Advertisement
০৪ মে ২০২৪
School in crisis of existence

৭৫-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে অস্তিত্বের সঙ্কটে শহরের ইতিহাস বিজড়িত এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

চলতি মাসের ২০ তারিখ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছরের পূর্তিতে প্রাক্তনী এবং কৃতী ছাত্রদের পাশাপাশি বর্তমান পড়ুয়াদের নিয়ে রানিকুঠি এলাকায় পদযাত্রা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই পদযাত্রায় ৭৫ বছরের পুরানো স্কুলের অস্তিত্ব বাঁচাতে সরকারি হস্তক্ষেপের আবেদন জানান স্কুলের প্রধানশিক্ষক।

বিদ্যালয়ের ৭৫ বছরের পূর্তি  অনুষ্ঠান পালন।

বিদ্যালয়ের ৭৫ বছরের পূর্তি অনুষ্ঠান পালন। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৫
Share: Save:

স্বাধীনতার পরবর্তীকালে ছিন্নমূল বা উদ্বাস্তু আন্দোলনের সময়কালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল গান্ধী কলোনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। ইতিহাস বিজড়িত এই স্কুলের অস্তিত্ব এখন সঙ্কটের মুখে। ৭৫ বছরের শুভ সূচনায় স্কুলের কৃতী প্রাক্তনী থেকে বর্তমান শিক্ষকদের একটাই বার্তা ইংরেজি মাধ্যম চালু করার পাশাপাশি কো-এডুকেশনের ব্যবস্থা করা হোক।

চলতি মাসের ২০ তারিখ বিদ্যালয়ের ৭৫ বছরের পূর্তিতে প্রাক্তনী এবং কৃতী ছাত্রদের পাশাপাশি বর্তমান পড়ুয়াদের নিয়ে রানিকুঠি এলাকায় পদযাত্রা করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। এই পদযাত্রায় ৭৫ বছরের পুরানো স্কুলের অস্তিত্ব বাঁচাতে সরকারি হস্তক্ষেপের আবেদন জানান স্কুলের প্রধানশিক্ষক।

আশিস মুখোপাধ্যায় বলেন, “বহু কৃতী ছাত্র এখান থেকে পড়াশোনা করে গেছেন। বর্তমানে স্কুলকে বাঁচাতে প্রয়োজন ইংরেজি মাধ্যম চালু করা এবং কো-এডুকেশনের ব্যবস্থা করা। সরকার পোষিত স্কুল হিসাবে বর্তমানে ছাত্রসংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। স্কুলকে রক্ষা করতে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে।”

শুরুর দিকে স্কুলে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পঠন-পাঠন চালু হলেও, ১৯৭৬ সালে স্কুলটি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে উন্নীত হয়। ৮০ থেকে ৯০-এর দশকে এই স্কুলের ছাত্র সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০০০-এরও বেশি। কিন্তু ৯০ এর মধ্যবর্তী পর্যায় থেকে পড়ুয়ার সংখ্যা ক্রমেই কমতে থাকে।

২০ সালের গোড়াতেও পড়ুয়ার সংখ্যা কমে ছিল ১২০০ মতো। কিন্তু বর্তমানে সেই সংখ্যা প্রায় ৫০০-র নীচে নেমে গিয়েছে। আর তাতেই উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে কর্তৃপক্ষের।

এই স্কুলের জীবন বিজ্ঞানের শিক্ষক শুভাশিস চক্রবর্তী বলেন, “বর্তমান যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে গেলে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে গেলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করা প্রয়োজন। ছিন্নমূল মানুষগুলি ঘুরে দাঁড়াবার প্রয়াসে এই স্কুলটির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেই প্রতিষ্ঠানটি এখন হারিয়ে যাওয়ার দোরগোড়ায়। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে।”

এই স্কুল থেকে পড়াশোনা করেছেন রাজনীতিবিদ তথা কংগ্রেসের তৎকালীন বিরোধী দলনেতা পঙ্কজ বন্দ্যোপাধ্যায়, চিকিৎসক পিকে গঙ্গোপাধ্যায়, আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ প্রমুখ। আর সেই স্কুল বর্তমানে রুগ্ন প্রায় অবস্থায় পরিণত হয়েছে। কৃতী প্রাক্তনীরা এগিয়ে এসেছেন স্কুলকে বাঁচাবার উদ্দেশ্যে। এই অঞ্চলে প্রায় ১৬টি স্কুল রয়েছে, যার কোনটা বন্ধ বা বন্ধের মুখে। তাহলে কি এ বার এই স্কুলটিও তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। ৭৫-এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন বর্তমান ছাত্র থেকে প্রাক্তনী-সহ স্কুল শিক্ষকদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Schools
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE