-বিশ্ব স্কুল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপে এ বার জায়গা করে নিল বাংলার চার কন্যা। এরা এই রাজ্যের সরকারি স্কুলের পড়ুয়া। এ দের মধ্যে দু’জন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে আর দু’জনের মধ্যে এক জন অষ্টম ও আর এক জন নবম শ্রেণিতে পড়ে।
ইন্টারন্যাশনাল স্কুল স্পোর্টস ফেডারেশন (আইএসএসএফ) -এর পরিচালনায় অনূর্ধ্ব ১৫ বালিকাদের ওয়ার্ল্ড স্কুল ভলিবল চ্যাম্পিয়নশিপ ৪ থেকে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত চিনের শাংলুও-তে অনুষ্ঠিত হবে। ১৪ জনের ভারতীয় স্কুল ভলিবল দলের প্রতিনিধিত্ব করছে বাংলার চার কন্যা। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অভিষিক্তা পাল (নবম শ্রেণির ছাত্রী ), দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার শরণ্যা ঘোষ,(সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী ),হুগলি জেলার রূপকথা ঘোষ (সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী) ও সহেলি সামন্ত (অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী )।
আরও পড়ুন:
খেলোয়াড় হতে গেলে প্রশিক্ষণ ও সরঞ্জামের জন্য লাগে টাকা। কিন্তু এই চার জন কন্যার মধ্যে প্রায় প্রত্যেকেরই আর্থিক সমস্যা রয়েছে। আর সমস্যা রয়েছে প্রশিক্ষণের। অনেক সময় বাইরে যেতে হয় সে জন্য ক্ষতি হয় পঠন-পাঠনের। অভিষিক্তা পাল থাকে বরাহনগরে কিন্তু প্রশিক্ষণের এর জন্য যেতে হয় মগরাহাট যা তার জন্য খরচাসাপেক্ষ। এ ছাড়াও প্রশিক্ষণের জন্য লাগে দামি জুতো যা চলে মাত্র দুই থেকে তিন মাস। রয়েছে কাঁসা পিতলের পারিবারিক দোকান। ওর মা সোনালী পাল বলেন, ‘‘আমাদের মতো নিম্ন মধ্যবিত্তদের ঘরের ছেলেমেয়েদের খেলায় মনোযোগী করতে প্রয়োজন আর্থিক সাহায্য। এ ছাড়া স্কুলের তরফ থেকে দরকার প্রয়োজনীয় মানসিক সাহায্য। সরকার যদি এগিয়ে আসে আরও বেশি সুবিধা হয়।’’
গত বছর জাতীয় স্কুল গেমসে অনূর্ধ্ব ১৪ বছর ভলিবল প্রতিযোগিতায় বাংলা দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। ঐ দলের ৬ জন খেলোয়াড়কে এই ওয়ার্ল্ড স্কুল ভলিবল প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত করা হয়। এই চার কন্যা ছাড়াও প্রাথমিক পর্বের এই ভারতীয় ভলিবল দলে উত্তর ২৪ পরগনার আদ্রিকা দাস ও হুগলির পূজা রাজবংশীও ছিল।
২৪ শে অক্টোবর থেকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঝাড়খণ্ডের রাঁচীতে ভারতীয় জাতীয় ভলিবল দলের আবাসিক শিবির থেকে চূড়ান্ত ১৪ জনের দল নির্বাচন করা হয়। এই ১৪ জনের ভারতীয় ভলিবল দলের বাংলার চার ছাত্রী জায়গা করে নেয়।
শরণ্যা ঘোষের মা বলেন, ‘‘আমার মেয়ে একটা ভাল জায়গা করে নিয়েছে, এটা খুব গর্বের বিষয়। আমাদের ডায়মন্ড হারবারে খেলার উপযুক্ত পরিকাঠামো নেই। তার ফলে বারুইপুরে গিয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। তার ফলে স্কুল রোজ যেতে পারে না। কাছাকাছি পরিকাঠামো থাকলে এতদূর যেতে হত না। খরচ ও সময় অনেকটা বাঁচতো।’’
অন্য পড়ুয়াদের অভিভাবকদের অভিযোগ, সিবিএসই-র মতো মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প পরীক্ষার সংস্থান রাখা উচিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করবার জন্য।