Advertisement
E-Paper

এই দৃঢ় স্বর জরুরি ছিল

সোমবার নবান্ন সভাঘরে শিক্ষা বিভাগের পর্যালোচনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর পারদর্শিতাকে মুখ্যমন্ত্রী বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছেন, শিক্ষা বিভাগের নানা সূত্র অন্তত এমনই দাবি করছে।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৯
বৈঠকের প্রায় প্রতিটি পর্বেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, যেমনটা চেয়েছেন তেমন ভাবে আদৌ চলেনি শিক্ষা দফতর।—ফাইল চিত্র।

বৈঠকের প্রায় প্রতিটি পর্বেই মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দিলেন, যেমনটা চেয়েছেন তেমন ভাবে আদৌ চলেনি শিক্ষা দফতর।—ফাইল চিত্র।

সতর্কবার্তাগুলো বার বার উচ্চারিত হচ্ছিল। শিক্ষাক্ষেত্রে নৈরাজ্য সহ্য করা হবে না, এ বার্তা রাজ্য প্রশাসনের সর্বোচ্চ স্তর থেকে বার বার শোনা যাচ্ছিল। নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক হুঁশিয়ারিও শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু এত সতর্কবার্তা, এত হুঁশিয়ারি, এত শাসনেও যে কোনও কাজ হয়নি, সোমবার তা প্রায় খাতায়-কলমে স্পষ্ট হয়ে গেল। শিক্ষা দফতরের কাজকর্মের পরিস্থিতি বিশদে পর্যালোচনা করতে বৈঠকে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকের প্রায় প্রতিটি পর্বেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন, যেমনটা চেয়েছেন তেমন ভাবে আদৌ চলেনি শিক্ষা দফতর। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই অপারগতা নিয়ে শুধু অসন্তোষ প্রকাশ করেই মুখ্যমন্ত্রী থেমে গেলেন, এমন নয়। রাজ্যের শিক্ষা দফতরের গতিবিধির উপরে এ বার থেকে যে তিনি নিজে সরাসরি নজর রাখবেন, তাও মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই পদক্ষেপ কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর অকর্মণ্যতারই ইঙ্গিত দেয়।

সোমবার নবান্ন সভাঘরে শিক্ষা বিভাগের পর্যালোচনায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রীর পারদর্শিতাকে মুখ্যমন্ত্রী বড়সড় প্রশ্নচিহ্নের সামনে দাঁড় করিয়েছেন, শিক্ষা বিভাগের নানা সূত্র অন্তত এমনই দাবি করছে। মুখ্যমন্ত্রী অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে যে খবর আমরা পাচ্ছি, তা না পেলে কি আমরা জানতে পারতাম না যে, এ রাজ্যের শিক্ষাঙ্গন বর্তমানে কী রকম অরাজক পরিস্থিতির শিকার? কলেজে কলেজে ভর্তি নিয়ে তোলাবাজির অভিযোগ, ছাত্র রাজনীতির নামে বল্গাহীন বিশৃঙ্খলার ছবি, শিক্ষাঙ্গনে বহিরাগত হস্তক্ষেপ অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছনো— এ সব নিয়ে চর্চা গোটা রাজ্যেই চলছিল। সেই চর্চা যে মোটেই ইতিবাচক কিছু নয়, তা বলাই বাহুল্য। এই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটা বড়সড় বার্তা অত্যন্ত জরুরি ছিল। নবান্নে আয়োজিত পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী সম্ভবত সেই ধাক্কাটাই দেওয়ার চেষ্টা করলেন।

শিক্ষাঙ্গনে সমাজের ভবিষ্যত্ তৈরি হয়। আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম কতটা উজ্জ্বল হবে বা কতটা অনুজ্জ্বল তা অনেকাংশেই নির্ভর করে আমাদের শিক্ষাঙ্গনের পরিস্থিতির উপরে। তাই শিক্ষাঙ্গনে অপরিসীম বা অবিরত নৈরাজ্য কাঙ্খিত তো নয়ই, সমাজের জন্য তা কোনও সুলক্ষণও নয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি আমরা কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারছিলাম না। একটা জোরদার ধাক্কা আসা দরকার ছিল কোনও না কোনও উত্স থেকে। পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর কঠোর বার্তাটাই হল সেই জোরদার ধাক্কা। এই ধাক্কায় কিন্তু পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করা উচিত। আমরা আশা করব, এ রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছিল যে নৈরাজ্য, তাতে এ বার লাগাম পরানো যাবে। আমরা আশা করব, রাজ্যের সর্বোচ্চ প্রশাসকের এই কঠোর বার্তার পরে পরিস্থিতিতে ইতিবাচক বদল আসবে। আমাদের আশা বাস্তবে রূপ নেবে কিনা, তা দেখার জন্য অবশ্য আমাদের একটু অপেক্ষা করতেই হবে।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: রিভিউ বৈঠকে পার্থকে তুলোধোনা, অ্যাপের মাধ্যমে সরাসরি কলেজে যোগাযোগ রাখবেন মুখ্যমন্ত্রী

Newsletter Mamata Banerjee Partha Chatterjee Nabanna Academic Review Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy