঠিক ভাবে তুলে ধরেছে। আজকের ভয়াবহ করোনা সংক্রমণের আবহে ক্যানসার রোগীরা প্রচণ্ড আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়ার কারণে, তাঁদেরই সংক্রমিত হবার সম্ভাবনা প্রবল।

সবচেয়ে বিপদে পড়েছেন সেই রোগীরা, যাঁদের সদ্য ক্যানসারের চিকিৎসা শুরু হয়েছে। কেমোথেরাপির নির্দিষ্ট দিনগুলোতে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল গাড়ি বা অ্যাম্বুলেন্স জোগাড় করা। বহু কষ্টে যদি বা কাউকে যেতে রাজি করানো হল, তিনি ভাড়া হাঁকতে থাকেন অস্বাভাবিক।

এর পরের সমস্যা হাসপাতাল। সেখানে একই ঘরে, একই বিছানায় এবং বালিশে একাধিক রোগীর পর পর কেমো চলতে থাকে। এক জনের কেমোথেরাপি হয়ে যাওয়ার পর, সেই বিছানার চাদর, বালিশ পাল্টানো হয় না।

আবার, এক জন রোগীর কেমোথেরাপি হয়ে যাওয়ার পর তিনি যখন বিশ্রাম নিচ্ছেন, ঠিক তখনই হয়তো পাশের বেডটির চাদর বালিশ ঝেড়ে ঠিকঠাক করা হচ্ছে পরের রোগীর জন্য। তাঁর গায়ে ধুলো লাগছে কি না, তা কতটা বিপজ্জনক, তা বিচার না করেই।

আমারও আর্জি, অবিলম্বে কলকাতার কয়েকটি হাসপাতালকে শুধুমাত্র ক্যানসার চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হোক, অবশ্যই পরিচ্ছন্নতা এবং রোগীদের যথাযথ সহমর্মিতা দিয়ে চিকিৎসা করার দিকটি সুনিশ্চিত করে।

বিদ্যুৎ কুমার ঘোষ

কলকাতা-১১২

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ইমেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ইমেল-এ পাঠানো হলেও।

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy