Advertisement
E-Paper

বিচার নয়, শুধু সত্যিটা সামনে আনুক মিডিয়া

এই গণতন্ত্র তার প্রতিটি স্তম্ভের জন্য স্বাধীন বিচরণের যথেষ্ট অবকাশ রেখে দিয়েছে, শর্ত একটাই, সীমালঙ্ঘন অবাঞ্ছনীয়। মিডিয়া যদি আইন এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা পালন করতে শুরু করে, তাতে সামাজিক ভারসাম্যে একটা বিচলন ঘটে। গণতন্ত্রে সেটা কাঙ্খিত নয়।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০০:১৫
ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

জি ডি বিড়লা স্কুল হোক বা এম পি বিড়লা অথবা লখনউ শহরের উপান্ত বা হরিয়ানার প্রত্যন্ত গ্রাম— নিত্যনৈমিত্তিক এক সংবাদে বার বার চমকে উঠছি আমরা, আলোড়ন উঠছে সমাজের সব মহলে। আত্মীয়-অনাত্মীয় নির্বিশেষে, গুরু-শিষ্য ভেদ নিরপেক্ষে, পরিচিত-অপরিচিতের গণ্ডি ছাড়িয়ে যৌন নিপীড়ন বা ধর্ষণের ন্যক্কারজনক কলঙ্ক কথা উঠে আসছে বার বার। উঠে আসছে যেহেতু, অতএব চিরকালীন নিয়ম মেনে একাল-সেকালের দ্বৈরথও উপস্থিত হচ্ছে তত্ক্ষণাত্। যেমনটা হয়ে থাকে, সেকালের গোয়ালভরা গরু, পুকুরভরা মাছ আর আদিগন্ত ধানক্ষেতে নির্মলতার জয়ধ্বজায়। এবং তুলনায় একাল জুড়ে যেন পঙ্কিলতার চর্চা, পুকুরময় যেন শুধু ফলিডল, ক্ষেত জুড়ে কীটনাশকের আধুনিক বিষ, তার চেয়েও বড় কথা যেন সমাজমানসে শুধুই অবক্ষয়।

আরও পড়ুন: গণধর্ষিতা কিশোরী, শিশুর যৌনাঙ্গে লাঠি

বিদগ্ধ বাঙালি জানেন, রবীন্দ্রনাথ-শরত্চন্দ্র-বিভূতিভূষণ-মানিক-তারাশঙ্করের পাঠ আমাদের দেখিয়েছে পল্লী সমাজের কদর্য চিত্রটাকে। অর্থাত্ বোঝার বিষয় একটাই, বিরাট গেল গেল রব তোলার আগে জানা প্রয়োজন, এই ঘটনাগুলো প্রথম ঘটছে এমনটা নয়। অধুনা বহুল নিন্দিত মিডিয়া অন্তত এটুকু দাবি করতে পারে যে তারই জন্য ইদানীং এ সব বিষয়ে এত চর্চা, সমাজ জুড়ে এত আলোড়ন। যে কলঙ্ক গৃহাভ্যন্তর থেকে বেরিয়ে দিনের আলোর মুখ দেখত না, দেশের প্রত্যন্ত প্রান্ত থেকে সে খবরগুলোকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসছে মিডিয়া। অন্তত এটুকু বাহবা তার প্রাপ্য। এখানেই শেষ করলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না আমায়। কারণ, একই সঙ্গে এটাও বলা দরকার প্রকাশ্যে আনার পাশাপাশি এই ঘটনাগুলোকে কেন্দ্র করে যে ‘চুলচেরা’ বিশ্লেষণে মেতে উঠছে মিডিয়া, প্রায় বিচারকের আসনে বসে দণ্ড ঘোষণার প্রাক মুহূর্তে পৌঁছে যাওয়ার চেষ্টা চলছে ক্রমাগত— সহজ কথায় যাকে বলে মিডিয়া ট্রায়াল, তা এক কথায় নিন্দার্হ। এই গণতন্ত্র তার প্রতিটি স্তম্ভের জন্য স্বাধীন বিচরণের যথেষ্ট অবকাশ রেখে দিয়েছে, শর্ত একটাই, সীমালঙ্ঘন অবাঞ্ছনীয়। মিডিয়া যদি আইন এবং বিচার বিভাগের ভূমিকা পালন করতে শুরু করে, তাতে সামাজিক ভারসাম্যে একটা বিচলন ঘটে। গণতন্ত্রে সেটা কাঙ্খিত নয়।

আমরা মিডিয়া এ প্রসঙ্গে যেন সচেতন থাকি। কামনা এটুকুই।

Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় Newsletter Media Objectivity News Observation Media Trial Democracy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy