না। কিছুই বদলাল না। সব সেই আগের মতোই।
সন্ধ্যা নামতেই চতুর্দিকে শুধু কান-ফাটানো আওয়াজ। কখনও কখনও সেই আওয়াজ হৃদয়ও কাঁপিয়ে দিচ্ছে। রাত যত বাড়ছে, ততই শব্দাসুর প্রবল থেকে প্রবলতর ভাবে কেড়ে নিচ্ছে উত্সবের আনন্দকে। আলোর উত্সবে শব্দের এমন একটানা উল্লাস শুধু শহরকেই দমিয়ে দেয়নি, দিচ্ছে গোটা রাজ্যকে। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম— সব জায়গা থেকেই আসছে অস্বস্তির অভিযোগ। অথচ, ভ্রূক্ষেপ নেই আমাদের। দীপমালায় সাজানোর বদলে কর্কশ এবং বিকট শব্দেই ভরিয়ে তুলছি ভুবন।
কয়েক দিন ধরে পুলিশ-প্রশাসনের উদ্যোগ, বার্তা, নির্দেশকে ফাঁকা বুলির বেশি কিছু বলা যায় কি? নগরজীবনের স্বাভাবিক শ্বাস যে ভাবে উগ্র শব্দের কবলে ওষ্ঠাগত, তাতে আঁচ করাই যায়, গোটা রাজ্যের চিত্রটি। নিজেদের কথা ভাবছি না। বয়স্কদের কথা মাথায় রাখছি না। হার্টের সমস্যায় জর্জরিত কোনও বৃদ্ধের জীবনযাপন সম্পর্কে আন্দাজ না রেখেই ফাটিয়ে চলেছি শব্দবাজি। অসুস্থ প্রতিবেশীর জন্য এক ফোঁটা সহমর্মিতাও রেখে দিচ্ছি না। ভেবে দেখছি না, সদ্যোজাত কোনও শিশুর শব্দগ্রহণের সহ্যসীমার কথা। আর সেই সব পোষ্য, প্রতি নিয়ত যাদের আমরা ভালবাসি বলে দাবি করি, তারা যে ভয়ে সিঁটিয়ে যাচ্ছে, দেখছি কি? একটানা কর্কশ, বিকট, পিলে চমকানো আওয়াজেই মত্ত রেখেছি নিজেদের।
আর কবে শোধরাব? কবে হব সভ্য? অপেক্ষারও তো একটা শেষ থাকতে পারে!
দীপাবলিতে সেই আশার আলোটুকুরও দেখা পাওয়া ভার হয়ে উঠল।