কখনও র্যাগিংয়ের ঘটনা, কখনও শিক্ষামন্ত্রীর গাড়ি ভাঙচুর— বার বার খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তা-ও হারিয়ে যায়নি রাজ্যের প্রথম সারিতে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি বা জৌলুস। সম্প্রতি যাদবপুরের এক ছাত্র দেশের কোনও সংস্থায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজের চাকরি পেয়ে যেন প্রমাণ করলেন সেই তথ্যই।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট সেলের কো-অর্ডিনেটার শমিতা ভট্টাচার্য বলেন, “গত বছর যাদবপুর থেকে চাকরি পেয়েছিলেন ৯৩ শতাংশ পড়ুয়া। এ বারে তা ৯৫ শতাংশের উপর। যাদবপুর মেধাবী পড়ুয়াদের কাছে স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। যাই ঘটে থাকুক, আসলে এই ঘটনা প্রমাণ করে এখানকার শিক্ষক এবং পড়ুয়ারা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানচিত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষকে বরাবরই অন্য মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।”
এ বার যাদবপুরে প্লেসমেন্ট সেলের মাধ্যমে প্রায় ১১-১২ লক্ষ টাকা বার্ষিক প্যাকেজে চাকরির সুযোগ রয়েছে। এখনও পর্যন্ত স্নাতক স্তরের ৮৮৫ জন পড়ুয়া বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরির ইন্টারভিউ দিয়েছেন। তার মধ্যে চাকরি পেয়েছেন ৮৩২ জন। এখনও ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। স্নাতকোত্তর স্তর থেকেও পড়ুয়ারা মাসিক ৪০ লক্ষ টাকা চাকরির সুযোগ পেয়েছেন। উল্লেখ্য, এর মধ্যে ইতিহাস বিভাগের এক ছাত্রী বার্ষিক ৮ লক্ষ টাকার চাকরি পেয়েছেন।
আরও পড়ুন:
এ বার যাদবপুরের কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র উপায়ন দে ১ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার বার্ষিক প্যাকেজে চাকরি পেয়েছেন। বরাবরই কম্পিউটারের প্রতি বিশেষ ঝোঁক ছিল উপায়নের। কোডিং বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা বা গবেষণা করতে ভালবাসতেন উপায়ন। তাঁকে বেঙ্গালুরুর বেসরকারি সংস্থা ‘রুব্রিক ইন্ডিয়া’ থেকে ফোন করে ডাকা হয়েছিল ইন্টার্নশিপের জন্য। সেই সংস্থায় তাঁর বাকি সহকর্মী অর্থাৎ ইন্টার্নরা ছিলেন আইআইটি থেকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উপায়নই ছিলেন একমাত্র। এর পর জুন মাস থেকে সেই সংস্থায় কাজে যোগ দেন।
এই চাকরি পাওয়ার আগে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লেসমেন্ট সেল থেকে ‘ডি শ’ নামক একটি কোম্পানিতে লক্ষাধিক টাকার চাকরি পেয়েছিলেন উপায়ন।
আইসিএসসি-তে তৃতীয় এবং সিবিএসই-তে ভাল র্যাঙ্ক করার পরও রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ৯৮ তম স্থান পান উপায়ন। সর্বভারতীয় জয়েন্টেও মোটের উপর ভাল ফল করেছিলেন তিনি। কিন্তু পছন্দমত আইআইটি সুযোগ না মেলায় যাদবপুরকেই উচ্চশিক্ষার জন্য বেছে নিয়েছিলেন।
উপায়ন অবশ্য মনে করে আর্থিক সঙ্গতি একটি বড় বিষয়। তাঁর কথায়, “রাজ্যের বহু মেধাবী পড়ুয়াই দেশের অন্য নামী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেন। কিন্তু সে সব প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট ব্যয়বহুল। সে তুলনায় রাজ্যের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কম খরচে যে গবেষণা এবং পড়াশোনার মান এবং পরিকাঠামো রয়েছে, তা কোনও অংশে কম নয়। এখান থেকেই একই রকম সুযোগসুবিধা পেয়ে ভাল কেরিয়ার গড়ার সুযোগ রয়েছে।”
আরও পড়ুন:
--