Advertisement
E-Paper

সাফল্য

আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলাতেও যে ভারত সফল হতে পারে, তা আরও এক বার প্রমাণিত হয়ে গেল সাম্প্রতিক টমাস কাপ জয়ে।

শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২২ ০৫:২০

চেষ্টা করলে আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলাতেও যে ভারত সফল হতে পারে, তা আরও এক বার প্রমাণিত হয়ে গেল সাম্প্রতিক টমাস কাপ জয়ে। ব্যাডমিন্টনের বিশ্বকাপের সমতুল্য এই ঐতিহ্যবাহী প্রতিযোগিতার সাত দশকের লম্বা ইতিহাসে মাত্র পাঁচটি দেশের মধ্যে খেতাবটি এত দিন হাত বদল করে এসেছে— চিন, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া এবং ডেনমার্ক। সেই তালিকায় এ বার যুক্ত হল ভারতের নামও। ১৯৮০ সালে প্রকাশ পাড়ুকোন এবং ২০০১-এ পুল্লেলা গোপীচন্দর অল ইংল্যান্ড ওপেন ব্যাডমিন্টন চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের পরে সাম্প্রতিক কালে সাইনা নেহওয়াল ও পি ভি সিন্ধু আন্তর্জাতিক স্তরে সাফল্য পেয়েছিলেন। টমাস কাপের ফাইনালে ১৪ বারের চ্যাম্পিয়ন ইন্দোনেশিয়াকে হারিয়ে কিদম্বি শ্রীকান্ত, এইচ এস প্রণয়, লক্ষ্য সেন-রা আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে গেলেন।

তবে ব্যাডমিন্টনের এই সাফল্য নিয়ে অনেক উচ্ছ্বাস-আবেগ দেখা গেলেও, তা এই সত্যটাকে চাপা দিতে পারে না যে, আমাদের দেশে এখনও ক্রিকেটের তুলনায় অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগত খামতি রয়েছে। তার সঙ্গে রয়েছে স্বজনপোষণ, দুর্নীতি ও ক্ষুদ্র রাজনীতিও। টুর্নামেন্টে সম্ভবত ভারতীয় খেলোয়াড়রাই ছিলেন একমাত্র দল, যাঁরা আনুষ্ঠানিক স্পনসরের অভাবে সাদামাটা জার্সিতে খেলতে নামেন। প্রশ্ন তোলা যেতে পারে, আইপিএল-এর সুবাদে ক্রিকেটে আজ যেমন সমাজের প্রায় সব স্তর থেকে খেলোয়াড়রা বৃহত্তর পরিসরে নিজেদের প্রতিভা দেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন, অন্যান্য ক্ষেত্রেও পাচ্ছেন কি? দেশে প্রতিভার অভাব নেই। কিদম্বি শ্রীকান্ত বা লক্ষ্য সেন-রা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অলিম্পিক্সের গোল্ড মেডালিস্ট নীরজ চোপড়া, ভারত্তোলনে রুপো পদকজয়ী মিরাবাই চানু কিংবা কুস্তিতে ব্রোঞ্জ পদকজয়ী সাক্ষী মালিকরা-ও কেউ তেমন সচ্ছল পরিবার থেকে আসেননি। কিন্তু এঁরা সবাই নিজেদের অদম্য চেষ্টায় আর্থিক ও অন্যান্য বাধা অতিক্রম করেই সফল হয়েছেন। সরকারি বা প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা তাঁদের তেমন জোটেনি।

সাফল্যের পরে সরকারি এবং বেসরকারি তরফ থেকে আর্থিক ও অন্যান্য পুরস্কারের বন্যা বয়ে যায়। কিন্তু আসল পরিবর্তন তখনই আসবে, যখন সামাজিক ও আর্থিক পরিস্থিতি নির্বিশেষে ভারতীয় খেলোয়াড়রা উপযুক্ত ক্রীড়া পরিকাঠামোয় নিজেদের তৈরি করার সুযোগ পাবেন। তার জন্য চাই বর্তমান পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ, দেশের প্রান্তবর্তী অঞ্চলে আরও প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলা, বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিভা খোঁজার ক্ষেত্রে নানান কর্মসূচি এবং সংশ্লিষ্ট খেলাটাকে লাভজনক করে তোলা, যাতে অল্পবয়সিরাও এই ক্ষেত্রে আকৃষ্ট হতে পারে। বক্সিং, কুস্তি, অ্যাথলেটিক্স ও হকি-সহ বিশ্বের ক্রীড়া-পরিসরে ভারতীয় ছেলেমেয়েদের সাফল্যের ধারা ধীরে হলেও বেড়ে চলেছে। প্রথাগত চাকরির বাইরে খেলাধুলাকেও যে পেশা হিসেবে বেছে নেওয়া যায়, সেই বোধ ক্রমশ গড়ে উঠছে। বিসিসিআই এবং হকি ইন্ডিয়া যে আইপিএল এবং হকি ইন্ডিয়া লিগের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট খেলাগুলিকে একেবারে তৃণমূল স্তরে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ করেছে, ঠিক তেমনই চাই অন্যান্য খেলাতেও। টমাস কাপ জয় দিয়ে সেই উদ্যোগের সূচনা হোক।

Thomas Cup Indian Badminton team
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy