Advertisement
E-Paper

লন্ডল ডায়েরী

প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-শেষের শতবর্ষ পূর্তি ও হাইক্লেয়ার কাস্‌ল-এর কথা মাথায় রেখে হচ্ছে অনুষ্ঠান ‘হিরোজ় অ্যাট হাইক্লেয়ার’, বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ-দেওয়া সৈন্যদের স্মরণে।

শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৫৯

অন্য এক দেশের রাজার জন্য লড়েছিলেন ওঁরা

হাইক্লেয়ার কাস্‌ল বিখ্যাত হয়েছে টিভি-সিরিজ় ‘ডাউনটন অ্যাবি’র সৌজন্যে। ১৯১২-১৯২৬ সময়কালে অভিজাত ক্রলি পরিবারের জীবন এই সিরিজ়ের বিষয়বস্তু। সিরিজ়ে দেখা যায়, লেডি ক্রলি এই বাড়িটিকে রূপ দিচ্ছেন হাসপাতালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আহত ব্রিটিশ সৈন্যদের সেবার জন্য। তাঁর মেয়ে সিবিল রোগীদের সেবা করে সেখানে। এ সবই সত্য ঘটনা অবলম্বনে। যুদ্ধের সময় এই কাস্‌ল সত্যিই ছিল হাসপাতাল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ-শেষের শতবর্ষ পূর্তি ও হাইক্লেয়ার কাস্‌ল-এর কথা মাথায় রেখে হচ্ছে অনুষ্ঠান ‘হিরোজ় অ্যাট হাইক্লেয়ার’, বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ-দেওয়া সৈন্যদের স্মরণে। শ্রদ্ধা জানানো হচ্ছে ১৫ লক্ষ ভারতীয় সেনাকে, যাঁরা অন্য এক দেশের রাজার জন্য যুদ্ধে গিয়েছিলেন। ৭২,০০০-এরও বেশি সেনা মারা যান, ১১ জন পেয়েছিলেন সাহসিকতার সর্বোচ্চ পুরস্কার ভিক্টোরিয়া ক্রস। হাইক্লেয়ার কাস্‌ল-এর মাথায় উড়েছে ভারতের জাতীয় পতাকা। দোতলা বাসও হয়ে উঠেছে প্রদর্শনীস্থল। উৎসবের অঙ্গ ছিল আকাশ মহড়া, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়কার হাসপাতাল ও সেবা-শিবিরে বিনোদনের পুনর্নির্মাণ, গান, ভাষণ। চার হাজারেরও বেশি মানুষ যোগ দিয়েছেন।

স্মরণ: অনুষ্ঠানের আবহে হাইক্লেয়ার কাস্‌ল। ডান দিকে, দোতলা বাসে প্রদর্শনী

বিবিসি-র নইপল

স্যর ভিদিয়া নইপল-এর স্মরণে বিবিসি ২০০৮ সালে তাঁর উপরে নির্মিত একটি তথ্যচিত্র পুনঃসম্প্রচার করল। ‘দ্য স্ট্রেঞ্জ লাক অব ভি এস নইপল’ নামের এই ছবিতে ৭৫ বছর বয়সি লেখক ফিরে গিয়েছেন তাঁর ত্রিনিদাদের বাড়িতে, এসেছেন ভারতেও। কী করে অক্সফোর্ডে পড়তে আসার বৃত্তি পেলেন, পরে বিবিসি-তে যোগ দিলেন, লেখালিখি শুরু করলেন, বলেছেন সেই গল্প। ছবিতে আছে তাঁর এজেন্ট ও প্রকাশকের সাক্ষাৎকার; নইপলের প্রথম স্ত্রী প্যাট-এর সঙ্গে বিয়ে, তাঁর আর্জেন্টিনীয় বান্ধবী মার্গারেট গুডিংয়ের সঙ্গে সম্পর্কের কথাও। ভালবাসা ও অবিশ্বস্ততা, সবই নিয়ে অকপট নইপল। ছবির কিছুটা শুট হয়েছে লেখকের উইল্টশায়ারের বাড়িতে, সেখানে দেখা যাচ্ছে তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী নাদিরা রান্নাঘরে সব্জি কাটতে কাটতে তাঁর ‘বিতর্কিত’ স্বামী সম্পর্কে বলছেন। ছবিতে এও আছে, নইপল ভারতীয় সাংবাদিকদের অপমান করছেন, তাঁদের করা প্রশ্ন তাঁর তেমন ভাল লাগছে না বলে!

ব্যাটে-বলে বিশ্বযুদ্ধ

খেলা: ওভালে শিখ-ইংরেজ ম্যাচ

রোজ রোজ তো আর প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পোশাকে কোনও শিখ সৈন্যকে ক্রিকেটের ব্যাট হাতে খেলার মাঠে দেখা যায় না! তাও আবার উল্টো দিকে তখন বল করছে এক ইংরেজ, তারও পরনে সেনা-ইউনিফর্ম! গত রোববার যাঁরা ওভাল-এ ভারত-ইংল্যান্ড টেস্ট ম্যাচ দেখতে গিয়েছিলেন, তাঁরাই দেখলেন এমন ঘটনা। মধ্যাহ্নভোজের বিরতিতে ‘ফিফটিন্‌থ লুধিয়ানা শিখস’ ও ‘রয়্যাল ম্যাঞ্চেস্টার রেজিমেন্ট’-এর মধ্যে হওয়া ‘ওয়ার্ল্ড ওয়ার ওয়ান’ ম্যাচটির পুনর্নির্মাণ ঘটল, দর্শকেরা সবাই হাততালি দিয়ে বাহবা জানালেন। ম্যাচে জিতল শিখ রেজিমেন্ট, একপ্রস্থ ভাংড়া নেচে জয় উদ্‌যাপনও করল। বিশ্বযুদ্ধের চার বছরে অবসর সময়ে মন ভাল রাখতে ভারতীয় ও ব্রিটিশরা যে ক্রিকেট-ফুটবল খেলত, সে কথা সুবিদিত। ভারতীয়রা খেলত কবাডি, কুস্তি, খো-খো’র মতো খেলাও। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের প্রজন্মের স্মরণে রবিবারের এই ক্রীড়ানুষ্ঠানের আয়োজক ছিল সারে কাউন্টি ক্রিকেট ক্লাব, দ্য রয়্যাল ব্রিটিশ লিজিয়ন এবং ন্যাশনাল আর্মি মিউজ়িয়াম। বিশ্বযুদ্ধে ভারতের অবদান স্মরণে ভারত ও ইংল্যান্ড দুই দলের ক্যাপ্টেন বিরাট কোহালি ও জো রুট পরেছিলেন খাদির তৈরি বিশেষ ব্যাজ।

নাচের ছন্দে ‘ফ্লু’

স্প্যানিশ ফ্লু-এর মতো রোগ, যা কিনা লক্ষ লক্ষ লোকের মৃত্যুর কারণ, তা নিয়ে কেউ নাচের প্রজেক্ট ভাববে— সম্ভব? লন্ডনবাসী ভারতীয় নৃত্যশিল্পী-কোরিয়োগ্রাফার শোভনা জেয়াসিং সেই চ্যালেঞ্জই নিয়েছেন। ১৯১৮ সালের ‘নীল মৃত্যু’ স্প্যানিশ ফ্লু-কে মাথায় রেখে তৈরি করেছেন নাচ ‘কন্ট্যাজিয়ন’। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যত না সৈন্য ও সাধারণ মানুষ মারা গিয়েছিলেন, তারও বেশি মারা পড়েন এই ফ্লু’র কবলে। শোভনার নাচের প্রেরণা এই স্প্যানিশ ফ্লু-এর ভাইরাস, অদৃশ্য সেই শত্রু যা ছিল যুদ্ধের চেয়েও ভয়ঙ্কর। ব্রিটিশ লাইব্রেরির হল-এ এই নাচ পরিবেশন করবেন আট জন নারী নৃত্যশিল্পী। সঙ্গীতে গ্রেম মিলার।

London Diary London Diaries লন্ডল ডায়েরী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy