২২ মে থেকে ৩০ মে পর্যন্ত মাধ্যমিকের স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর নম্বর অনলাইনে আপলোড করতে হবে। এই বিষয়ে একটি বিশদ বিজ্ঞপ্তি ২১ মে প্রকাশিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে। আর এই বিজ্ঞপ্তিকে ঘিরেই বাড়ছে উদ্বেগ। সাধারণত স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর ফল প্রকাশিত হওয়ার পর মেধাতালিকা তো বটেই, কিছু কিছু ক্ষেত্রে সার্বিক রেজ়াল্টেও পরিবর্তন হতে দেখা গিয়েছে। তাই ওই ফল প্রকাশিত হওয়ার পর একাদশ শ্রেণির ভর্তি প্রক্রিয়াতেও বিশেষ প্রভাব পড়তে পারে বলেই আশঙ্কা শিক্ষামহলের একাংশের।
প্রসঙ্গত, ১৬ মে উচ্চ মাধ্যমিকের তৎকাল পরিষেবায় স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের আগেই সাধারণ ভাবে স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর ফলাফলও ঘোষণা করা হবে। অথচ মাধ্যমিকের ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার ২১ দিন অতিক্রান্ত হয়ে যাওয়ার পরও স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর ফল প্রকাশের কোনও আভাসই মেলেনি।
আরও পড়ুন:
পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার এত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর স্ক্রুটিনি ও রিভিউ-এর নম্বর অনলাইনে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় প্রশ্ন উঠছে শিক্ষামহলে। এ প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তুলনায় পর্ষদ বোর্ড তো অনেক পিছিয়ে আছে দেখছি। যেখানে উচ্চ মাধ্যমিকের অনলাইন পোস্ট পাবলিকেশেন রিভিউ (পিপিআর) এবং পোস্ট পাবলিকেশন স্ক্রুটিনি (পিপিএস) প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে, সেখানে পর্ষদ এত দিনে সেই প্রক্রিয়াকরণ শুরু করল।”
৮ মে ফল প্রকাশ হওয়ার পরও দ্রুত তৎকাল পরিষেবায় শিক্ষা সংসদের রেজ়াল্ট প্রকাশ প্রসঙ্গে পর্ষদের ভূমিকা নিয়ে সরব মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার। তিনি বলেন, “যেখানে উচ্চ মাধ্যমিকের পিপিআর-পিপিএস প্রথম ধাপের ফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে, সেখানে পর্ষদের তরফে এতটা দেরি করে প্রক্রিয়াকরণ শুরু হচ্ছে, এমনটা কাম্য নয়। গুরুত্ব অনুযায়ী আরও দ্রুততার সঙ্গে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত ছিল।”
ইতিমধ্যেই রাজ্যের বেশির ভাগ স্কুলে একাদশে ভর্তি প্রক্রিয়া প্রায় শেষের পথে। মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির জেলা সম্পাদক এই বিষয়টি উল্লেখ করে আরও বলেন, “এই পুনর্মূল্যায়নের উপর ভিত্তি করে যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী পছন্দের স্ট্রিম বা সাবজেক্ট বেছে নিতে চাইছে, ফল প্রকাশ হতে দেরি হওয়ায় তাদের ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে।”
আরও পড়ুন:
সংশ্লিষ্ট বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “পর্ষদের পিপিআর-পিপিএস-এর ক্ষেত্রে এত দেরি করে কাজ শুরু হওয়ার কারণে বহু পড়ুয়াই ক্ষতিগ্রস্ত হতে চলেছে। অনেকেই নিজের পছন্দের বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ হারাতে পারে। অনলাইনেই যখন সমস্ত কাজ চলছে, তা হলে এত দেরিতে এই প্রক্রিয়া শুরু হল কেন? আগামী দিনে পর্ষদের এই বিষয়ে আরও তৎপর হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, এ বছরের মাধ্যমিকের মোট উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৭ লক্ষ ৬৫ হাজার ২৫২। এঁদের মধ্যে ৩ লক্ষ ৫২ হাজার ১৩৯ জন ছাত্রী এবং ৪ লক্ষ ৩৫২ জন ছাত্র। প্রথম দশে ৫৭ জন পরীক্ষার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বার রিভিউ ও স্ক্রুটিনি-র ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর সেই তালিকায় কতটা পরিবর্তন হয়, এখন সে দিকেই সকলের নজর থাকবে।