ফাইল চিত্র।
কয়েক দশকের সম্পর্ক তাঁদের। কংগ্রেস ছেড়েছিলেন, কিন্তু সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে সম্পর্কে ছেদ পড়েনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই নিবিড় সম্পর্কও প্রবল টানাপড়েনের সাক্ষী হয়েছিল এক বছর আগে, যখন বাংলার রাজনৈতিক রণাঙ্গনে বামেদের হাত ধরেছিল সনিয়া গাঁধীর দল। সম্পর্কের উষ্ণতার সুবাদেই হোক বা রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতার কারণে, সঙ্কট দীর্ঘস্থায়ী হল না। সনিয়া গাঁধী এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবার মিলিত হলেন বৈঠকে। দেশ জুড়ে বিজেপির ক্রমাগত উত্থানের প্রেক্ষিতে কংগ্রেস সভানেত্রীর সঙ্গে তৃণমূলনেত্রীর এই পুনর্মিলন বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
বিজেপির ‘বিপদ’ থেকে বাঁচতে বিরোধী শিবিরের অনেকেই এই মুহূর্তে ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। এক দিকে বিজেপির ক্রমবর্ধমান দাপট, অন্য দিকে বিরোধী শিবিরের একাধিক মহারথীকে ঘিরে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার ‘অতি’-সক্রিয়তা— নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম বিরোধী রাজনীতির। এমন এক সন্ধিক্ষণে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী বাছাই নিয়ে আলোচনা করতে দিল্লি গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে একান্তে বৈঠক করলেন, বিরোধীদের মধ্যে ঐকমত্যের ডাক দিলেন। উপলক্ষ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হলেও মূল লক্ষ্য যে এক বৃহত্তর বিরোধী ঐক্য, তা নিয়ে সংশয় নেই।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে ঘিরে বৃহত্তর ঐকমত্য গড়ে তোলার লক্ষ্যে আগের বারও সক্রিয় হয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সফল হননি। কিন্তু আগের বারের ভুলটা এ বার আর করলেন না, রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নিজের পছন্দের কোনও নাম আগাম ভাসিয়ে দিলেন না। অনেক স্থিতধী, অনেক পরিণত ভঙ্গিতে দেশের বিরোধী রাজনীতির প্রধান মুখের সঙ্গে বৈঠক করলেন, বৃহত্তর বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিলেন, আলোচনার মাধ্যমে সর্বসম্মত নাম তুলে আনার পক্ষে সওয়াল করলেন।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে রাজনৈতিক সর্বসম্মতি তৈরি হবে, নাকি বিরোধীরা কোনও সর্মসম্মত প্রার্থী দেবেন, নাকি অন্যতর কোনও সমীকরণ গড়ে উঠবে, তার উত্তর সময়ই দেবে। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদাধিকারীর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জাতীয় রাজনীতির চলতি প্রবাহটাকে কিছুটা হলেও বদলে দেওয়ার একটা মরিয়া চেষ্টা যে শুরু হয়ে গিয়েছে, সে ইঙ্গিত স্পষ্ট ভাবেই পাওয়া যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy