সেপ্টেম্বর থেকে শুরু উচ্চ মাধ্যমিকের দ্বিতীয় সিমেস্টারের পরীক্ষা। এখনও কলকাতার স্কুলগুলিতে পৌঁছল না বাংলা ও ইংরেজি বই। পড়ুয়াদের এখনও ভরসা সেই ডাউনলোড করা পিএডএফ-ই।
শিক্ষা সংসদের তরফে জানানো হয়েছিল, সরকারি ভাবে বই ছাপানো প্রায় শেষের মুখে। গরমের ছুটির পর স্কুল খুললেই পড়ুয়ারা হাতে পাবে বই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, গ্রামের স্কুলগুলিতে বই পৌঁছলেও এখনও শহরতলির কোনও স্কুলে বই যায়নি। যেখানে কলকাতায় মোট উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের অধীনে স্কুল রয়েছে ৩৮২টি।
যদিও শিক্ষা সংসদের দাবি, জেলা স্তরে অর্থাৎ ডিআই-এর কাছে ইতিমধ্যেই সমস্ত বই পৌঁছে গিয়েছে। শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘স্কুলগুলিতে একাদশ শ্রেণিতে যে ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে তার তথ্য বাংলা শিক্ষা পোর্টালে আপলোড হয়নি। তার জেরেই কলকাতার স্কুলগুলিতে আপাতত বই দেওয়া হয়নি। স্কুলগুলিকে আগে সব তথ্য আপলোড করার কথা বলা হয়েছে। তার পরেই আমরা বুঝতে পারব, কোন স্কুলে কতগুলি বই পাঠাতে হবে।’’ তিনি আরও জানিয়েছেন, তথ্য না পাওয়া গেলে কোন স্কুলে কত বই পাঠাতে হবে তা জানা যাবে না। অনেক সময় দেখা যায়, কোনও স্কুলের প্রধান শিক্ষক ৫০টি বই চেয়েছেন। কিন্তু পরে গিয়ে দেখা যায়, ওই স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা ৪০ জন। সে ক্ষেত্রে অনেক সময়ই বাড়তি বইগুলি নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। এই পরিস্থিতি এড়াতেই এখনও পর্যন্ত আটকে রাখা হয়েছে বলে শিক্ষা সংসদ সূত্রে খবর। পড়ুয়াদের তথ্য পোর্টালে আপলোড হয়ে গেলেই স্কুলগুলিতে বই পৌঁছে যাবে বলে জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, রাজ্যের জেলার স্কুলগুলির তরফে সমস্ত তথ্য আপলোড হয়ে যাওয়ার কারণে সেখানে ভাষার বই পৌঁছে গিয়েছে বলে সংসদ সূত্রে খবর।
আরও পড়ুন:
বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের তরফে ৬২টি বিষয় পড়ানো হয়। তার মধ্যে ১৫টি ভাষাভিত্তিক (ল্যাঙ্গোয়েজ) বই রয়েছে। শিক্ষা সংসদ অনুমোদিত টেক্সট বুক নম্বর (টিবি নম্বর) কলকাতার স্কুলে পৌঁছলেও বাংলা, ইংরেজি-সহ ভাষাভিত্তিক বই এখনও হাতে পায়নি পড়ুয়ারা। তবে যত দ্রুত তথ্য আপলোড করা হবে তত দ্রুত বই পৌঁছবে কলকাতার স্কুলগুলিতে। তত দিন অনলাইনে ‘স্টাডি মেটিরিয়াল’-এর সাহায্যই ভরসা।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সাল থেকে শুরু হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিকের সিমেস্টার পদ্ধতিতে পড়াশোনা। সিমেস্টার পদ্ধতি আসার পরে পাঠ্যক্রমেও ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী তৃতীয় সিমেস্টার হবে এমসিকিউ-ভিত্তিক। এর জন্য প্রয়োজন নতুন পাঠ্যবই। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে তৃতীয় সিমেস্টার। পরীক্ষার বাকি তিন মাস, এখনও হাতে নেই বই, ভরসা ‘স্টাডি মেটিরিয়াল’। স্কুলের গাফিলতির কারণেই এমন দশা বলে মনে করছে শিক্ষা মহলের একাংশ।