Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
coronavirus

সম্পাদক সমীপেষু: অল্প হলেও চলুক

প্রয়োজনে শুধুমাত্র মাসিক টিকিট যাঁদের আছে, তাঁদের ট্রেনে চড়ার অনুমতি দিন।

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০২১ ০৪:২৯
Share: Save:

আবারও বন্ধ হয়ে গেল লোকাল ট্রেন! ৫০ শতাংশ হাজিরা-সহ খোলা সব সরকারি, বেসরকারি অফিস। সঙ্গে ১০টা থেকে ২টো অবধি খোলা ব্যাঙ্ক। কিন্তু মানুষ তাঁর কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করবেন কী ভাবে? সরকারি বাসও অর্ধেক চলবে। বেসরকারি বাস বা অন্য সব গণপরিবহণ মিলেও লোকাল ট্রেনের বিকল্প কখনও হতে পারে না। মানছি অতিমারি রাজ্যে এই সময়ে ভয়াল চেহারা ধারণ করেছে। কিন্তু লোকাল ট্রেন বন্ধ রাখলে বাকি গণপরিবহণগুলোয় আরও বেশি গাদাগাদি ভিড় হবে, এবং সংক্রমণের আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পাবে আগামী দিনে। রেলকর্মীদের জন্য স্টাফ স্পেশাল ট্রেনে ওঠার হুড়োহুড়ি আবারও যে শুরু হবে, সেটা গত বারের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি।

দূর থেকে আসা মানুষগুলোকে দোষ দেওয়া যাবে না। কৃষ্ণনগর বা কাটোয়া থেকে ডেলি প্যাসেঞ্জারি করা লোক কী করে আসা-যাওয়া করবেন অফিসে লোকাল ট্রেন ছাড়া? গত বার লোকাল ট্রেন বন্ধের জন্য বহু মানুষ কর্মহীন হয়েছেন। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, সংখ্যায় কম হলেও পুরোপুরি বন্ধ করে দেবেন না যাতায়াতের এই প্রধান মাধ্যমকে। প্রয়োজনে শুধুমাত্র মাসিক টিকিট যাঁদের আছে, তাঁদের ট্রেনে চড়ার অনুমতি দিন। এ ছাড়াও যে সব মানুষ হকারি করেন, বা স্টেশনে দোকান খুলে জীবিকা নির্বাহ করেন, এই সিদ্ধান্তে তাঁরাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

অভিজিৎ ঘোষ

হলদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর

ভুলের মাসুল

লোকাল ট্রেন শহর ও শহরতলির লাইফলাইন, বহু মানুষের রুজি-রুটির একমাত্র অবলম্বন, যা আজ বন্ধ। সংবাদপত্রে দেখলাম লোকাল ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্তে এক লহমায় কাজ হারিয়েছেন অজস্র হকার, প্ল্যাটফর্মের দোকানদার থেকে শুরু করে বিভিন্ন বাড়িতে যাঁরা পরিচারিকার কাজ করেন, তাঁরাও। যাঁরা বহু দূর থেকে শহরে আসেন কোনও বেসরকারি কাজে, তাঁদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত। এক-দেড় ঘণ্টার ট্রেনযাত্রার পথ বাসে বা অন্য যানবাহনে যেতে তিন-চার ঘণ্টা লাগছে, সেই সঙ্গে তিন-চার গুণ ভাড়াও, সামান্য মাইনের বেসরকারি কর্মচারীর পক্ষে যা প্রায় অসম্ভব।

অস্বীকার করব না কালেভদ্রে যখন লোকাল ট্রেনে উঠি, হকারদের চেঁচামেচি মোটেই সুমধুর লাগে না। তাই বলে তাঁদের ভাতে মারার পক্ষপাতী আমি নই। করোনার প্রথম ঢেউয়ে লোকাল ট্রেন ন’মাস বন্ধ ছিল। জানি না দ্বিতীয় ঢেউয়ে কত দিন বন্ধ থাকবে। তবে বুঝতে পারছি, মানুষগুলো করোনায় মারা না গেলেও, না খেয়ে অবশ্যই মরবেন। আমার বন্ধু বিশিষ্ট এক ডাক্তার ফেসবুকে লিখেছেন সরকার নির্ধারিত করোনার ওষুধ ডক্সিসাইক্লিন আর আইভারমেক্টিন প্রেসক্রিপশনে লিখলেও পাওয়া যাচ্ছে না। অনেক জায়গাতেই অক্সিজেন আর পালস অক্সিমিটারের কালোবাজারি হচ্ছে। মানুষের হাতে টাকা নেই, হাসপাতালে টিকা নেই। অবস্থা এই জায়গায় যেত না, যদি মানুষের মধ্যে সচেতনতা থাকত, করোনাবিধি ঠিক ভাবে পালন হত, মানুষ আরও আগে থেকে মাস্ক পরতেন। কিছু মানুষের নির্লিপ্ত ভাব আজ বহু মানুষের ভোগান্তির কারণ।

করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় দেখেছিলাম বহু স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব কমিউনিটি কিচেন ইত্যাদি করে মানুষের জন্য দু’মুঠো অন্নের সংস্থান করেছিলেন। দ্বিতীয় ঢেউ আরও ভয়ঙ্কর। সংবাদমাধ্যম বলছে, এর পর তৃতীয় ঢেউও আসতে চলেছে। ক’দিন আগে পর্যন্ত দেখেছি পাড়ার মোড়ে চায়ের দোকানে আড্ডা, ভোটের আগে অজস্র মানুষ নিয়ে সভা ও মিছিল। কিছু মানুষের অপরিণামদর্শিতার ফল এখন সবাইকে গুনতে হচ্ছে। জানি না এর শেষ কোথায়।

কাজল নন্দী

কলকাতা-১২৯

হঠাৎ বন্ধ?

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, করোনা পরিস্থিতির জন্য ৬ মে থেকে সমস্ত লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকবে। যে হারে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে, তাতে হয়তো উনি ঠিক কাজই করেছেন। কিন্তু হঠাৎ করে আজ বলেই কাল থেকে ট্রেন বন্ধ করলে বহু মানুষের সমস্যা হয়। সাধারণ মানুষকে ক’টা দিন সময় দিয়ে ট্রেন বন্ধ করলে ভাল হত। গত বছর যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে এই ভাবে হঠাৎ করে ট্রেন বন্ধের কথা ঘোষণা করেছিলেন, তখনও অনেক মানুষকে সমস্যায় পড়তে হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে তা হলে মোদীজির সঙ্গে মমতাদিদির পার্থক্য থাকল কোথায়?

সমস্ত সরকারি ও বেসরকারি অফিসে হাজিরা পঞ্চাশ শতাংশ আগেই করা হয়েছে। সেই সব অফিসের কর্মচারীরা অনেকেই লোকাল ট্রেনে যাতায়াত করতেন। সেই ট্রেন পুরো বন্ধ। এমনকি সরকারি বাসও পঞ্চাশ শতাংশ চলাচল করছে। সবাই তো আর কলকাতা শহরে বাস করেন না। তা হলে শহরতলির লক্ষাধিক মানুষ কোন পরিবহণ ব্যবস্থার মাধ্যমে তাঁদের কর্মক্ষেত্রে পৌঁছবেন?

ঋতুপর্ণা ভট্টাচার্য

চুঁচুড়া, হুগলি

নগদ অর্থ

সম্প্রতি আমেরিকার জো বাইডেন সরকারের প্রধান মেডিক্যাল উপদেষ্টা অ্যান্টনি এস ফাউচি বলেছেন, “ভারতে করোনা শৃঙ্খলা ভাঙতে কয়েক সপ্তাহের জন্য লকডাউনের পথে যাওয়ার প্রয়োজন এখনই।” আবার ‘দেশে আক্রান্ত ২ কোটি পার, শেষ অস্ত্র কি লকডাউন’ (৫-৫) খবরে অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর অধিকর্তা রণদীপ গুলেরিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অভিমতটি পাই— “আংশিক লকডাউন বা রাত্রিকালীন কার্ফুতে কোনও কাজ হবে না। দরকার দীর্ঘকালীন লকডাউন।”

দেশ জুড়ে ফের যদি লকডাউনের মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তবে সর্বাধিক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বিপুল সংখ্যক গরিব ও প্রান্তিক মানুষ। এই অবস্থায় তাঁদের হাতে সরাসরি কিছু নগদ টাকা পর্যায়ক্রমে তুলে দেওয়া জরুরি। ভারতে মোট শ্রমিকবাহিনীর প্রায় ৯০ শতাংশই অসংগঠিত শ্রমিক। লকডাউনে চরম অর্থাভাবের সম্মুখীন তাঁরা। তথ্য বলছে, ভারতে কর্মরত জনসংখ্যার ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ লোক লকডাউনে কাজ হারিয়েছেন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বহু প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রথম থেকেই বলে আসছেন, অর্থনীতির মোড় ঘোরাতে দরকার গরিবের হাতে টাকা তুলে দেওয়া। সেই জন্য সরকারের উচিত প্রয়োজনে টাকা ছাপানো। বামপন্থীরাও দাবি জানিয়ে আসছেন, দেশের ৮০ কোটি মানুষের ২০ কোটি পরিবারকে প্রতি মাসে ৭৫০০ টাকা ভাতার বন্দোবস্ত করতে হবে।

দেশ জুড়ে লকডাউন এখনও ঘোষিত না হলেও, বেশির ভাগ রাজ্যে কড়া বিধিনিষেধ আরোপিত হয়েছে। কেবল ব্রিটেন বা আমেরিকা নয়, পাকিস্তান বা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল রাষ্ট্রও লকডাউনের সময় দুর্দশাগ্রস্তদের হাতে নগদ অর্থ প্রদান করেছে। এ দেশে কেন্দ্রীয় সরকার সরাসরি নগদ অর্থ বা ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা আজও করল না কেন?

পৃথ্বীশ মজুমদার

কোন্নগর, হুগলি

ফিরে এল চিঠি

গত ২০ এপ্রিল কোন্নগর ডাকঘর থেকে স্পিড পোস্টে আমি একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম। সেটি ৫ মে আমার কাছে ফিরে এসেছে। কী কারণে এই ব্যর্থতা, জানি না। চিঠিটি কলকাতা-২০ ডাকঘরের মাধ্যমে বিলি হওয়ার কথা। প্রাপকের ঠিকানা— ১/১, এজেসি বোস রোড। এটি রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংস্কৃতি বিভাগের শাখা রাজ্য চারুকলা পর্ষদের কার্যালয়। ডাক বিলির সুবিধার জন্য লেখা ছিল, কলকাতা তথ্য কেন্দ্রের চত্বরে এবং ক্যালকাটা ক্লাবের উত্তর দিকে অবস্থিত। এত বিশদ ভাবে লেখা ঠিকানায় চিঠিটি বিলি না হয়ে ফেরত আসা মেনে নিতে পারছি না।

মিহির গঙ্গোপাধ্যায়

কোন্নগর, হুগলি

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Indian Railways COVID-19 coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE