ভুয়ো খবরে ছেয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। অসত্যের মোড়ক খুলে সত্য যাচাই করে নেওয়া মুখের কথা নয়। তাই সংবাদের নেপথ্য থাকা তথ্য নিয়ে চর্চা করার আগ্রহ, বিপুল তথ্যের ভাণ্ডার থেকে সঠিকটা বেছে নেওয়ার নীতিতে বিশ্বাসী হলে ডেটা জার্নালিজ়ম হতে পারে উচ্চশিক্ষার বিষয়। যাঁরা দ্বাদশের পর সাংবাদিকতা নিয়ে পড়াশোনা শুরু করতে চাইছেন, তাঁরা এই বিষয়টি কী ভাবে শিখবেন, রইল তার সুলুক সন্ধান।
বিষয়টি কী?
ডেটা জার্নালিজ়ম-এর সাহায্য তথ্যের ভাণ্ডার থেকে মূল সত্য খুঁজে বের করা এবং পরিসংখ্যান ভিত্তিক খবর পরিবেশন করা করাই লক্ষ্য। এই ধরনের সংবাদের চল সাধারণত রাজনীতি, শিক্ষা, অর্থনীতি এবং তদন্ত নির্ভর ঘটনায় দেখা যায়।
মূলত তথ্যের সূত্র, তা ঝাড়াই বাছাই করে বিশ্লেষণ করার জন্য বিশেষ ‘টুল’ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওই সমস্ত ‘টুল’ ব্যবহার করা এবং সাংবাদিকতার নীতি অনুযায়ী কোন ক্ষেত্রে কতটা তথ্যের প্রয়োজন— তা ডেটা জার্নালিজ়মের মাধ্যমে শেখার সুযোগ রয়েছে।
মূলত তথ্যের সূত্র, তা ঝাড়াই বাছাই করে বিশ্লেষণ করার জন্য বিশেষ টুল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ওই সমস্ত টুল ব্যবহার করা এবং সাংবাদিকতার নীতি অনুযায়ী কোন ক্ষেত্রে কতটা তথ্যের প্রয়োজন— তা ডেটা জার্নালিজ়ম থেকে শেখার সুযোগ মেলে। একই সঙ্গে ভুল তথ্য কী ভাবে চিহ্নিত করতে হয়, কী ভাবে তার সত্যতা যাচাই করা যেতে পারে— তা-ও জানা সম্ভব।
পেশা প্রবেশ:
এই বিষয়ে উচ্চশিক্ষা থাকলে ডেটা জার্নালিস্ট, নিউজরুম ডেটা অ্যানালিস্ট, ভিস্যুয়াল জার্নালিস্ট, ফ্যাক্ট চেকার— এই সমস্ত পদে চাকরির সুযোগ রয়েছে। নিযুক্তদের শুধুমাত্র সাংবাদিকতার কাজটিতেই দক্ষ হতে হয়, এমনটা নয়। কোনও তথ্য যাচাই থেকে শুরু করে তা বিশ্লেষণ করা— সবই করে থাকেন তাঁরা। বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি খবরের চ্যানেল, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টালগুলিতে এমন বিশেষজ্ঞের চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট।
কী ধরনের কাজ করতে হয়?
ডেটা জার্নালিজ়ম বিশেষজ্ঞদের যে কোনও ঘটনা সম্পর্কে সব ধরনের তথ্য সংগ্রহ করতে হয়। প্রাসঙ্গিকতা অনুযায়ী, কোন তথ্য কেমন ভাবে ব্যবহার করতে হবে, কোনও তথ্য নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা যাচাই করে নেওয়া, সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে খবরের করার বিষয়ে নজর রাখতে হয়।
ডিজিটাল মিডিয়ার যুগে এই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। তবে, সংবাদমাধ্যম ছাড়াও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, পরামর্শদাতা সংস্থাতেও এমন বিশেষজ্ঞদের নিয়মিত ভাবে নিয়োগ করা হয়ে থাকে। এই সমস্ত সংস্থায় ভুয়ো তথ্য চিহ্নিত করা এবং সঠিক তথ্য পেশ করার দায়িত্ব সামলান তাঁরা।
বেতন:
ডেটা জার্নালিস্টরা শুরুতেই স্থায়ী চাকরির সুযোগ পাবেন এমন না-ও হতে পারে। অস্থায়ী পদে বা ট্রেনি হিসাবে যাঁরা যোগদান করেন, তাঁরা মাসে ৩০,০০০ টাকা থেকে ৩৫,০০০ টাকা বেতন হিসাবে পেয়ে থাকেন। পরে বছরে ৫০,০০০ থেকে ১,০০,০০০ টাকা বেতনক্রমেও স্থায়ী চাকরির সুযোগ মেলে। আন্তর্জাতিক স্তরের সংস্থায় ওই বেতনক্রম আরও বেশি হয়ে থাকে।
পড়াশোনার সুযোগ:
- দ্বাদশের পর এই বিষয়টি নিয়ে সরাসরি পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে। অনলাইনে বিভিন্ন কোর্স করানো হয়ে থাকে। যদিও দেশের কোনও সরকারি বা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওই বিষয়টি পড়ানো হয় না।
- সাংবাদিকতা এবং গণজ্ঞাপনে স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর ওই বিষয় নিয়ে ডিপ্লোমা করে নেওয়া যেতে পারে। দেশের বেসরকারি কিছু প্রতিষ্ঠান ওই বিষয়ে ডিপ্লোমা বা সার্টিফিকেট কোর্স করিয়ে থাকে।
- এ ছাড়াও ডেটা বা ডিজিটাল মিডিয়া, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন উইথ অ্যানালিটিক্স-এর মতো বিষয়ে নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পরও ওই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে।