রোদ উঠবে নাকি মেঘ করবে, শীত পড়বে না জ্বালাবে গরম! সব কিছু আগে ভাগে বলে দিতে পারেন আবহাওয়াবিদ। কী ভাবে এই পেশা গ্রহণ করা যায়? রইল বিস্তারিত।
শুরু কী ভাবে?
বিজ্ঞানের পড়ুয়াদের আবহাওয়াবিদ হওয়ার সুযোগ থাকে। দ্বাদশের পরীক্ষায় গণিত, পদার্থবিদ্যা, রসায়নে ভাল নম্বর পেতেই হয়। তবেই, স্নাতক স্তরে মেটেরোলজি, অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্স, পদার্থবিদ্যা, পরিবেশ বিজ্ঞান, জিয়োফিজ়িক্স কিংবা ওশিয়ানোগ্রাফি বিষয়ে ভর্তি হতে পারবেন।
এ ছাড়াও ভূগোল নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েছেন, এমন পড়ুয়াও উল্লিখিত বিষয়ে ভর্তি হতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে স্নাতক স্তরে ফিজ়িক্যাল জিয়োগ্রাফি বিষয় নিয়ে পড়তে পারলে পরবর্তীতে গবেষণার বা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুযোগ পাওয়া যায়।
অঙ্ক, পদার্থবিদ্যার পাশাপাশি, ভূগোলের জ্ঞানও দরকার। — ফাইল চিত্র।
স্নাতক হওয়ার পর?
কলেজের পাঠ চুকিয়ে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে আবহাওয়াবিদ্যার একাধিক শাখা নিয়ে পড়াশোনা প্রয়োজন। বিজ্ঞান শাখার অধীনে মেটেরোলজি, অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্স, ওশিয়ানোগ্রাফি, পরিবেশ বিজ্ঞানের মতো বিষয় নিয়ে পড়তে পারলে ভবিষ্যতে কাজের সুযোগ রয়েছে।
এ ক্ষেত্রে কেউ চাইলে অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্স, ক্লাইমেটোলজি, মেটেরোলজি নিয়ে পিএইচডি করে গবেষণার পথেও হাঁটতে পারেন।
ভূগোলে স্নাতকদের রাশিবিজ্ঞান এবং ফিজ়িক্যাল জিয়োগ্রাফিতে জ্ঞান থাকার কারণে স্নাতকোত্তর স্তরে ক্লাইমেটোলজি বা মেটেরোলজি বিষয়ে ভর্তি নেওয়া হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা জিয়োগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) এবং রিমোট সেন্সিং-এ দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পান।
পড়াশোনা কোথায়?
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) খড়্গপুর, কোচিন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট-এর ইনস্টিটিউট অফ মেটেরোলজি ট্রেনিং, সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যান্ড ওশিয়ানিক সায়েন্স, অন্ধ্র ইউনিভার্সিটি, আইআইটি দিল্লি থেকে স্নাতক, স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সের পাশাপাশি পিএইচডি করার সুযোগও রয়েছে।
আনুমানিক খরচ ১০,০০০ থেকে ২,৪০,০০০ টাকা পর্যন্ত। তবে, খরচের অঙ্ক বেসরকারি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের নিরিখে বদলাতে পারে।
কী কী বিষয়ে দক্ষতা দরকার?
পদার্থবিদ্যা, গণিতে পারদর্শী হলে অ্যাটমোস্ফেরিক মডেলিং নিয়ে কাজ করা সহজ। পাশাপাশি, কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ়-এ দক্ষ হলে জিআইএস টুল ব্যবহার করতে পারবেন। অঙ্ক, পদার্থবিদ্যা, রসায়ন কিংবা জলবায়ু বিদ্যায় দক্ষতা তৈরি করতে পারলে গবেষণার পাশাপাশি পূর্বাভাস দেওয়ার ক্ষেত্রেও কাজ সহজ হয়ে ওঠে।
সর্বক্ষণ পড়াশোনা এবং পর্যালোচনা করে যেতে হয় আবহাওয়াবিদদের। — ফাইল চিত্র।
কাজের সুযোগ?
আবহাওয়া দফতর-এ (ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট) চাকরির জন্য প্রাথমিক ভাবে ইন্টার্ন বা ট্রেনি হিসাবে যোগদান করতে পারেন। এর পর ধাপে মেটেরোলজিস্ট বা ওয়েদার ফোরকাস্টার, রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ শেখার সুযোগ পাবেন। সিনিয়র বা অ্যাডভান্সড অর্থাৎ উচ্চপদস্থ আধিকারিক হিসাবে সিনিয়র মেটেরোলজিস্ট, এভিয়েশন মেটেরোলজিস্ট, রিসার্চ সায়েন্টিস্ট, ক্লাইমেট স্পেশ্যালিস্ট, ক্লাইমেটোলজিস্ট, এবং অধ্যাপক হিসাবে চাকরি পেতে পারেন।
কোন কোন সংস্থায় নিয়োগ?
ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইসরো), ইন্ডিয়ান মেটেরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্ট, ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ওয়েদার ফোরকাস্টিং, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ট্রপিক্যাল মেটেরোলজি, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওশিয়ানোগ্রাফি, ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজ়েশন (ডিআরডিও)।