Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: এত দিন হয়নি কেন

বাড়ির বাকি সদস্যদের জন্য কী ধরনের সাবধানতা দরকার, সেটাই বা কে বলবেন?

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২০ ০০:০০
Share: Save:

‘বাড়ির রোগীর চিকিৎসায় নয়া বিধি, প্রশিক্ষণ’ (২৮-১০) শীর্ষক খবরটি পড়ে কিছু জানাতে চাই। গত ২৩ অক্টোবর আমার ছেলের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। স্বাস্থ্যবিভাগের তরফে আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি। পরিচিত কোনও ডাক্তারবাবুর সঙ্গেই যোগাযোগ করা যায়নি। হয় তাঁরা ‘পরিষেবা সীমার বাইরে’ নয়তো মোবাইল সুইচড অফ। ছেলে ছাড়া বাড়িতে আমরা দু’জনই সিনিয়র সিটিজ়েন। এই অবস্থায় ছুটলাম প্রাইভেট হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে। ছেলে হোম আইসোলেশনে রয়েছে ওঁদের পরামর্শ অনুযায়ী। দীর্ঘ আট মাস কেটে যাওয়ার পর আইএমএ-র রাজ্য শাখার সম্পাদক শান্তনু সেন বলছেন, ‘‘হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের চিকিৎসায় পারিবারিক ও পাড়ার ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’ এত দিন তবে তাঁরা কী করছিলেন? যাঁরা আক্রান্ত হয়ে বাড়িতে রয়েছেন, তাঁদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণ কে করবেন? বাড়ির বাকি সদস্যদের জন্য কী ধরনের সাবধানতা দরকার, সেটাই বা কে বলবেন?

সোমা দাস

কলকাতা-৫৫

ছেলেখেলা?

গত ২৪ অক্টোবর পাশের বাড়ির কুকুরটি হঠাৎ আমার পায়ে আঁচড় দেয়। এ জন্য ২৭ অক্টোবর আমি পাস্তুর ইনস্টিটিউট-এ যাই অ্যান্টি র্যাবিস ইঞ্জেকশন নিতে। ডাক্তারবাবু প্রেসক্রিপশন লিখে নার্সের ঘরে গিয়ে ইঞ্জেকশন নিতে পরামর্শ দিলেন। গিয়ে দেখি, নার্স মোবাইলে কথা বলছেন। আমাকে ইঙ্গিতে বললেন, বাইরে অপেক্ষা করতে। ১০-১২ মিনিট অপেক্ষা করার পর আমার পিছনে থাকা রোগীরা অধৈর্য হয়ে পড়ায় নার্স আমাকে ইশারায় ডেকে তাঁর সামনে থাকা একটি টুলে বসালেন।

এর পর যা হল, তা জীবনে এই প্রথম দেখলাম। আগে থেকে ওষুধ ভরে রাখা বেশ কিছু সিরিঞ্জের মধ্যে একটি নিয়ে, এক হাতে মোবাইলে কথা বলা অবস্থায় শুধু ডান হাত দিয়ে কোনও রকমে নিডলটা আমার বাঁ হাতের পেশিতে ঢুকিয়ে টেনে নিলেন। দেখলাম, কিছুটা ওষুধ ইঞ্জেকশন দেওয়ার জায়গা থেকে গড়িয়ে পড়ছে। নার্সের দৃষ্টি আকর্ষণ করায় বললেন ‘‘ও কিছু হবে না। বাড়ি চলে যান।’’ জানি না, এই জীবন-মৃত্যু নিয়ে ছেলেখেলা করার সংবাদ স্বাস্থ্য দফতরের কাছে পৌঁছবে কি না!

সংগ্ৰাম অগস্তি

কলকাতা-৬০

তথ্য স্পষ্ট হোক

‘পরিষ্কার ভাবে তথ্য জানান গ্রাহক...’ (২৩-১০) শীর্ষক খবরে জানা গেল, এক ব্যক্তি কোনও এক জীবন বিমা সংস্থায় পলিসি করার কয়েক দিন পরই মারা যান। এই অবস্থায় বিমা সংস্থাটি প্রয়াত ব্যক্তির ‘নমিনি’ তাঁর মা-কে ন্যায্য পাওনা অর্থ দিতে অস্বীকার করে। যুক্তি হিসেবে সংস্থাটি জানায়, গ্রাহক তাঁর পুরনো কোনও অসুখ গোপন করেছিলেন। যদিও সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপে পরে বিমা সংস্থাটি নমিনিকে টাকা দিতে বাধ্য হয়। কিন্তু এই ঘটনায় একটা শিক্ষা সব বিমা সংস্থার হওয়ার কথা। নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনও বিমা সংস্থায় কোনও পলিসি করার সময় গ্রাহকের কাছ থেকে যে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নেওয়া হয়, সেটা এক জন ডাক্তারের সাধারণ অভিজ্ঞতা ও অনুমানের ভিত্তিতে দেওয়া। ফলে কোনও বিপজ্জনক রোগ আগে থেকেই গ্রাহকের শরীরে বাসা বেঁধে আছে কি না, তার কোনও অনুসন্ধান করা হয় না। এর সমাধানসূত্র একটাই। এ বার থেকে বিমা সংস্থাগুলোর ডাক্তারেরা নতুন গ্রাহকের ফিটনেস সার্টিফিকেট উপযুক্ত পরীক্ষানিরীক্ষার ভিত্তিতে দেওয়া শুরু করুন, সাময়িক অনুমানের ভিত্তিতে নয়। তা হলে গ্রাহক ও বিমা সংস্থার চুক্তি ও চাওয়াপাওয়া পরবর্তী কালে অনেক বিশ্বাসযোগ্য হতে পারবে।

প্রবীর চক্রবর্তী

জয়নগর, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

পিভিসি কার্ড

ইউআইডিএআই, অর্থাৎ, আধার অথরিটি সম্প্রতি নতুন ভাবে চালু করেছে ‘অর্ডার আধার পিভিসি কার্ড’ পরিষেবা। ইউআইডিএআই-এর অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে চাইলে যত বার ইচ্ছে আধার পিভিসি কার্ড অর্ডার করা যাবে। আবেদনকারীকে ৫০ টাকা অনলাইনে জমা করতে হবে। যে কেউ এই আবেদন করতে পারবেন। পাঁচ দিনের মধ্যে ভারতীয় ডাকের স্পিড পোস্টে পৌঁছে যাবে আধারে থাকা ঠিকানায়। ফলে আধার কার্ড নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে কিংবা একাধিক রাখার ইচ্ছে হলে সহজেই পেতে পারেন এই নতুন পিভিসি কার্ড।

কিন্তু, এপিক বা ভোটার কার্ডের ক্ষেত্রে তা হয় না। এপিক কার্ড হারিয়ে গেলে থানায় জেনারেল ডায়েরি করে সেই তথ্য দিয়ে আবেদন করতে হয় অফলাইনে। এ ছাড়া সংশোধনের ক্ষেত্রে নতুন কার্ড পেলে পুরনোটি ফেরত দিতে হয়।

বর্তমানে এপিক কার্ডও পিভিসি হচ্ছে। এর পর যে সব এপিক কার্ড দেওয়া হবে, সবই পিভিসি হবে। তাই এপিক কার্ডের ক্ষেত্রেও ‘অর্ডার আধার পিভিসি কার্ড’-এর মতোই ‘অর্ডার এপিক পিভিসি কার্ড’ পরিষেবা চালু করা প্রয়োজন।

হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল)

নওদা, মুর্শিদাবাদ

নির্বাচন

অতিমারির মধ্যে বিহার নির্বাচন এখন আলোচনার শিরোনামে। কারণ, নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত নিউ নর্মাল-এর প্রয়োগ এই নির্বাচনেই চাক্ষুষ করা যাচ্ছে। কয়েক মাস পরেই আমাদের রাজ্যেও নির্বাচন। এই বিপুল জনসংখ্যার দেশে ও উচ্চ জনঘনত্বের বিহার, পশ্চিমবঙ্গ প্রভৃতি রাজ্যে নিউ নর্মাল ব্যবস্থাতে নির্বাচন করা আদৌ সম্ভব কি না, সেই প্রশ্ন আগে থেকেই উঠছিল। কাগজে-কলমে নিয়ম তৈরি হওয়া আর তার বাস্তব প্রয়োগের মধ্যে বিস্তর ফারাক। এই ফারাক সাধারণ সময়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও প্রকট হয়। তাই আমরা এই অতিমারির সময়েও কেন এসএমএস বা অনলাইন নির্বাচন নিয়ে একটা পরীক্ষা করব না?

যেখানে সংক্রমণের ভয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা অনলাইনে করতে বলা হচ্ছে, সেখানে মানুষকে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেওয়ার কথা বলা খুব ঝুঁকিপূর্ণ। বলা হয়েছে, পোলিং বুথ হিসেবে বড় ঘর নির্বাচন করার কথা। কিন্তু সাধারণ সময়ে যেখানে প্রাথমিক স্কুল বা অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের ছোট্ট ঘরে পাঁচ-ছ’জন পোলিং এজেন্ট, পাঁচ জন ভোটকর্মী মিলে গাদাগাদি করে ভোট করতে হয়, সেখানে ৫০ শতাংশ বুথ বাড়ানো এবং সেগুলো বড় ঘরে কী ভাবে করা সম্ভব, সে প্রশ্ন ওঠা প্রাসঙ্গিক। এমনিতেই আমাদের রাজ্যে প্রচুর বুথ, তার উপর ৫০ শতাংশ বুথ বাড়লে ভোটকর্মীর সংখ্যায় যে বিরাট টান পড়বে, তা বলা বাহুল্য।

বুথের বাইরে লম্বা লাইনে দূরত্ব বজায় রাখাও সমান কঠিন। সীমিত পরিকাঠামোর মধ্যে নির্বাচনের আগের দিন মালপত্র সংগ্রহ করার লাইন, পোলিং অফিসারের অনুপস্থিতিতে রিজ়ার্ভ পোলিং যুক্ত করার লাইন, বাস খোঁজার জন্য মাইলখানেক হাঁটা, নির্বাচনের পরে আবার মালপত্র জমা করার লাইন— এই সমস্ত ক্ষেত্রে কী ভাবে সংক্রমণমুক্ত উপায়ে কার্যোদ্ধার হবে? নির্বাচনের অতি উত্তাপে ঝামেলা-ঝঞ্ঝাটের মধ্যে পড়ে ভুলবশত মাস্কবিহীন ভাবে কোনও ভোটকর্মী, ভোটার বা রাজনৈতিক দলের কর্মী ছড়াবেন না তো সংক্রমণ? তাই ভাবা হোক বহুমুখী ব্যবস্থার কথা, যেখানে এসএমএস, অনলাইন ব্যবস্থা ও পোস্টাল ব্যালটের পাশাপাশি প্রতিটি পঞ্চায়েত বা পুরসভায় প্রয়োজনে এক মাস ধরে রাখা থাকবে ছোট কিয়স্ক বা বুথ। মানুষ নিজের সুবিধামতো যে কোনও একটি ব্যবস্থায় উপযুক্ত পরিচয়পত্র দাখিল করে ভোট দান করবেন। সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রিত হোক একটি কেন্দ্রীয় সার্ভার দ্বারা। এই ব্যবস্থায় লোকবল ও খরচ অনেক কম লাগবে বলেই মনে হয়। সংক্রমণের ভয়ও থাকবে না।

সৌরভ চট্টোপাধ্যায়

জগৎবল্লভপুর, হাওড়া

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus COVID-19 West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE