Advertisement
E-Paper

সম্পাদক সমীপেষু: জেলার বইমেলা

প্রকাশকরা এই সব মেলায় নিয়ে আসেন শুধু তথাকথিত ‘চালু’ বই। নিজেদেরই প্রকাশ করা নানা বিষয়ের ভাল ভাল বই তাঁরা জেলার মেলায় আনেন না, রহস্যময় কোনও কারণে।

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০০:৪৯

আজকাল শীত পড়লেই শুরু হয়ে যায় জেলায় জেলায় বইমেলা। সরকারি এবং বেসরকারি। খুব আশা জাগিয়ে তোলার মতো বিষয়, সবার হাতে বই পৌঁছে যাবে। কিন্তু বাস্তব ছবি অন্য রকম। আগে কোনও বিশিষ্ট সাহিত্যিক মেলা উদ্বোধন করতেন, এখন সেই জায়গা দখল করেছেন রাজনৈতিক নেতারা। কোথাও আবার মোটা দক্ষিণায় ছায়াছবির জগতের লোক। সাহিত্যিকরা সংখ্যালঘু!

প্রকাশকরা এই সব মেলায় নিয়ে আসেন শুধু তথাকথিত ‘চালু’ বই। নিজেদেরই প্রকাশ করা নানা বিষয়ের ভাল ভাল বই তাঁরা জেলার মেলায় আনেন না, রহস্যময় কোনও কারণে। সেখানে কি বোদ্ধা ক্রেতা-পাঠকেরা নেই? তবে পাবলিশারের থেকে বুকসেলার বেশি। সেখানেও একই চিত্র। সাড়ে বত্রিশ ভাজা। আর সরকারি বইমেলায় আছে আবশ্যিক ‘লাইব্রেরি পারচেজ’। তার কথা আর না-ই বা বললাম!

মেলায় এক বা একাধিক মঞ্চ থাকে। সেখানে নাম কা ওয়াস্তে সেমিনার বা কবি-সম্মেলন, বেশির ভাগ দুপুর নাগাদ। তখন শোনার লোক প্রায় নেই। সন্ধে হতেই মঞ্চে শুরু হয় প্রবল বাজনা সহযোগে ধমাকা। চ্যানেল-খ্যাত অমুক-কণ্ঠী কিংবা শিশুপ্রতিভা, কৌতুকশিল্পী, রক ব্যান্ড বা এই ধরনের নানা আইটেম। মেলার আগে থেকেই এ সবের জোর প্রচার চলে। লোক ভেঙে পড়ে রোজ সন্ধ্যার এই সব রংতামাশায়। পাবলিকের দোষ নেই, তারা এই তৃতীয় শ্রেণির টিভি-মোবাইল কালচারের যুগের মানুষ। তাদের বই পড়ার দিকে টেনে আনতেই তো জেলায় জেলায় বইমেলা শুরু হয়েছিল, অথচ আমরাই মানুষকে (যাদের একটা বড় অংশ অপ্রাপ্তবয়স্ক) ‘বই’ এর নামে ডেকে এনে, ঠেলে দিচ্ছি অসংস্কৃতির দিকে। বই পড়ে থাকছে আড়ালে।

অথচ বইমেলার মঞ্চে বই-কেন্দ্রিক অনুষ্ঠান, লেখক-পাঠক মুখোমুখি, সাহিত্যের প্রশ্নোত্তর— এই রকম নানা অনুষ্ঠান হবে, তা-ই তো স্বাভাবিক। এবং প্রাইম টাইমে, সন্ধ্যাবেলায়। যখন দর্শকরা থাকেন। প্রশ্নোত্তর বা নানা প্রতিযোগিতার পুরস্কার থাকবে বই, বিশেষ করে ছোটদের জন্য। আন্তরিক ভাবে করলে জনপ্রিয়ও হবে। ধামাকা তো সর্বত্র, তার জায়গা কি বইমেলাও? আমি যা লিখলাম তার দু’একটি ব্যতিক্রম থাকতেই পারে, কিন্তু গড় চিত্র প্রায় এই রকম।

পিনাকী ঠাকুর বাঁশবেড়িয়া, হুগলি

মাদ্রাসা

‘রাজনীতির বাতাসে ধর্ম’ (১৯-১) কখনওই কাম্য নয়, এ প্রসঙ্গে দেবাশিস ভট্টাচার্যের লেখাটি যুক্তিযুক্ত, কিন্তু লেখাটির সঙ্গে যে ছবিটি দেওয়া হয়েছে তা মেনে নিতে পারলাম না, ছবির মধ্যের লেখাটিতে মাদ্রাসা কথাটিই দৃষ্টি আকর্ষণ করছে, শুধু তা-ই নয় ছবির নীচে ‘প্রগতি?’— এই চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে সরকারি মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি সাধারণ পাঠকের বিরূপ ধারণা জন্মাবে। ভারতের প্রায় সব রাজ্যে, এমনকী বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেও মাদ্রাসা শিক্ষাব্যবস্থা বিদ্যমান, উত্তরপ্রদেশে যোগী সরকার মাদ্রাসার আধুনিকীকরণের যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা-ও সাধুবাদযোগ্য, এমনকী মুসলিম যুবকদের এক হাতে কোরান, এক হাতে কম্পিউটার নিয়ে নতুন ভারত গড়ার যে কথা বলেছেন তাকেও সাধুবাদ। আর মাদ্রাসা মানে সেখানে শুধু মুসলিম ছাত্রছাত্রীরা পড়ে, এ ধারণাও ভুল, মাদ্রাসায় অনেক হিন্দু ছাত্রছাত্রী যেমন আছে, তেমন অনেক হিন্দু শিক্ষকশিক্ষিকাও আছেন। মাদ্রাসাগুলো নবিজির আদর্শ অনুসরণ করে মুসলমানদের মধ্যে নৈতিকতা ও আধুনিক শিক্ষা প্রসারের দায়িত্ব পালন করে চলেছে। আর এ ক্ষেত্রে কোনও গোঁড়ামি নেই, কিছু মাদ্রাসাতে সংস্কৃতও পড়ানো হয়। তাই ‘প্রগতি?’-র পথে শুধু সমালোচনা নয়, চাই গঠনমূলক আলোচনা। আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যপারে সচেষ্ট, আবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির সরকার মাঝে মাঝে মাদ্রাসাগুলির ব্যাপারে যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তা সাময়িক ভাবে অপমানজনক বলে মনে হলেও পক্ষান্তরে যেন শাপে বর হচ্ছে, কেননা এ দেশের সরকারি মাদ্রাসাগুলিতে পড়ে সাধারণত গরিব খেটে খাওয়া পরিবারের প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। এদের দুঃখ-দারিদ্র কেউ দেখে না, কেউ বলে না, ‘চলো, আমরা এদের ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার বানাই, পিছিয়ে পড়া এই মানুষগুলি মুসলমান নয়, এরা ভারতীয়।’

ফিরোজ আলী কাঞ্চন টেরাপুর পল্লিমঙ্গল হাই মাদ্রাসা, বর্ধমান

সব দলই

দেবাশিস ভট্টাচার্য লিখেছেন, ‘বঙ্গ রাজনীতি হঠাৎ কেমন ধর্মময়। যত দিন যাচ্ছে, রাজনীতির গতি যেন ততই বেশি করে ধর্মনির্ভর হয়ে পড়ছে।’ আসলে স্বাধীনতার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলি ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ভোটব্যাংক নীতিকেই কেবল প্রশ্রয় দিয়ে এসেছে দিনের পর দিন। ব্যালট বক্সের উদরপূর্তি ঘটাতে গিয়ে কখনও জাতপাতকে, কখনও উচ্চ বা নিচু বর্ণকে, আবার কখনও ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার করেছে এবং করছে। গোমাংস ভক্ষণ থেকে শুরু করে ইমাম ভাতা, গুজরাত পতিদার সংরক্ষণ ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে, যখন যে ভাবে দরকার হয় ভোটের পালে হাওয়া দিয়ে বৈতরণি পার হওয়াটাই একমাত্র লক্ষ্য। দেবাশিসবাবু লিখেছেন, ‘এটাও সবাই জানেন যে, বিজেপি উগ্র ‘হিন্দুত্বের’ ধ্বজা ওড়ায়।... কিন্তু তা সত্ত্বেও সিপিএম বা কংগ্রেসের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দলের সমর্থকেরা যদি শিবির ভেঙে ‘হিন্দুত্বের’ পতাকার নীচে জায়গা খুঁজে নেয়, তবে মানতেই হবে, এত দিন ময়দান চষা দলগুলি আসলে নিজেদের ঘরটাই মজবুত করতে পারেনি।’ লেখক ভাবের ঘরে চুরি না করলে তাঁকে স্বীকার করতেই হবে, যে ময়দান-চষা দলগুলির কথা তিনি উল্লেখ করেছেন, তারা কোনও কালে ধর্মনিরপেক্ষ ছিল না, আজও নেই। ‘শাহবানু ও তিন তালাক’ বিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের বিরুদ্ধে কংগ্রেসের অবস্থান, বামফ্রন্ট আমলে তসলিমা নাসরিনের ‘দ্বিখণ্ডিত’ নিষিদ্ধ করে লেখককে বাংলা ছাড়তে বাধ্য করার মতো বহু ঘটনা কি প্রমাণ করে না, এ দেশে কী ভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার অবমাননা হয়ে চলেছে ভোটব্যাংকের স্বার্থে? এর পর যদি মনে হয় বিজেপি উগ্র হিন্দুত্বের ধ্বজা ওড়াচ্ছে, তবে সেই দায় তো তাদের, যারা ভণ্ড ধর্মনিরপেক্ষতায় আমজনতাকে দিনের পর দিন ঠকাচ্ছে।

মিহির কানুনগো কলকাতা-৮১

জাগ্রত?

প্রায় দেখছি বিভিন্ন মন্দির থেকে দেবদেবীর মূর্তি, মূল্যবান গয়না ও অন্যান্য দ্রব্যসামগ্রী চুরি হয়ে যাচ্ছে। এই সব দেবদেবীর মধ্যে কেউ জাগ্রত, কেউ আবার অতি জাগ্রত। তাঁরা যদি নিজেদের জিনিসপত্র সামান্য চোরদের হাত থেকে রক্ষা করতে না পারেন, তাঁদের কোটি কোটি ভক্তকে কী ভাবে রক্ষা করেন?

গোপাল সাহা চৌধুরী পানুহাট বাজার, বগটোয়া

বেতার

আর্যভট্ট খান-এর ‘বেতার নগরী’ ( রবিবাসরীয়, ২১-১ ) লেখায়, ‘এ রকমই এক বাঙালি রবীন্দ্রনাথ গুহ’র...’ অংশে, রবীন্দ্রনাথবাবুর পদবিটি ‘দাস’ হবে। এবং তাঁর মুদির দোকান নয়, মনিহারি দোকান আছে।

সুমন্ত সেন কাটোয়া, পূর্ব বর্ধমান

ভ্রম সংশোধন

‘টলিউডের ইয়ং বিগ্রেড’ (আনন্দ প্লাস, ২৪-১) শিরোনামে ‘ব্রিগেড’ বানানটি ভুলবশত লেখা হয়েছিল ‘বিগ্রেড’। এই অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়

Book Fair বইমেলা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy