বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালের পুরস্কার বিতরণী মঞ্চ।
বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনালের দিন কয়েকটি অবাঞ্ছিত ঘটনা দর্শকদের নজর এড়ায়নি। এক, নিরাপত্তার ফাঁক গলে ম্যাচ চলাকালীন মাঠে দর্শক ঢুকে পড়া। দুই, পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে কোনও আচ্ছাদনের ব্যবস্থা না রাখা (অথচ আবহাওয়ার পূর্বাভাস বিবেচনা করে তা রাখা উচিত ছিল)। তিন, পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শুরু করায় দেরি। চার, রাশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়াও মঞ্চে ফ্রান্স এবং ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধান উপস্থিত ছিলেন। অথচ বৃষ্টির সময় অতিথি রাষ্ট্রপ্রধানদের মাথায় ছাতা ধরার জন্য তেমন কাউকে দেখা যায়নি। তা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপ্রধানেরা যে ভাবে খেলোয়াড়দের অভিনন্দন জানিয়েছেন, মনে রাখার মতো। এ প্রসঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানের কথা উল্লেখ না করলেই নয়। স্বদেশের জার্সি পরে, অবিশ্রান্ত বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে হাসিমুখে প্রত্যেক খেলোয়াড়কে উষ্ণ অভিনন্দন জানালেন। দেশ হারলেও, তাঁর খেলোয়াড়সুলভ আচরণ আমাদের মুগ্ধ করেছে।
ধীরেন্দ্র মোহন সাহা
কলকাতা-১০৭
বর্ণ ও ফুটবল
সঙ্কীর্ণতার পরাজয় (১৮-৭) শীর্ষক সম্পাদকীয়ের পরিপ্রেক্ষিতে এই পত্র। লেখাটির মূল বক্তব্য মনে হল এই যে, ফুটবল দুনিয়ায় ফ্রান্সের এই বিশ্ববিজয় সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র সে দেশের বর্ণবৈচিত্রের জন্য। উল্টো দিকে ক্রোয়েশিয়ার হারের কারণ যেন এই: তাদের চামড়ার রং সাদা। কথাটি হাস্যকর। বর্ণবৈচিত্র বা তার অভাবের সঙ্গে ফুটবল বিশ্বকাপ জেতার কোনও যোগ নেই। ফ্রান্সের ও ফ্রান্স ফুটবল দলের এই বর্ণবৈচিত্র বেশ অনেক দিনের। ২০১০-এ যখন ফ্রান্স বিশ্রী ভাবে হেরে বাড়ি ফিরে যায়, তখন এই ভিন-জাতীয় খেলোয়াড়দেরই অনেকে দায়ী করেছিলেন, যে এঁরা সব আদতে বিদেশি ও এঁদের দেশের প্রতি কোনও দায়বদ্ধতা নেই। কিন্তু সে বারও শুধু কালো ছেলেরা ফ্রান্সকে হারাননি। এ বারও শুধু কালো ছেলেরা ফ্রান্সকে জেতাননি। ভাল ফুটবল ও বাজে ফুটবল একটা দলকে হারায় বা জেতায়। ২০১৪ বিশ্বকাপ জিতল জার্মানি। ক’জন কালো খেলোয়াড় ছিলেন দলে? ক’জন তুর্কি রিফিউজ়ি ছিলেন? বস্তুত সেই দলের তুর্কিদের সম্পর্কে এ বছর বলা হচ্ছে যে তাঁদের (দু’জন) দেশের প্রতি দায়বদ্ধতা নেই, দল থেকে বাদ দাও। ইংল্যান্ড দলের রং কী? প্রচুর কালো চামড়া। বর্ণবৈচিত্রে ভরপুর। তাদের তো সাদা চামড়ার ক্রোয়েশিয়া টুঁটি চিপে হারিয়ে দিল। নেদারল্যান্ডসের সমাজে ও ফুটবল দলে অসংখ্য কালো মানুষের ভিড়। তারা তো বিশ্বকাপের মূল পর্বে উঠতেই পারেনি। আসলে ফুটবল বিশ্বকাপ জিততে গেলে অনেকগুলো জিনিসকে ঠিক ঠিক ভাবে কাজ করতে হয়। বর্ণবৈচিত্র আছে কি নেই সেটা নেহাতই গৌণ ব্যাপার। বর্ণবৈচিত্র নিয়ে সম্পাদকীয় লেখা যায়। বিশ্বকাপ জেতা যায় না।
সুদীপ্ত রায়
কলকাতা-২৬
লেভ ইয়াসিনকে
অনেকেই হয়তো জানেন না, লেভ ইয়াসিনকে গোল দিয়েছিলেন যে একমাত্র ভারতীয় ফুটবলার, তিনি এক বাঙালি: সুশান্ত ঘোষ। তিনি আজ আর পৃথিবীতে নেই। ১৯৫৫ সালে শৈলেন মান্নার নেতৃত্বে রাশিয়ায় শুভেচ্ছা সফরে গিয়েছিল ভারতীয় দল। খেলেছিল সাতটি ম্যাচ। প্রতিটিতেই খেলেছিলেন সুশান্ত। এই সফরে ভারতীয় দল জয়, পরাজয়, ড্র— সব ধরনের ফলাফলেরই স্বাদ পেয়েছিল। মস্কোয় রাশিয়ার জাতীয় দলের বিরুদ্ধে লেভ ইয়াসিনকে গোল দিয়ে সুশান্ত রুশ ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। গোলটি করেছিলেন পেনাল্টি থেকে। মনে রাখতে হবে, তখন ইয়াসিনকে পেনাল্টিতে গোল দেওয়াও ছিল দুঃসাধ্য। খেলাটিতে ভারত ১১-১ গোলে হারে। তবুও এই গোলটি সুশান্তবাবুর জীবনে স্মরণীয় হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল। কলকাতা ময়দানে তিনি রাজস্থান (১৯৪৭-৫০), ইস্টবেঙ্গল (১৯৫১), মোহনবাগান (১৯৫২), উয়াড়ি (১৯৫৩-৫৭), বিএনআর (১৯৫৮-৬৩) ইত্যাদি দলের হয়ে খেলেছিলেন। সন্তোষ ট্রফিতে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন ১৯৫৫ সালে।
সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়
খড়দহ, উত্তর ২৪ পরগনা
বিচারক
‘শেষ ভরসা’ (১২-৭) শীর্ষক সম্পাদকীয় সম্পর্কে এই চিঠি। কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি মাননীয় গিরীশ চন্দ্র গুপ্ত মহাশয় অবসর গ্রহণের পরে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। তা ছাড়াও ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিক্যাল এস্টাবলিশমেন্ট রেগুলেটরি কমিশনের চেয়ারপার্সন হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মাননীয় অসীম কুমার রায় মহাশয়কে নিয়োগ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, অসীমবাবুকে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাঁর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারক থাকাকালীনই মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তাঁর নাম ঘোষণা করেন। এ নিয়ে অনেক জল ঘোলা হয় এবং তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। তার মানে এই নয় যে তাঁরা যখন বিচারপতি ছিলেন, তখন সরকারের প্রতি পক্ষপাত করেছেন। বিভিন্ন কমিশনের বিভিন্ন পদে সাধারণত বিচারপতিদের নেওয়া হয় তাঁদের কার্যক্ষমতার প্রতি নজর রেখে। অবসর-পরবর্তী সময়ে সরকারের কোনও পদগ্রহণ করলেই যে বিচারপতির অবস্থান অনৈতিক হয়ে যায়, এ রকম ভাবনার কোনও ভিত্তি নেই। সাধারণ মানুষ যদি তা-ই ভাবেন, তা হলে কি তাঁদের ভাবনাচিন্তার নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না? নৈতিকতার দায় কি শুধু সরকারি কর্মী, বিচারক, আমলা, মন্ত্রী— এঁদের উপর বর্তায়? সাধারণ মানুষ কি গণতন্ত্রের ঊর্ধ্বে?
বিমল বেরা
তমলুক, পূর্ব মেদিনীপুর
শুধু দিল্লি?
জয়ন্ত ঘোষাল ‘বদলা নেওয়ার রাজনীতি’ (১৮-৭) শীর্ষক নিবন্ধে যা লিখেছেন, তা কেন শুধু দিল্লি বা মোদীতে সীমাবদ্ধ থাকল বোঝা গেল না! টাকার লোভ বা মামলার ভয় দেখিয়ে ‘বিরোধী’ গিলে খাওয়ার মাৎস্যন্যায় কি এই ‘বিশ্ব বাংলা’তেও আমরা কম দেখলাম?
উদয় বন্দ্যোপাধ্যায়
ই-মেল মারফত
বাস তোলা
প্রতি বছরের মতো এ বারও ২১ জুলাই তৃণমূল কংগ্রেসের শহিদ দিবস পালন উপলক্ষে, তিন-চার দিন আগে থেকেই, রাস্তা থেকে বাস তুলে নেওয়া হল। বর্ধমান আরামবাগ, বর্ধমান শাশপুর রুটের বাস অনেক কমে গেল। প্রত্যেক বছর একই ঘটনা ঘটছে, অথচ পুলিশ প্রশাসন/ পরিবহণ দফতর/ শাসক দল কেউই ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ব্যাহত হচ্ছে গণপরিবহণ ব্যবস্থা।
সুমন্ত কোঙার
মুগুড়া, পূর্ব বর্ধমান
নেতাজির ধর্ম
শিশির বসুর নিবন্ধ ‘মানবতাবাদই ছিল তাদের ধর্ম’ (৭-৭) পড়ে এই চিঠি। সুভাষচন্দ্র বসুর ধর্মজীবন সম্পর্কে জানাই, যোগিরাজ শ্যামাচরণ লাহিড়ীর মন্ত্রশিষ্য ছিলেন পঞ্চানন ভট্টাচার্য মহাশয়। পঞ্চানন ভট্টাচার্যের সুযোগ্য শিষ্য ছিলেন মুর্শিদাবাদের লালগোলা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বরদাচরণ মজুমদার। বরদাচরণ ছিলেন নেতাজির অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। তিনি কলকাতায় এলে নেতাজি ওঁর কাছে আসতেন। ভারত ত্যাগের পূর্বে নেতাজি মোহিনীমোহন রোডে ডা. অমিয়মাধব মল্লিকের বাসভবনে এক নিভৃত কক্ষে ওঁর সঙ্গে যোগে বসতেন। যোগসাধনা শিখেছিলেন ওঁর কাছেই। বরদাচরণ মজুমদারের কাছেই নেতাজি ১৯৩৯ সালের ১২ জুন ক্রিয়াযোগে দীক্ষিত হয়েছিলেন।
শোভনলাল বকসী
কলকাতা-৪৫
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়। চিঠির শেষে পুরো ডাক-ঠিকানা উল্লেখ করুন, ই-মেলে পাঠানো হলেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy