আগামী ১৪ জুন আফগানিস্তান তাদের প্রথম টেস্ট খেলতে চলেছে ভারতের সঙ্গে, বেঙ্গালুরুতে। এই ঐতিহাসিক টেস্টের জন্য ঘোষিত ভারতীয় দলে বিরাট কোহালির নাম নেই। তিনি জুলাই মাসের ইংল্যান্ড সফরের প্রস্তুতি হিসাবে কাউন্টি খেলবেন, আফগানিস্তান টেস্টের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে অস্বীকার করে। যে কোনও দেশের উদ্বোধনী টেস্টের গুরুত্ব যেমন সংশ্লিষ্ট দেশের কাছে অপরিসীম, তেমনই বিপক্ষ দেশের কাছেও সম্মান তাদের প্রাপ্য। ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের উদ্বোধনী টেস্টে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পূর্ণশক্তির ভারতীয় দলই খেলেছে। এর আগে শ্রীলঙ্কার প্রথম টেস্টেও ১৯৮২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি কিথ ফ্লেচারের নেতৃত্বে ইংল্যান্ড দল নেমেছিল কলম্বোতে। কোহালিকে বিসিসিআই-এর এই ছাড় দেওয়ার ঘটনা মনে এ প্রশ্নও জাগায়, অধিনায়ক ছাড়া আর কারও কি ইংল্যান্ড সফরের প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই?
সৌম্য বটব্যাল দক্ষিণ বারাসত, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
ঐক্যের আদর্শ
জয়ন্ত ঘোষালের ‘একক ক্ষমতার বিপদ’ (৪-৪) লেখাটির শেষ অংশটি পড়ে চমকে গেলাম। শুরুতে তিনি একদলীয় নায়কতন্ত্রের বিপদের কথা বলেন। এ দেশের বহুত্ববাদের বৈচিত্রের কথা তুললেন। এ সবই মনেপ্রাণে মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু হঠাৎই আবেগতাড়িত হয়ে এক বিপজ্জনক প্রবণতাকে সমর্থন করলেন কেন? ‘‘ইসলাম ধর্ম হতে পারে তোমার, কিন্তু তুমি ভারতীয়’’— এই ভাবনাকে আক্রমণ করলেন কেন? তিন তালাক রায়ের প্রেক্ষিতে একটি রাজনৈতিক দলের নেতা প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘আমরা প্রথমে মুসলিম, তার পর ভারতীয়। যদি কোনও সিদ্ধান্ত ইসলামের বিরোধী মনে হয়, আমরা সংবিধানকেও মানব না।’’ জয়ন্তবাবু তাঁর লেখায় এই মনোভাবকেই উৎসাহ দিলেন!
ভারতবর্ষ অবশ্যই কোনও এক বিশেষ জনগোষ্ঠী, ধর্মসম্প্রদায় বা সামাজিক শ্রেণির একক প্রচেষ্টায় গড়ে ওঠেনি। নানা ভাষা, নানা মত, নানা ধর্ম, নানা সংস্কৃতি-ঐতিহ্যের আদানপ্রদানেই এ দেশ বেড়ে উঠেছে। কিন্তু এর অর্থ তো এই নয় যে, ভারতবর্ষে আঞ্চলিক পরিচয় (তামিল, বাঙালি, মরাঠি, পঞ্জাবি, গুজরাতি ইত্যাদি) বা ধর্মীয় পরিচয় (হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, শিখ ইত্যাদি) সর্বাধিক প্রাধান্য পাক। তা হলে অদূর ভবিষ্যতে ভারতের অঙ্গচ্ছেদ অনিবার্য হবে। এ দেশে বৈচিত্র অনস্বীকার্য, কিন্তু ঐক্যের আদর্শ তো অপরিহার্য। তা না হলে কেবল রাষ্ট্র নয়, সমাজও বিপন্ন হবে। প্রতি ভগ্নাংশ আরও ভেঙে ভাগের হিসেব চলতেই থাকবে।
জয়ন্তবাবু ‘‘স্টিমরোলার চালিয়ে একমাত্রিক বানানোর ছেলেমানুষি চেষ্টা’’র কথা তুলেছেন। সোভিয়েত ইউনিয়নের উদাহরণ দিয়েছেন। মনে রাখা দরকার, সোভিয়েত ইউনিয়নে যা হয়েছে বা বর্তমান চিনে যা হচ্ছে, তা ভারতবর্ষের কল্পনাতেও আসে না। চিনের সিন জিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলমানদের উপর প্রশাসনিক বুলডোজ়ার চালিয়ে, আজান দেওয়া, লম্বা দাড়ি রাখা, টুপি পরা, পবিত্র রমজানে উপবাস রাখার উপর কঠোর, ঘৃণ্য নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মাত্র এক কোটি ইসলাম ধর্মাবলম্বীকেও সে দেশের সরকার সহ্য করতে পারছে না। তিব্বতিদের বৈচিত্রের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। অন্য দিকে, ভারতবর্ষ পৃথিবীর সর্বাধিক হিন্দুর মাতৃভূমি, প্রায় দ্বিতীয় সর্বাধিক মুসলমানের জন্মভূমি, তিন কোটিরও বেশি খ্রিস্টানের বাসভূমি। এই বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ ১২২টি ভাষা ও ১৬০০ উপভাষায় কথা বলেন। ভারতবর্ষে বারোশোরও বেশি রাজনৈতিক দল ও তার চেয়ে বেশি ছোট-বড় ধর্মীয় সম্প্রদায় আছে এবং পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি মন্দির ও মসজিদ সহাবস্থান করছে। পৃথিবীতে এই নজিরবিহীন ঘটনার কারণ কী? সংবাদমাধ্যম আমাদের গৌরবের দিক কি তুলে ধরবে না?
ওমশক্তি মিশ্র কলকাতা-৫৩
বাংলাদেশ
মহাকাশে প্রবেশ করল বাঙালি জাতির স্বাধীন দেশ বাংলাদেশ। দেশটি স্যাটেলাইট জগতে এলিট ক্লাবে সদস্য হওয়ায় বাঙালি হিসাবে শ্লাঘা অনুভব করছি। কয়েক দশক ধরে দেশটি বিশ্বের চোখ কপালে তুলে দিয়ে যে অকল্পনীয় উন্নতি করেছে, তারই ধারাবাহিকতায় নবতম সংযোজন এই বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের সময়, মার্কিন সেক্রেটারি অব স্টেট হেনরি কিসিঞ্জার বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে উপহাস করেছিলেন। সেই দেশ উৎক্ষেপণ করল কৃত্রিম উপগ্রহ। ১৯৭৩ সালে এই দেশের প্রথম বাজেটের অঙ্ক ছিল মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকা। আর এ বছর তার পরিমাণ ৪ লক্ষ ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। আদ্যোপান্ত বাঙালি ক্ষুদ্র দেশটা পোশাক রফতানিতে বিশ্বে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে বিরাজ করছে। টানা কয়েক বছর ধরে প্রবৃদ্ধির হার ৬.৫% ধরে রেখেছে। নিজস্ব অর্থায়নে চোখ ধাঁধানো দ্বিতল পদ্মা সেতু, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প ও মেট্রো রেল চালু হওয়া শুধু সময়ের অপেক্ষা। সামাজিক উন্নয়নের নানা ক্ষেত্রে ভারত-সহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে টেক্কা দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত করার যে পরিকল্পনা করেছেন, তাতে গতি দিল প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত স্যাটেলাইট।
সৈয়দ মহম্মদ মুসা শাহবাজার, হুগলি
ধর্ষণে মৃত্যুদণ্ড
মেনকা গাঁধী বলেছেন, শিশু-ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার কথা চিন্তা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ‘শেষ নাহি যে’ (১৮-৪) শীর্ষক সম্পাদকীয়তে প্রশ্ন করা হয়েছে, ‘নির্ভয়া মামলায় চার অভিযুক্তের প্রাণদণ্ডেরই আদেশ হইয়াছে। কিন্তু, তাহাতে কি ধর্ষণের সংখ্যা কমিয়াছে?’ নির্ভয়ার হত্যাকারীদের প্রাণদণ্ড নিছক ধর্ষণের জন্য হয়নি, নৃশংস অত্যাচার করে হত্যা করার জন্য হয়েছে। এ কথা ঠিক, এখন এই ভাবে অত্যাচার করে হত্যা করার সংখ্যা খুবই বেড়েছে। কিন্তু তার কারণ কি এই নয় যে, নির্ভয়ার হত্যাকারীদের প্রাণদণ্ড এখনও কার্যকর করা হয়নি? নির্ভয়ার মা কিন্তু প্রায় প্রতি দিনই সংবাদমাধ্যমের কাছে আক্ষেপ করে বলছেন, আমার মেয়ের নৃশংস হত্যাকারীদের প্রাণদণ্ড যদি কার্যকর করা হত, তা হলে হয়তো নির্দোষ মেয়েদের এত ভয়ঙ্কর অত্যাচারের শিকার হতে হত না। তা ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের একমাত্র উদ্দেশ্য ভবিষ্যৎ অপরাধ নিবারণ নয়। এখানে ন্যায়বিচারের ব্যাপারটাও আছে। শিশু-ধর্ষণ অত্যন্ত নৃশংস কাজ, এবং এর ফলে সাধারণত মেয়েটির চিরস্থায়ী শারীরিক ও মানসিক ক্ষতি হয়। কাজেই এর জন্য প্রাণদণ্ডের কথা ভাবাই যায়।
সুস্মিতা ভট্টাচার্য কলকাতা-২৬
স্পেশাল কী
অমিতাভ গুপ্তর ‘মোদীর কেন যোগী চাই’ (৮-৪) প্রসঙ্গে এই চিঠি। অধ্যাপক কানেম্যান বলেছিলেন মানুষ আসলে দাম-কানা, দাম কত হওয়া উচিত জানেন না। মনে পড়ল, বহু বছর আগে গড়িয়াহাট এলাকায় একটি ছোট রেস্তরাঁয় বন্ধুবান্ধবেরা মাঝেমধ্যে মোগলাই পরোটা খেতাম। মেনুতে লেখা ছিল, মোগলাই পরোটা আড়াই টাকা, স্পেশাল মোগলাই তিন টাকা। স্পেশাল মোগলাইটা কী বস্তু, আমাদের মাথায় আসত না। দোকানেরই এক কর্মচারী, যাঁর সঙ্গে একটু আলাপ হয়েছিল, চুপিচুপি বলেছিলেন: মোগলাই আর স্পেশাল মোগলাই একই জিনিস, স্পেশাল মোগলাইটা একটু দেরিতে পরিবেশন করা হয়।
শান্তভানু সেন শ্রীপল্লি, শান্তিনিকেতন
ভ্রম সংশোধন
• ‘চেহারাটা যেমন বিরাট ছিল...’ (পত্রিকা, ১৯-৫) প্রতিবেদনে ‘থানা থেকে আসছি’ নাটকের ছবির ক্যাপশনে অভিনেত্রী তৃপ্তি মিত্রের পরিচয় ভুলবশত লেখা হয়েছে কল্যাণী মণ্ডল। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy