Advertisement
E-Paper

বার্তাটাকে অবজ্ঞা করার উপায় নেই

সংশয় নেই, মুহূর্তে চোখের সামনে বেরিয়ে আসে পশ্চিমবঙ্গীয় নির্বাচনী গণতন্ত্রের কঙ্কালসার চেহারাটা।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৪৪
ভোটকর্মী থেকে শুরু করে ভোটদাতা, সর্বতো ভাবে সর্বত্র একটাই সুর বাজছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি চাই-ই চাই। —ফাইল চিত্র।

ভোটকর্মী থেকে শুরু করে ভোটদাতা, সর্বতো ভাবে সর্বত্র একটাই সুর বাজছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি চাই-ই চাই। —ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গীয় নির্বাচনের ইতিহাস দেখতে গেলে ২০১৯ সালের একটা নির্দিষ্ট বার্তাকে ছুঁতে না পারা অপরাধ বলেই গণ্য হবে। বহু বছরের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সাংবাদিকের চোখে পড়বে ২০১৯-এর পশ্চিমবঙ্গীয় নির্বাচনের কেন্দ্রীয় থিমে এসে দাঁড়াচ্ছে দু’টো শব্দ— কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটকর্মী থেকে শুরু করে ভোটদাতা, সর্বতো ভাবে সর্বত্র একটাই সুর বাজছে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতি চাই-ই চাই। এই ভোট গীত নাই, কেন্দ্রীয় বাহিনী বিনে।

সংশয় নেই, মুহূর্তে চোখের সামনে বেরিয়ে আসে পশ্চিমবঙ্গীয় নির্বাচনী গণতন্ত্রের কঙ্কালসার চেহারাটা। ভোট প্রক্রিয়াকে নিয়ে বহু বছর ধরে কোন পর্যায়ে ‘খেলাধূলা’ করলে সার্বিক ভাবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর উপস্থিতির এই রকম একটি আগ্রাসী দাবি যে উঠতে পারে, সেটা বোঝা খুব কঠিন নয়।তবু ২০১৯ বোধহয় আলাদা ভাবে মাইলফলক হতে যাচ্ছে। কারণ একটাই, গণতন্ত্রের লুণ্ঠনে সর্বনিকৃষ্ট চিত্রটার সাক্ষীও পশ্চিমবঙ্গ সম্ভবত হয়েছে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে। যে কারণে, পাঠক খেয়াল করুন, প্রতিবেদনের পর প্রতিবেদনে,উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গে, সাধারণ মানুষকে বারংবার একটা বার্তা দিতে দেখছি আমরা এ বারের নির্বাচনে— কেন্দ্রীয় বাহিনীর সামনে ভোট দিতে চান আপামর সাধারণ মানুষ। এবং কী আশ্চর্য, ঠিক সেই সময়েই ভোটকর্মীদের পরিবার-পরিজন পুলিশের নিরাপত্তায় সম্পূর্ণ অনাস্থা প্রকাশ করে প্রকাশ্য রাস্তায় বেরিয়ে এসে যা বলছেন, তার নির্যাস একটাই, কেন্দ্রীয় বাহিনীর অনুপস্থিতিতে এই ভোট হলে তাঁদের জীবনের নিরাপত্তা বিন্দুমাত্র সুনিশ্চিত নয়।

পশ্চিমবঙ্গের জন্য এর চাইতে বড় লজ্জার কথা আর কিছু হতে পারে না। সম্প্রতি নির্বাচনী পর্যবেক্ষক যখন পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান পরিস্থিতি ১০-১৫ বছর আগের বিহারের পরিস্থির সঙ্গে তুলনা করলেন, এবং আমাদের শাসককুল যারপরনায় অপমানিত হলেন, এবং এই অপমান বাংলার অপমান বলে সদম্ভ ঘোষণা করলেন— তখনও কারও মনে হল না নির্বাচনী ময়দানে মৃত্যুর কলঙ্কও এই রাজ্যের গায়েই লেগে রইল এ বারও। মানুষকে সরিয়ে, নকুলদানা অথবা গুড়বাতাসার ছদ্ম শব্দে আসলে এক ‘অতিমানবীয়’ ভঙ্গিমায় মানুষকে জয় করার চেষ্টা করলে যা হয়, ২০১৯-এ পশ্চিমবঙ্গ ঠিক তারই সম্মুখীন এই মুহূর্তে।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা নদিয়া পুলিশের

মানুষ, মানুষ, মানুষ— গণতন্ত্রে উত্তরণ যে মানুষকে জড়িয়ে ছাড়া সম্ভব নয় অথবা আরও নির্দিষ্ট ভাবে বলতে গেলে মানুষকে অবজ্ঞা করে অসম্ভব— এই সত্য থেকে যদি কেউ বিচ্যুত হয়, তবে ললাটলিখনও নিশ্চিত হতে থাকে নির্দিষ্ট ভাবেই। সাধু সাবধান!

লোকসভা ভোট ২০১৯ Lok Sabha Election 2019 Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় Central Reserve Police Force CRPF Democracy Newsletter
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy