ব্রিটেনের কথাসাহিত্য ও ননফিকশন উভয় ক্ষেত্রের শীর্ষ পুরস্কার জয়ের অনন্য নজির গড়ার সুযোগ সলমন রুশদির সামনে। মিডনাইট’স চিলড্রেন উপন্যাসের জন্য ১৯৮১-তে বুকার জিতেছেন। ৯৪-এ বুকারের ২৫ বছর উপলক্ষে বিশেষ পুরস্কার বুকার অব বুকারসও জিতেছেন। ননফিকশনের অন্যতম সেরা পুরস্কার বেইলি জিফর্ড, অর্থমূল্য আধ লাখ পাউন্ড। এ বছর তার প্রাথমিক তালিকায় আছেন রুশদি, নাইফ: মেডিটেশনস আফটার অ্যান অ্যাটেম্পটেড মার্ডার-এর জন্য। দু’বছর আগে তাঁর উপরে প্রায় জীবনঘাতী হামলার স্মৃতিচারণ বইটিতে। হামলার কারণে তাঁর একটি চোখ নষ্ট, বাঁ হাত পক্ষাঘাতগ্রস্ত। ৭৭ বছরের রুশদি সম্প্রতি ইংল্যান্ডের সাহিত্য সভায় এসেছিলেন। বুকারজয়ী লেখক ইয়ান ম্যাকইউয়ানকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সেই হামলার এত দিন পরে, অবশেষে দুঃস্বপ্নের ভিড় কমেছে। দর্শক-শ্রোতাদের বলেছেন, “আশ্চর্য বটে, তবে ঠিক আছি আমি। অনেক কিছুই ঠিক নেই, যেমন হাত আর চোখটা। সে সব বাদ দিলে আমি নাকি চিকিৎসাশাস্ত্রের মির্যাকল!” তুমুল হর্ষধ্বনির মধ্যে জানালেন, ১০০ বছর বাঁচার পূর্ণ সদিচ্ছা রয়েছে।
মৃত্যুঞ্জয়ী: সাহিত্যিক সলমন রুশদি।
পুলিশ হয়েও দুর্ভোগ!
টিভির পরিচিত মুখ ছিলেন। ভয়ঙ্কর জঙ্গি হানার পর দেশবাসীকে জানাতেন তথ্য, নির্দেশাদি। এশীয় বংশোদ্ভূত অভিজ্ঞতম পুলিশ আধিকারিক নীল বসু স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সন্ত্রাসদমন শাখার প্রাক্তন অধিকর্তা। তবুও বর্ণ ও জাতিগত কারণে তাঁকে নিয়মিত আটকানো ও তল্লাশি করা হয়। ২০২২-এ সহকারী নগরপাল হিসাবে অবসর নিয়েছেন নীল। আর উর্দি পরেন না। সম্প্রতি হিথরোয় তাঁর তল্লাশি হয়েছে। অপরাধ সংক্রান্ত আলোচনাসভায় বলেছেন, “গত ত্রিশ বছরে আমিই হয়তো একমাত্র ‘চিফ’, যাঁকে শৈশব, কৈশোর, প্রাপ্তবয়স্ক সব অবস্থাতেই নিয়মিত তল্লাশির সম্মুখীন হতে হয়েছে। হিথরো হয়ে ফেরার সময়ও নিশ্চয়ই আবার আটকানো হবে। মজার বিষয়, এই তল্লাশির নিয়মকানুনগুলো আমিই নির্ধারণ করতাম।” নীলের বাবা বাঙালি, মা ইংরেজ। ত্রিশ বছরে সাঙ্ঘাতিক সব অপরাধের সঙ্গে যুঝেছেন। ব্রিটেনের উপর আইসিসের ছায়া যখন দীর্ঘতম, সে সময় দায়িত্বে ছিলেন। তখন বরো মার্কেট, ওয়েস্টমিনস্টার ব্রিজ, ম্যানচেস্টার এরেনায় সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছিল।
রয়্যাল লজ অবরোধ
উইনসর রয়্যাল পার্কের অংশ দ্য রয়্যাল লজ। ৩০টি ঘর, চ্যাপেল লজ, ছ’টা লজ-কটেজ, মালির কটেজ নিয়ে সুবিশাল সম্পত্তি। কলঙ্কিত রাজকুমার অ্যান্ড্রুকে সেখান থেকে সরাতে চাপ বাড়াচ্ছেন রাজা চার্লস। অ্যান্ড্রুর প্রাক্তন স্ত্রী সারাও সেখানেই থাকেন। শিশুদের উপর যৌন অপরাধে অভিযুক্ত জেফ্রি এপস্টাইনের সঙ্গে বন্ধুত্ব, সপ্তদশী ভার্জিনিয়া জেফ্রির সঙ্গে যৌন ব্যভিচারের কারণে রাজদায়িত্ব থেকে অপসারিত অ্যান্ড্রু কটেজটি ছাড়তে নারাজ। সংবাদমাধ্যম পরিস্থিতিটিকে ‘রয়্যাল লজ অবরোধ’ বলছে। বিব্রত রাজা লজের নিরাপত্তা-বাবদ লাখো পাউন্ড থামানোর, অ্যান্ড্রুর ভাতা কমানোর, গরম রাখার ব্যবস্থা বন্ধের কথা ভাবছেন। অ্যান্ড্রুকে ফ্রগমোর কটেজে থাকতে দিতে পারেন রাজা। আমেরিকাবাসের আগে এখানে থাকতেন হ্যারি-মেগান। রানি ভিক্টোরিয়ার প্রিয় আবদুল করিমও এখানেই বসবাস করতেন। মৃত্যুর পর করিমকে লেখা ভিক্টোরিয়ার সব চিঠি কটেজের বাইরে পুড়িয়ে করিমকে ভারতে ফেরত পাঠানো হয়। কলঙ্কিত রাজপুত্রকে কি করিমের পুরনো বাড়িতে থাকতে হবে?
জনপ্রিয়: দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গের বিখ্যাত দৃশ্যে শাহরুখ-কাজল।
বলিউডি অপেরা
ভারতীয় সিনেমার মধ্যে সবচেয়ে বেশি দিন চলেছে দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে। ১৯৯৫-র মুক্তির পর এখনও মুম্বইয়ের প্রেক্ষাগৃহে চলছে ছবিটি। বলিউডের জনপ্রিয় এই রোম্যান্টিক ছবি ২০২৫-র মে থেকে মঞ্চায়িত হবে ম্যানচেস্টার অপেরা হাউসে। ব্রিটেনের প্রেক্ষাপটে আবার দেখা যাবে রাজ-সিমরনের কাহিনি, যা শাহরুখ-কাজলের জুটিকে অমরত্ব দিয়েছে। মূল ফিল্মটির পরিচালক আদিত্য চোপড়াই এই সঙ্গীত-নাটকটিরও পরিচালক। প্রোডাকশন সামলাবেন পুরস্কারজয়ীর দল। মিন গার্লস, লিগ্যালি ব্লন্ড প্রভৃতি পুরস্কারপ্রাপ্ত শো-খ্যাত নীল বেঞ্জামিন নাট্যরূপটির বই, গানের কথা লিখবেন। সঙ্গীতে বিশাল-শেখর। কোরিয়োগ্রাফির দায়িত্বে ফ্রোজ়েন, ক্যাট অন আ হট টিন রুফ-এর জন্য টোনি অ্যান্ড অলিভিয়ের পুরস্কারপ্রাপ্ত রব অ্যাশফোর্ড। ভারতীয় নৃত্যের নির্দেশক শ্রুতি মার্চেন্ট, যিনি লেডিজ় ভার্সাস রিকি বহেল, তাজ এক্সপ্রেস-এ কাজ করেছেন। এম জে দ্য মিউজ়িক্যাল, মুল্যাঁ রুজ-এর খ্যাতিসম্পন্ন, টোনি অ্যাওয়ার্ড বিজেতা ডেরেক ম্যাকলেন দৃশ্যপট সাজাবেন। এই প্রথম অপেরা হাউসটিতে মঞ্চস্থ হবে বলিউডি নাচগান। থিয়েটার ডিরেক্টর জানিয়েছেন, শো’টি ম্যানচেস্টারের দর্শকের হৃদয়ে ঝঙ্কার তুলবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)