রাজ্যে সারা ক্ষণ কেবল নেই নেই রব। রাজ্য সরকারের কর্মীদের ডিএ বাড়ে না টাকার অভাবে। ঝাঁ চকচকে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল পরিকাঠামো নিয়ে পড়ে রয়েছে, চিকিৎসক, চিকিৎসাকর্মীর নিয়োগ হয় না টাকার অভাবে। জেলায় জেলায় বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলের ভবন সম্প্রসারণ হচ্ছে না স্রেফ টাকার অভাবে। টাকার অভাবে যে সেতুর মেরামতি হয় না তার উদাহরণ মাঝেরহাট সেতু।
অথচ এই রাজ্যেই অপচয়ের শেষ নেই। এবং অপচয়ের শুরু সরকারি স্তরে। ক্লাবের জন্য টাকা। দরাজ হাতে টাকা বিলোনো হয় উৎসবের জন্য। এ বার টাকা দেওয়া হয়েছে পুজোর জন্যও। শুধু পুজো কমিটিগুলির জন্য দশ হাজার টাকার অনুদানই নয়, এর থেকেও বেশি টাকা সরকার খরচ করছে পুজোর জন্য। রাস্তাঘাট মেরামত করে ঝকঝকে তকতকে করে রাখা, জঞ্জালমুক্ত রাখা, দর্শনার্থীদের জন্য শহরের বিভিন্ন স্থানে শৌচাগার নির্মাণ করা, ইত্যাদি কাজে যদি খরচ করা হত তা হলে এই লেখারই প্রয়োজন হত না। আসলে পুজোয় করদাতাদের কাছ থেকে আদায় করা টাকার একটা বড় অংশ স্রেফ জলে ফেলার ব্যবস্থা করা হয়। কোন যুক্তিতে, সে প্রশ্নের জবাব রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর কাছ থেকে মিলবে না। রেড রোডে বিসর্জনের কার্নিভালে কত টাকা খরচ হয় তার হিসেব পূর্ত দফতরের কাছে চাইলে তারা বলে অর্থ দফতরের কাছে ফাইল রয়েছে। তথ্য দফতর স্বরাষ্ট্র দফতরকে দেখিয়ে দেয়, আর স্বরাষ্ট্র দফতর মুখ্যমন্ত্রীর দফতরকে।
এতেই শেষ নয়। রয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে পুরস্কারের ব্যবস্থা। বিশ্ববাংলার পুরস্কার। কলকাতার পুজো, জেলার পুজোকে পুরস্কারের ব্যবস্থা। তাতে বিচারকদের ঘুরে বেড়ানো, খাওয়াদাওয়ার তো একটা বড় খরচ আছেই, তার সঙ্গে রয়েছে পঞ্চাশ হাজার টাকা মূল্যের পুরস্কার। কলকাতা পুরসভা দেয় পুরশ্রী পুরস্কার। তার ব্যয়ভার মেটায় একটি বেসরকারি সংস্থা। এই খাতে ২৫ লক্ষ টাকা দিয়ে যে সংস্থাটি পুরসভাকে সাহায্য করে, তার বিনিময়ে পুরসভার কাছে তারা কোনও সুযোগ নেয় কি না, নাগরিকরা সে কথা জানেন না।