Advertisement
E-Paper

দাবানলের মতো দুর্যোগে পশুপাখির জীবন রক্ষার দায়ভার কাদের? কী ভাবে কাজ করেন তাঁরা?

একইসঙ্গে দ্রুত বহু প্রাণীর জীবন রক্ষার ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকেন এক জন অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসক।

ইন্দ্রনীল সামন্ত

শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৭
Wildfire.

ছবি: সংগৃহীত।

লস অ্যাঞ্জেলেসে অগ্নিকাণ্ডের জেরে ঘরছাড়া বহু মানুষ। তাঁদের সঙ্গেই বিপাকে হাজার হাজার গবাদি পশু এবং বন্যপ্রাণী। আগুনের গ্রাস সেই সব জীবজন্তুরও প্রাণ কেড়েছে নির্মম ভাবে। প্রিয় পোষ্যের শেষ দেখাও পাননি বহু মানুষ। কিন্তু যে সমস্ত পশু বেঁচে গিয়েছে, তাদের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মানুষ দ্বারস্থ হচ্ছেন প্রাণীচিকিৎসক বা তাঁদের সহযোগীর।

বিদেশের পাশাপাশি দেশেও পোষ্য কিংবা গবাদি পশুর চিকিৎসার জন্য এই পেশার চাহিদা রয়েছে যথেষ্ট। তবে, শুধুমাত্র প্রাকৃতিক দুর্যোগই নয়, বয়স এবং সংক্রমণজনিত কারণেও তাদের নিয়মিত চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। বিশেষ করে যে সমস্ত পশু বা পাখিরা অর্থের জোগান দিয়ে থাকে। এই বিশেষজ্ঞদের এক কথায় বলা হয় প্রাণীচিকিৎসক।

Veterinary Doctor.

ছবি: সংগৃহীত।

এই পেশায় প্রবেশ কী ভাবে করা সম্ভব ?

রাজ্যে প্রাণী চিকিৎসা বিজ্ঞান বিষয়টি স্নাতক স্তরে পড়ানো হয় পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে। পাঁচ বছরের কোর্সের সঙ্গে ইন্টার্নশিপ, দু’বছরের স্নাতকোত্তর কোর্স তো বটেই, তিন বছরের পিএইচডি করারও সুযোগ রয়েছে।

তবে, স্নাতক স্তরে এই বিষয় নিয়ে ভর্তি হতে চাইলে থাকতে হবে ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি কাম এন্ট্রান্স টেস্ট (নিট) স্কোর। একই সঙ্গে কেউ ভেটেরিনারি কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (ভিসিআই)-এর সর্বভারতীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও রাজ্যের ভেটেরিনারি কলেজে ভর্তি হতে পারবেন। প্রসঙ্গত, সংশ্লিষ্ট কলেজগুলিতে ১৫% আসনে ভিসিআই পরীক্ষার স্কোরের ভিত্তিতে ভর্তি করা হয়।

তবে, স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি ডিগ্রির ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। এ ছাড়াও, ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ এগ্রিকালচারাল রিসার্চ (আইসিএআর)-এর সর্বভারতীয় পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং পিএইচডি এন্ট্রান্সের মাধ্যমেও ভর্তি হওয়া সম্ভব।

Veterinary Doctor.

ছবি: সংগৃহীত।

দুর্যোগে প্রাণী চিকিৎসকদের ভূমিকা:

দুর্যোগের কবলে পড়া পশুপাখিরা নানা রকমের স্ট্রেসের সম্মুখীন হয়। এ ক্ষেত্রে তাদের স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে। এমনকী, তাদের উৎপাদন বা প্রজনন ক্ষমতা কমে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকে। সে ক্ষেত্রে দুর্যোগের পরে প্রাথমিক চিকিৎসা ছাড়াও গবাদি পশু পাখিদের আবার উৎপাদনক্ষম করে তুলতে বিশেষ চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে।

দুর্যোগের পরে প্রাণীদের উদ্ধার করে যে সমস্ত জায়গায় তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, সেই জায়গাটি ওই পশু বা পাখির জন্য স্বাস্থ্যকর কি না, তা সুনিশ্চিত করেন পশুচিকিৎসকরা। বিশেষত করে দাবানল বা বন্যার পরে বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাবে উদ্ধার করা পশু-পাখিদের উদরাময় ও নানা প্রকারের কৃমি ও জীবাণু সংক্রমণ ঘটতে দেখা যায়। দক্ষ প্রাণী চিকিৎসকরা টীকাকরণের মাধ্যমে সেই পরিস্থিতি সামাল দিয়ে থাকেন।

প্রাণীচিকিৎসকদের কাছে সমস্ত পোষ্য বা গবাদি পশুদের ঠিকানা থাকায় দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকে। একইসঙ্গে দ্রুত বহু প্রাণীর জীবন রক্ষার ক্ষেত্রেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকেন এক জন অভিজ্ঞ প্রাণী চিকিৎসক।

Veterinary Doctor.

ছবি: সংগৃহীত।

তবে, শুধুমাত্র জীবিত প্রাণীদের রক্ষাই নয়, দুর্যোগে মৃত গবাদি পশুপাখি থেকে ছড়ানো সংক্রমণ মোকাবিলায় কী কী করা যেতে পারে, সে সম্পর্কেও সচেতন করেন প্রাণী চিকিৎসক। দুর্যোগে মৃত প্রাণীর দেহে পচন শুরু হলে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে তার সৎকারের বিষয়েও পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাঁরা।

[লেখক পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্যবিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান]

Veterinarian Veterinary Doctor rescue medical treatment
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy