এক দিকে আর্থিক টানাটানির সংসার। অন্য দিকে, প্রতিনিয়ত জুটেছে লাঞ্ছনা এবং অবহেলা। কিন্তু তা দমিয়ে রাখতে পারেনি ওড়িশার মালকানগিরি জেলার বিলুপ্তপ্রায় উপজাতি গোষ্ঠীর কন্যাকে। এই প্রথম ওই গোষ্ঠীর কোনও সদস্য চিকিৎসক হওয়ার প্রথম ধাপ পেরিয়েছেন। উত্তীর্ণ হয়েছেন মেডিক্যালের জাতীয় স্তরের যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষা ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট আন্ডারগ্র্যাজুয়েট (নিট ইউজি)-এ।
চম্পা রাসপেড়া, ওড়িশার আমলিবেড়া গ্রামের করুকোন্ডা ব্লকের বাসিন্দা। দিদায়ী উপজাতি গোষ্ঠীর এই প্রথম কোনও সদস্য সর্বভারতীয় স্তরের প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। পিটিআই সূত্রে খবর, ওড়িশার যে ১৩টি জনগোষ্ঠী ‘পার্টিকুলারি ভালনারেবেল ট্রাইবাল গ্রুপ’ (পিভিটিজি) বা বিলুপ্তপ্রায় উপজাতিগোষ্ঠী রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম দিদায়ী গোষ্ঠী। যাঁরা মূলত ক্ষুদ্র চাষ, বন থেকে পাতা, কাঠ সংগ্রহের কাজের সঙ্গে যুক্ত। সামাজিক ঝড়ঝাপটা সামলে চম্পার এই ঐতিহাসিক সাফল্যে গর্বিত সম্প্রদায়ের সকলেই।
আরও পড়ুন:
বাবা প্রান্তিক চাষি, মা ঘর সামলান। নিত্য অনটনের পরিবারে সাত ভাইবোনের সঙ্গে বেড়ে ওঠা চম্পার। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন একটি সরকারি আবাসিক স্কুলে। ২০২১-এ দ্বাদশের পরীক্ষা দেন বিজ্ঞান শাখায়। কিন্তু তার পর বিজ্ঞানে স্নাতকে ভর্তি হয়েও আর্থিক সঙ্কটের জন্য পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন। তবু তাঁর চিকিৎসক হওয়ার ইচ্ছেয় ভাটা পড়েনি। এর পর একজন শিক্ষকের উৎসাহে ভর্তি হন নিট-এর প্রস্তুতির ক্লাসে। প্রথম বারের চেষ্টাতেই সফল হন চম্পা। সুযোগ পেয়েছেন ফকির মোহন মেডিক্যাল কলেজে এমবিবিএস পড়ার।
তাঁর সাফল্যকে সাধুবাদ জানিয়েছে ওডিশা সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মোহনচরণ মাঝি বলেন, “চম্পার সাফল্য সকলের জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ওড়িশার আদিবাসী কন্যার এই ফলাফল আরও অনেককে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নে আরও উৎসাহ জোগাবে।”