Advertisement
২৯ এপ্রিল ২০২৪
London Diary

লন্ডন ডায়েরি: আধুনিক ভারতের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন নেহরু

নেহরু ইউরোপীয় স্থপতিদের সঙ্গে ভারতীয় কর্মীদের কাজ করতে জোর দিতেন, যাতে স্থানীয় স্থপতিরা কাজ করতে করতেই শেখেন।

London Diary

— ফাইল চিত্র।

শ্রাবণী বসু
শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২৪ ০৮:১৮
Share: Save:

ভিক্টোরিয়া অ্যান্ড অ্যালবার্ট মিউজ়িয়াম ‘ট্রপিক্যাল মর্ডানিজ়ম’ প্রদর্শনীতে জওহরলাল নেহরুকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। এটির বিষয় নেহরুর দৃষ্টিতে উপনিবেশ-উত্তর ভারতের রূপ এবং ঘানা-সহ অন্যান্য দেশে তাঁর প্রভাব। দেখানো হয়েছে স্বাধীনতা ও রক্তক্ষয়ী দেশভাগে লাহোর খুইয়ে নেহরু চণ্ডীগড় শহরকে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন, আধুনিকতার পথে স্বাধীন ভারতের প্রথম বড় পদক্ষেপ হিসাবে। সাম্রাজ্যবাদী শক্তির চিহ্ন বইছে রাজধানী নয়াদিল্লির নকশা, কিন্তু চণ্ডীগড় ছিল নেহরুর রাজনৈতিক প্রতীক। তিনি এ ভাবেই মন্দিরে মন্দিরে আধুনিক ভারতের প্রতিমা গড়তে চেয়েছিলেন, যাতে দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়, শিল্পায়ন হয়। তাঁর ডাকে চণ্ডীগড় নির্মাণে আসেন ব্রিটিশ স্থপতি জেন ড্রু, ম্যাক্সওয়েল ফ্রাই, সুইস-ফরাসি স্থপতি লা কর্বুসিয়ের।

অতীত: চণ্ডীগড়ের নকশা হাতে লা কর্বুসিয়ের।

অতীত: চণ্ডীগড়ের নকশা হাতে লা কর্বুসিয়ের।

লা কর্বুসিয়েরকে ঘিরে ভারতীয় স্থপতিরা।

লা কর্বুসিয়েরকে ঘিরে ভারতীয় স্থপতিরা।

নেহরু ইউরোপীয় স্থপতিদের সঙ্গে ভারতীয় কর্মীদের কাজ করতে জোর দিতেন, যাতে স্থানীয় স্থপতিরা কাজ করতে করতেই শেখেন। সঙ্গে বিদেশে কর্মরত ভারতীয় স্থপতিদেরও ফিরিয়ে, উপনিবেশ-উত্তর স্থপতিগোষ্ঠী গড়তে চাইছিলেন। প্রদর্শনীতে আছে চণ্ডীগড়ের নকশা, প্রকল্পে কর্মরত ভারতীয়দের ছবি। সত্তর দশকে নেহরুর স্বপ্নকে লালন করেন কর্বুসিয়েরের দলের সদস্য, স্থপতি রাজ রেওয়াল। তিনিই ‘হল অব নেশনস’ আর তিনটি ‘হল অব ইন্ডাস্ট্রি’-সহ দিল্লির প্রগতি ময়দানের রূপকার। প্রদর্শনীতে লেখা— সমসাময়িক ভারতীয় রাজনীতির ঝোঁক কট্টর হিন্দু জাতীয়তাবাদের পক্ষে; তা নেহরুর ধর্মনিরপেক্ষ, আধুনিক, প্রগতিশীল ভারত-নীতির পরিপন্থী। ক্যাপশনে লেখা, বিপন্ন নেহরুর স্থাপত্যের উত্তরাধিকার। ২০১৭-য় নেহরু মেমোরিয়াল প্যাভিলিয়ন-সমেত রেওয়ালের হল রাতারাতি ভাঙা হয়, প্রতিবাদ সত্ত্বেও। সেখানেই ২০২৩-এর জি-২০’র কর্পোরেট ক্যাম্পাস তৈরি হয়েছে। প্রদর্শনীতে হলের নকশা, রেওয়ালের ছবিও রয়েছে।

রাজপরিবারে দুঃসময়

কেটের ভিডিয়ো বার্তা প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে যেন ব্রিটিশ রাজপরিবারের উপর বিষাদের ছায়া নেমে এসেছে। যুবরানি জানিয়েছেন, তাঁর ক্যানসার হয়েছে, কেমোথেরাপি চলছে। গত দু’সপ্তাহ ধরে সংবাদমাধ্যমে যে ভাবে তাঁকে নিয়ে হইচই চলেছে, তার সবটাই বড় নিষ্ঠুর মনে হচ্ছে এখন। প্রাসাদ চাইবে, এ বার যেন সব আষাঢ়ে জল্পনাকল্পনা থামে। কেট জানিয়েছেন, তাঁর ও উইলিয়ামের পক্ষে তিন সন্তানকে খবরটা জানানো খুব কঠিন ছিল। চিকিৎসা চলাকালীন গোপনীয়তা রাখার অনুরোধ করেছেন। রাজা চার্লসেরও ক্যানসারের চিকিৎসা চলছে। ফলে, প্রতি দিনের রাজকার্য, অনুষ্ঠান ইত্যাদির ভার এখন প্রধানত রানি ক্যামিলা ও যুবরাজ উইলিয়ামকেই নিতে হবে। সঙ্গে জীবনসঙ্গীরও দেখভাল করতে হবে। রাজা প্রাসাদ থেকেই কাজ করছেন। প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ছবি, শুভেচ্ছাসূচক কার্ড পড়ার ছবি দেখা গিয়েছে। জানিয়েছেন, মজার কার্ডগুলি তাঁকে হাসিয়েছে, চাঙ্গা করেছে।

নাগমণি রহস্য

দ্য টাইমস-এ সপ্তাহের সেরা ছোটদের বই নির্বাচিত বাঙালি লেখিকা পিউ দাশগুপ্তের প্রথম উপন্যাস সিক্রেটস অব দ্য স্নেকস্টোন। গল্পে ছোট্ট এক মেয়ে তার বাবাকে ও জাদুকরী এক নাগমণিকে খুঁজছে। বাবার দেনা শোধের জন্য কলকাতা থেকে প্যারিসে, ধনীর বাড়িতে পরিচারিকা হয়ে আসে জ়িলি দত্ত। বাবার চিঠি আসা বন্ধ হলে, বিপদের গন্ধ পেয়ে, তল্লাশি করতে সে পৌঁছে যায় প্যারিসের পয়ঃপ্রণালী, ভূগর্ভের সমাধিস্থলের গলিঘুঁজিতে। খুঁজে পায় এক গুপ্তসমিতি। প্রেক্ষাপটে ১৮৯০-এর প্যারিসের বেল ইপক যুগ বা সুসময়, যখন মুলাঁ রুজ নাইটক্লাবে জমেছে ক্যান-ক্যান নাচের আসর, মধ্যগগনে টুলুজ় লত্রেক ও অন্য ইম্প্রেশনিস্ট চিত্রশিল্পীরা। উপন্যাসে প্যারিসের দৃশ্য, শব্দ বারে বারে দোলা দিয়েছে। লেখিকার জন্ম কলকাতায়, পড়াশোনা অক্সফোর্ডে, থাকেন প্যারিসে। ছোটবেলায় দিদিমার কাছে শোনা গল্পগুলির ভিত্তিতে বইটি লিখেছেন। বলেছেন, পরের বইটির পটভূমি প্যারিসেরই অন্য জায়গায়।

সাহিত্যিকঃ পিউ দাশগুপ্ত।

সাহিত্যিকঃ পিউ দাশগুপ্ত।

একা একা কথা বলি

তৃতীয় জর্জের আমলের প্রেক্ষাপটে দৃশ্যায়িত নেটফ্লিক্সের ব্রিজারটন সিরিজ়ে এডউইনা শর্মার ভূমিকায় জনপ্রিয় চরিত্রা চন্দ্রন। তাঁর মঞ্চে হাতেখড়ি হল ওয়েস্ট এন্ড-এর গ্যারিক থিয়েটারে। ইনস্ট্রাকশনস ফর আ টিনএজ আর্মাগেডন একক নাটকটি এক সপ্তদশীর বয়ঃপ্রাপ্তি নিয়ে। নায়িকা দিদির অকালমৃত্যু, মা-বাবার বিচ্ছেদ, কৈশোরের হাজারো সমস্যার সম্মুখীন। ৮০ মিনিটেরও বেশি ব্যঙ্গ, চাপা কৌতুক, রাগ, উদ্বেগ ফুটিয়ে সেই গল্প বলছে। অ্যানোরেক্সিয়া, ধর্ষণ, একাকিত্বের তিক্ত বিষয় হলেও গল্পটি কৌতুক, সহানুভূতি জাগায়। নাটকটি তরুণদের জন্য, প্রথম দিনেই অল্পবয়সি ইনফ্লুয়েন্সারদের ভিড়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

London Diary Jawaharlal Neheru Literature History
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE