Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Editorial news

ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন

যে অভিযোগগুলে ওঠে, সেগুলো যে সবৈব মিথ্যা, এমন কথা বলা কঠিন। গণতন্ত্রের অপরিহার্য এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল বিরোধী স্বরের উপযুক্ত মর্যাদা।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৯ ০০:৫৪
Share: Save:

সাড়ে চার দশক কেটে যাওয়ার পথে। কিন্তু এখনও ভারত ভুলতে পারেনি সেই তারিখটার কথা। ১৯৭৫ সালের ২৫ জুন জরুরি অবস্থা ঘোষিত হয়েছিল দেশে। বছর দুয়েকের সেই পর্ব যাঁরা দেখেছিলেন, সেই দিনগুলোর সাক্ষী যাঁরা হয়েছিলেন, তাঁরা সবচেয়ে ভাল জানেন গণতান্ত্রিক পরিসর সঙ্কুচিত হয়ে গেলে কী হয়। তাই ২০১৯ সালের ২৫ জুনেও সেই কুখ্যাত নির্দেশনামার কথা স্মরণ করিয়ে দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে ভারতের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত অনেকেই। তার পরেও যে এ দেশে বা দেশের নানা প্রান্তে গণতন্ত্রের হত্যালীলা সংঘটিত অভিযোগ ওঠে, সেটাই বিস্ময়কর।

যে অভিযোগগুলে ওঠে, সেগুলো যে সবৈব মিথ্যা, এমন কথা বলা কঠিন। গণতন্ত্রের অপরিহার্য এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল বিরোধী স্বরের উপযুক্ত মর্যাদা। নানা অগণতান্ত্রিক আক্রমণের মাধ্যমে সেই বিরোধী স্বরকে ক্রমশ দুর্বল ও ক্ষীণ করে দেওয়া হয়েছে গত পাঁচ বছরে— এমন অভিযোগ বারবার উঠেছে। কেউ বলেছেন, অঘোষিত জরুরি অবস্থা, কেউ বলেছেন সুপার ইমারজেন্সি। আবার যাঁরা এইসব বলেছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে থাকা প্রান্তগুলিতে গণতন্ত্রের শ্বাসরোধ করে দেওয়ার অভিযোগ অনবরত উঠতে থেকেছে। দুর্ভাগ্যজনক বৈপরীত্যটা এখানেই। গণতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা সবাই বোঝেন। গণতন্ত্র হত্যার উপসর্গগুলিকেও প্রত্যেকেই চেনেন। তা সত্ত্বেও প্রায় প্রত্যেকেই পরস্পরের বিরুদ্ধে একই দুষ্কর্মে সামিল হয়ে যান। অভিযোগ অন্তত তেমনই ওঠে।

আবার বলি, সাড়ে চার দশক পেরিয়ে এসেও জরুরি অবস্থার সময়টাকে ভুলতে পারেনি ভারত। মনে রেখেছে নেতিবাচক আলোকে। পরিস্থিতি কতটা দুঃসহ হলে এইরকম হওয়া সম্ভব বুঝতে অসুবিধা হয় না। কিন্তু সব বুঝেও যাঁরা সঙ্কীর্ণ স্বার্থে গণতন্ত্রের মূলে নিত্য কুঠারাঘাত করতে থাকেন, মুখে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার বাণী রেখেও প্রতি মুহূর্তে তাকে দুর্বল করার চেষ্টায় থাকেন, তাঁরা কিন্তু বিপজ্জনক। মনে রাখা দরকার ঘোষিত জরুরি অবস্থাও এ দেশের গণতান্ত্রিক মানসিক গঠনকে ঢাক্কা দিতে পারেনি। সুতরাং অঘোষিত ভাবে সেরকম কোনও চেষ্টাও এ দেশে বা দেশের কোনও প্রান্তে সফল হবে না। অন্যায় বা ত্রুটি যদি হয়ে থাকে কোথাও কারও তরফে, তা হলে শুধরে নেওয়া জরুরি। না হলে এ ভাবেই সাড়ে চার দশক বা পাঁচ দশক বা আরও অনেক বেশি দশক ধরে নেতির আলোকেই মনে রাখবে ভারত।

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: গত পাঁচ বছর ধরে দেশে সুপার ইমার্জেন্সি চলছে, মোদীকে ফের আক্রমণ মমতার

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE