Advertisement
E-Paper

মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে, তবু সাহায্য অমিল যাদবপুরে! মনখারাপে পাশে থাকেন শুধু শিক্ষকেরাই!

যাদবপুরের মতো ক্যাম্পাস মাঝেমধ্যেই খবরের শিরোনামে আসে র‍্যাগিং, যৌন নির্যাতন, জাতিগত-অর্থনৈতিক বৈষম্যের কারণে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:৩৮
Jadavpur University

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি: সংগৃহীত।

তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘিরে তোলপাড় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। তারই মধ্যে শুক্রবার ক্যাম্পাস ঘুরে গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তৈরি ন্যাশনাল টাস্ক ফোর্স। সদস্যদের কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। নানা সমস্যার মধ্যে উঠে এসেছে ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষায় অবহেলার কথাও।

দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, টিউশন সেন্টার, মেডিক্যাল কলেজে বেড়েছে আত্মহননের ঘটনা। এ জন্য ইউজিসি-র তরফে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলিতে বিশেষ পরিকাঠামো গড়ে তোলার নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো যাদবপুরের বিভিন্ন বিভাগে চালু রয়েছে ‘টিচার মেন্টর প্রোগ্রাম’। রয়েছে স্টুডেন্ট-টিচার কমিটিও।

পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের দেখভালের জন্য সম্প্রতি নির্দেশিকা জারি করেছে সুপ্রিম কোর্ট। ১৫টি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। সেখানেই উল্লেখ রয়েছে, প্রতিষ্ঠানে ১০০-র বেশি পড়ুয়া থাকলে, ন্যূনতম একজন প্রশিক্ষিত কাউন্সেলর বা সাইকোলজিস্ট (মনোবিদ) থাকা বাঞ্ছনীয়। যাদবপুরের মতো বিশ্ববিদ্যালয়েও রয়েছে একটি মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলিংয়ের সেন্টার। কর্তৃপক্ষের দাবি, দেশের মধ্যে প্রথম যাদবপুরেই গড়ে তোলা হয়েছিল এই কেন্দ্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ নম্বর গেটের কাছেই রয়েছে এই কেন্দ্র। কিন্তু কত জন পড়ুয়া বা শিক্ষক জানেন এর বিষয়ে? খোঁজ নিল আনন্দবাজার ডট কম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক শুভজিৎ নস্কর বলেন, “এ সম্পর্কে খুব বেশি সচেতন নন কেউই। আমার নিজেরও জানা নেই ওই কেন্দ্রটি কতটা সচল বা পড়ুয়ারা কতটা সাহায্য পান সেখান থেকে!”

যাদবপুরের মতো ক্যাম্পাস মাঝেমধ্যেই খবরের শিরোনামে আসে র‍্যাগিং, যৌন নির্যাতন, জাতিগত বা অর্থনৈতিক বৈষম্যমূলক কটাক্ষের জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্র বলেন, “আমার বাড়ি উত্তরবঙ্গে। জেলা থেকে এখানে এসে প্রথম দিকে মানিয়ে নিতে খানিক অসুবিধা হচ্ছিল। এ বিষয়ে বিভাগীয় অধ্যাপকের থেকেই অনেক সাহায্য পেয়েছি।” তবে, ক্যাম্পাসে যে এ রকম কোনও কাউন্সেলিং সেন্টার রয়েছে, তা তাঁর জানাই ছিল না। তাঁর সহপাঠীরাও কেউ এমন কেন্দ্রের থেকে সাহায্য পেয়েছেন বলেও তিনি শোনেনি।

একই মত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দ্বিতীয় বর্ষের আরও এক ছাত্রীর। তিনি বলেন, “আমার এক বন্ধুকে নিয়ে ওই সেন্টারে গিয়েছিলাম। একজন কাউন্সেলর আসেন ওখানে। কিন্তু তাঁর উপস্থিত নিয়মিত নয়। কাউন্সেলিংয়ের ক্ষেত্রে সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। হয়তো তিনি যে দিন আসবেন, সে দিন আর ছাত্রের তাঁকে প্রয়োজন থাকবে না।”

ওই ছাত্রী দাবি করেন, তাঁর এক বন্ধু অবশ্য কাউন্সেলিং করিয়েছেন ওই সেন্টারে। কিন্তু, সন্তোষজনক ফল পাননি। উল্টে তাঁকেই নাকি খানিক কাঠগড়ায় করানো হয়েছে। পরে ব্যক্তিগত ভাবে কাউন্সেলিং করিয়ে ভাল আছেন ওই পড়ুয়া।

সহকারী অধ্যাপক শুভজিৎ নস্কর বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের টিচার-স্টুডেন্ট কমিটি-র কনভেনরও। তিনি বলেন, “বহু পড়ুয়াই মাঝেমধ্যে তাঁদের সমস্যার কথা আমার এসে জানান। যতটা সাহায্য করা, সেটা চেষ্টা করি। কিন্তু ওদের মুখ থেকেই শুনেছি, অনেক বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সাহায্য চাওয়া হলেও সে ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি।”

প্রাক্তনীরা অবশ্য কেউই জানেন না, এমন একটি মানসিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র যে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে।

JU Student Death Student Death at JU Jadavpur University Mental Health Center at JU
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy