জাতীয় শিক্ষানীতিতে শিক্ষাব্যবস্থায় একাধিক পরিবর্তনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। নানাবিধ বদলের মাধ্যমে পড়ুয়াদের জন্য পেশাপ্রবেশের পথ সুগম করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে। সে কথা মাথায় রেখেই এ বার উদ্যোগী কলকাতার একটি কলেজ।
সম্প্রতি কলকাতার সম্মিলনী মহাবিদ্যালয়ের তরফে একটি ‘ক্যাম্পাস ড্রাইভ’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। যেখানে অংশগ্রহণ করেছেন কলেজের একাধিক পড়ুয়া, এমনকি প্রাক্তনীরাও। উল্লেখযোগ্য বিষয়, এই ‘ক্যাম্পাস ড্রাইভ’ বা ‘জব ফেয়ার’-টি শুধু নিজের কলেজের পড়ুয়াদের জন্য সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি। এতে যোগদানের সুযোগ পান রাজ্যের অন্যান্য কলেজের পড়ুয়ারাও।
কলেজের কেরিয়ার গাইডেন্স অ্যান্ড প্লেসমেন্ট সেল যাদবপুরের একটি বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে একযোগে এই ‘ক্যাম্পাস ড্রাইভ’-এর আয়োজন করে। প্লেসমেন্ট সেলের কোঅর্ডিনেটার সঙ্গীতা দে সরকার বলেন, “এতে কলেজের বিভিন্ন কোর্সে ষষ্ঠ সেমেস্টারে পাঠরত পড়ুয়াদের পাশাপাশি বেশ কিছু প্রাক্তনীও অংশগ্রহণ করেছিলেন।” একই সঙ্গে এতে ডাক পেয়েছিল রাজ্যের আর ৩০টি কলেজ।
আরও পড়ুন:
কলেজের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার জানা বলেন, “গত কয়েক বছরে এই কলেজের সঙ্গে অন্য যে সমস্ত কলেজের মধ্যে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে, তারা এই উদ্যোগে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ পায়। এর মধ্যে শুধু কলকাতা বা দক্ষিণ ২৪ পরগনার কলেজগুলি নয়, অংশ নেয় উত্তর ২৪ পরগনার বেশ কিছু কলেজও।”
‘ক্যাম্পাস ড্রাইভ’-এর জন্য সম্মিলনী কলেজের মোট ১৪৫ জন পড়ুয়া নাম নথিভুক্ত করেন। এর মধ্যে ১৩৫ জন বর্তমানে কলেজে পাঠরত এবং ১০ জন প্রাক্তনী। বাকি ৩১ জন পড়ুয়া অংশ নেন রায়দীঘি কলেজ, বারুইপুর কলেজ, বঙ্গবাসী কলেজ, পুরাস কানপুর হরিদাস নন্দী মহাবিদ্যালয়, ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজ, বাগনান কলেজ, দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ কলেজ, রানী বিড়লা গার্লস কলেজ-সহ অন্যান্য কলেজ থেকে। তবে নথিভুক্ত পড়ুয়াদের মধ্যে ১০০ জন ওই দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন।
যে সমস্ত বেসরকারি সংস্থা এই ‘ক্যাম্পাস ড্রাইভ’-এ অংশ নেয়, সেই তালিকায় রয়েছে ট্যালেন্ট হাব জব্স, বজাজ অ্যালায়েনজ়, ম্যানপাওয়ার গ্রুপ, এমপকেট, সাদারল্যান্ড, তুলসি জব্স এবং সিআইআই ট্রেনিং সেন্টার-এর মতো সাতটি সংস্থা।
কলেজের প্লেসমেন্ট সেলের কোঅর্ডিনেটর জানান, তাঁদের কলেজ শুধু নিজের কলেজের ছাত্রছাত্রীদের জন্যই নয়, অন্যান্য কলেজের পড়ুয়াদের চাকরির সংস্থানের জন্যও বরাবর অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়া, পেশাজগতের জন্য পড়ুয়াদের প্রস্তুত করতে সারা বছরই কমিউনিকেটিভ ইংলিশ, এমএস অফিস-এর মতো নানা বৃত্তিমূলক এবং পেশাদারি কোর্সেরও আয়োজন করে।
একই মত কলেজের অধ্যক্ষেরও। তিনি জানান, কোভিড পরবর্তী সময় থেকেই কলেজের তরফে পড়ুয়াদের স্বার্থে তাঁদের চাকরির সুযোগ বৃদ্ধির জন্য এ রকম উদ্যোগ নেওয়া হয়। পড়ুয়ারাও একই ভাবে উৎসাহ দেখান বলে তাঁর মত। তাঁর কথায়, “ইঞ্জিনিয়ারিং বা ম্যানেজমেন্টের কলেজ না হয়েও সাধারণ স্নাতক ডিগ্রির ছাত্রছাত্রীদের জন্য সম্মিলনী মহাবিদ্যালয় বিগত কয়েক বছর ধরে ইন্ ক্যাম্পাস প্লেসমেন্ট ড্রাইভ এর আয়োজন করে আসছে। উদ্দেশ্য, অন্যান্য বিভাগের পড়ুয়াদেরও জীবনে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া। পাশাপাশি, কলেজের এই উদ্যোগ তাঁদেরকে পড়াশোনার জন্যও বেশ উৎসাহিত করে বলে আমার ধারণা।”