Advertisement
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
National news

জীবনের অমোঘ মন্ত্রটা মনে করিয়ে দিলেন মরিয়াপ্পন

ঘিরে থাকা অসংখ্য নেতি, পারিপার্শ্বিকতায় নানা হতাশার ব্যঞ্জনা, ইতস্তত ছিটকে আসা একের পর এক বিষণ্ণতার খবরের মধ্যে এক একটা খবর খুব উজ্জ্বল আলোর মতো আসে। চার পাশে খুন-জখম, ধর্ষণ, অনৈতিকতা, বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনা পরম্পরা যখন আশাবাদী মনটাকে ক্লান্তিতে ভরে, ঠিক তখনই সুবর্ণ আলোক রেখা হয়ে দৃশ্যপটে ধরা দেন থঙ্গভেলু মরিয়াপ্পনদের মতো মানুষরা।

মরিয়াপ্পন। —ফাইল চিত্র।

মরিয়াপ্পন। —ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৩
Share: Save:

ঘিরে থাকা অসংখ্য নেতি, পারিপার্শ্বিকতায় নানা হতাশার ব্যঞ্জনা, ইতস্তত ছিটকে আসা একের পর এক বিষণ্ণতার খবরের মধ্যে এক একটা খবর খুব উজ্জ্বল আলোর মতো আসে। চার পাশে খুন-জখম, ধর্ষণ, অনৈতিকতা, বিশ্বাসভঙ্গের ঘটনা পরম্পরা যখন আশাবাদী মনটাকে ক্লান্তিতে ভরে, ঠিক তখনই সুবর্ণ আলোক রেখা হয়ে দৃশ্যপটে ধরা দেন থঙ্গভেলু মরিয়াপ্পনদের মতো মানুষরা। অজস্র প্রতিকূলতাকে পিছনে ফেলে দিয়ে মরিয়াপ্পন সোনার লাফ দিলেন রিওতে। একটা সোনালি ভোর আঁকা হয়ে গেল বঙ্গোপসাগরের বিস্তীর্ণ তটরেখায়।

কী অবিশ্বাস্য লড়াই!

হত দরিদ্র পরিবার। শৈশবেই দুর্ঘটনা কেড়ে নিল ডান পায়ের শক্তি। পরিবারকে পথে বসিয়ে অন্যত্র সংসার পাতলেন বাবা। তবুও লড়াই জারি। দোরে দোরে ফল ফেরি মায়ের, ইট ভাটায় মজদুরিও। সামনে এগনোর অদম্য জেদে তবুও কোথাও ভাঁটার টান নেই। বরং শিরায় শিরায় জীবনের জোয়ার। আর সেই জোয়ারে সওয়ার হয়েই প্যারালিম্পিক্সের মতো বিশ্বসেরা আসরে সোনার মেডেলটা থঙ্গভেলু মরিয়াপ্পনের গলায়!

এ কাহিনী যে শুধু চিত্রনাট্যের বিষয়বস্তু নয়, এ কাহিনীর বাস যে ঘোরতর বাস্তবের উপত্যকাতেই, তা প্রমাণ করার জন্যই কখনও কখনও এক-আধ জন আসেন। মরিয়াপ্পন সেই গোত্রেই পড়েন।

চার পাশ থেকে যখন ছেঁকে ধরে অনেক নেতি, অনেক নিরাশা, অনেক প্রতিকূলতা, একরাশ বিরক্তি, তখন মরিয়াপ্পনের মতো মানুষরাই পারেন আদ্যন্ত নঞর্থক একটা দৃশ্যপটকে লহমায় তুচ্ছতার আস্তাকুঁড়ে ছুড়ে ফেলে দিতে। মরিয়াপ্পনরাই আবার মনে করিয়ে দেন জীবনের সেই অমোঘ বীজমন্ত্র— চরৈবেতি। তামিলনাড়ুর এই তরুণের অসামান্য অর্জনটা কিন্তু শুধু তাঁর নিজের জন্য নয়। তাঁর এ অর্জন শুধু ভারতের জন্যও নয়। এ অর্জন গোটা মানবজাতির জন্য। এ গ্রহে জীবনের প্রবাহ শীর্ণ হয়ে পড়ে যে সব খাতে, সেখানে আচমকা বান ডাকানোর জন্য।

থঙ্গভেলু মরিয়াপ্পনদের অসামান্য অর্জন দেখে শুধু উচ্ছ্বাসে ভাসলেই কিন্তু দায় শেষ হয় না। আমাদের কিন্তু কিছু ফিরে দেওয়ারও থাকে। প্রথমত, জীবনের এই অনবদ্য জয়গান উৎসারিত হল যে কণ্ঠ থেকে, সে কণ্ঠকে যে ঘিরে রাখা উচিত যথোচিত আভূষণে, তা ভুললে চলবে না। দ্বিতীয়ত, অন্ধকার ঠেলে এগিয়ে আসার চেষ্টা করছে এমন আরও যে সব কাহিনী, রাষ্ট্রকেই আলো ফেলতে হবে তাদের উপর, কালি-কলমও জোগাতে হবে। যথোচিত পরিণতিতে পৌঁছে দিতে হবেই তাদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Mariyappan rio olympics gold news letter anjan bandopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy