নিয়োগ জটে হাসফাঁস যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। গত কয়েক বছর উপাচার্য পদে কোনও স্থায়ী নিয়োগ হয়নি। রেজিস্ট্রার এবং ফিন্যান্স অফিসারের পদও সামলাচ্ছেন ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপকেরা। এর বাইরেও একাধিক আধিকারিকের পদ শূন্য, নিয়োগ হচ্ছে না। কার্যত অচলাবস্থা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। এরই মধ্যে অভিযোগ উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর চাপ বাড়াতেই এই অচলাবস্থা তৈরি করা হচ্ছে। বাম মনোভাবাপন্ন শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা সিঁদুরে মেঘ দেখছেন, বাইরে থেকে আধিকারিক নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, ফিন্যান্স অফিসারের দায়িত্ব এত দিন যিনি সামলাচ্ছিলেন, তাঁর মেয়াদও সম্পূর্ণ হয়েছে। তাঁর কাজের মেয়াদ আর বৃদ্ধি করার বিষয়ে উচ্চশিক্ষা দফতরের কোনও হেলদোল নেই। ফলে একাধিক জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক সংগঠনের দাবি, দ্রুত সমস্যার সমাধান না করলে আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে একমাত্র স্থায়ী পদাধিকারী উপাধ্যক্ষ। বাকি সমস্ত পদ সামলাচ্ছেন অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত আধিকারিকেরা। ফিন্যান্স অফিসারের কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ১৩ জুন। তার পর পাঁচ দিন কেটে গেলেও নিয়োগ নিয়ে তৎপরতা দেখা যায়নি। অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে যাদবপুরে। আটকে রয়েছে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বকেয়া বিদ্যুৎ বিল বা করের খরচ জমা দেওয়া বা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় খরচের ক্ষেত্রেও অনুমতি নেওয়ার জন্য ফিন্যান্স অফিসার নেই। এরই মধ্যে বুধবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সে জন্য প্রয়োজনীয় খরচে অনুমতির দেওয়ার অধিকারী কোনও ব্যক্তি নেই। ফিন্যান্স অফিসার ছাড়া এই সম্মতি দেওয়ার ক্ষমতা ছিল একমাত্র উপাচার্যের হাতে। এখন সেই পদেও কেউ নেই।
আরও পড়ুন:
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একাংশের মতে, এর আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্যের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর উচ্চশিক্ষা দফতর ওই পদে নিযুক্ত ব্যক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করে। কিন্তু ফিন্যান্স অফিসার পদের ক্ষেত্রে সেই পদক্ষেপ এখনও করছে না সরকার।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সংগঠন জুটার সাধারণ সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিন্যান্স অফিসার নিয়োগের ক্ষেত্রে উচ্চশিক্ষা দফতরের ইচ্ছাকৃত ভাবে দেরি করছে। আমাদের মনে হয়, সরকার বাইরে থেকে ফিন্যান্স অফিসার নিয়োগ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে চায়। এর আগে ‘হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’(এইচআরএমএস) ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমেও সেই পথ প্রশস্ত করেছে। এখন নতুন জটিলতা সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়কে আর্থিক ভাবে দুর্বল করার চক্রান্ত করা হচ্ছে। যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পড়ুয়া, গবেষক, শিক্ষক থেকে শিক্ষাকর্মীরাও।”
তিনি জানান, এই সপ্তাহের মধ্যে এই জটিলতার সমাধান না হলে আগামী সোমবার থেকে এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে যাব।