রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি এবং সরকার অনুমোদিত স্কুলগুলিকে লাইব্রেরি গ্রান্ট দেওয়া নিয়ে বৈষম্যের অভিযোগ উঠল। সম্প্রতি রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে রাজ্যের ২,০০০-এরও বেশি স্কুলগুলিকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক।
অনুদানের তালিকায় রাজ্যের সেই সব স্কুলের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যেখানে পড়ুয়ার সংখ্যা ০ থেকে ৩,০০০-এর মধ্যে। অথচ নিয়ম অনুযায়ী, লাইব্রেরি গ্রান্ট সমস্ত স্কুলের জন্যই বরাদ্দ হওয়ার কথা। অভিযোগ, যে সমস্ত স্কুলে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী রয়েছে, তারা এই অনুদান পায়নি।
এ প্রসঙ্গে নারায়ণদাস বাঙুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “কিসের ভিত্তিতে অনুদান দেওয়া হয়, তা আমার জানা নেই। যেখানে অত্যন্ত প্রয়োজন, সেখানে আগে অর্থ সাহায্য করা উচিত। অথচ ২০২২-র পর থেকে ল্যাবরেটরি হোক বা লাইব্রেরি, কোনও কিছুরই অনুদান আমরা পাইনি।”
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রমে একাধিক নতুন বিষয় সংযুক্ত হয়েছে। তার জন্য ল্যাবরেটরি এবং লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত পাঠসামগ্রী থাকা আবশ্যক। অথচ সরকারের তরফে বছরের পর বছর তেমন কোনও অনুদান না মেলায় বিপাকে পড়েছে বহু স্কুলই। স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, মোট ২,০৬৬টি স্কুলকে ২০ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা লাইব্রেরি গ্রান্ট হিসাবে বরাদ্দ করা হয়েছে।
পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধানশিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজার অভিযোগ, সরকার বাছাই করে টাকা দিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, “১০০ জন শিক্ষার্থী রয়েছে এমন স্কুলকে আর্থিক সাহায্য করা হচ্ছে। অথচ, বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের নিয়ে যে সমস্ত স্কুলগুলি চলছে, তাদের কেন সাহায্য করা হচ্ছে না? তার কোনও সদুত্তর নেই।”
তবে এই সমস্যা শুধু কলকাতার স্কুলগুলির নয়। ব্যারাকপুর, ভাটপাড়া, পানিহাটি, কিংবা বর্ধমান পুরসভা এলাকার বেশ কিছু স্কুলও লাইব্রেরি গ্রান্টের তালিকায় জায়গা পায়নি। এই বিষয়ে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল সরকারের অনুদানের বিষয়টিকে সমর্থন জানালেও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছেন। তাঁরা দাবি, বড় বড় স্কুলগুলিতে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি হওয়া সত্ত্বেও তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। আর কম শিক্ষার্থী রয়েছে, এমন স্কুলগুলিকে ১ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হচ্ছে।