টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবসেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকস্তরের পরীক্ষা হবে। যদিও ওই দিন যানযন্ত্রণা হতে পারে বলে রাজ্য সরকারের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়কে পরীক্ষার দিনক্ষণ পিছনোর অনুরোধও করা হয়। সেই মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈঠকও হয় সিন্ডিকেটের। বৈঠকে দিনক্ষণ পিছোনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় প্রাথমিক ভাবে। তবে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সেই সিদ্ধান্তে সাড়া দেননি বলেই অভিযোগ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেটে সরকারের প্রতিনিধি ওমপ্রকাশ মিশ্র।
ওমপ্রকাশ জানিয়েছেন, সোমবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেটের একটি বৈঠক ছিল। বৈঠকে ডিরেক্টর অফ পাবলিক ইনস্ট্রাকশন (ডিপিআই)-র মধুমিতা মান্না, উচ্চ শিক্ষা দফতরের বিশেষ সচিব চন্দ্রাণী টুডু ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘উচ্চ শিক্ষা দফতর থেকে স্পেশাল সেক্রেটারি এসেছিলেন। তিনি চিঠি দিয়ে বলেন মুখ্যমন্ত্রী পরীক্ষা পরিবর্তনের আবেদন জানিয়েছেন। তাই আমরা এখনও সময় থাকার কারণে আবারও বৈঠক করে দিনক্ষণ পিছোনোর কথা ভাবি। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে সেই সিদ্ধান্তকে খারিজ করে দেন। প্রয়োজনে আবার পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানান আমাদের। এই সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ অসঙ্গতিপূর্ণ। আমার খুবই খারাপ লাগছে উপাচার্য যিনি রয়েছেন তিনি এই বিষয় নিয়ে রাজনীতি করছেন!’’
অন্যদিকে শান্তা দত্ত দে বলেন, ‘‘ওমপ্রকাশ মিশ্র আমায় বেআইনি ভিসি বলেন। কোনও এক ছাত্র সংগঠনের জন্য পরীক্ষা বদল হবে না। বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের অটোনমি বা স্বাধিকার বজায় রক্ষার জন্য যা করণীয় সেটা করব। আমরা পাল্টা চিঠি দিয়েছি উচ্চ শিক্ষা দফতরকে যে আপনারা পরীক্ষার দিন যান চলাচল ঠিক রাখবেন। ’’
উল্লেখ্য, আগামী ২৮ অগস্ট টিএমসিপির প্রতিষ্ঠা দিবস। ঘটনাচক্রে ওই দিনেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের স্নাতক স্তরে (বিকম) এবং আইন বিভাগের স্নাতক স্তরে (বিএ এলএলবি) চতুর্থ সেমিস্টারের পরীক্ষা রয়েছে। পরীক্ষা চলবে দুপুর ২টো থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। দলীয় কর্মসূচির দিনে কেন পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত, তা নিয়ে আগেই প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলের ছাত্রশাখা। টিএমসিপির রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য এটিকে একটি ‘গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। এটিকে কোনও সাধারণ ‘অ্যাকাডেমিক সিদ্ধান্ত’ হিসাবে দেখতে নারাজ তৃণমূলের ছাত্রনেতা।
উচ্চশিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানিয়েছিলেন, ২৮ অগস্ট কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ১২ বিষয়ের পরীক্ষা রয়েছে। মোট ১৬৯টা কলেজ মিলিয়ে প্রায় ৩০ হাজার পরীক্ষার্থী রয়েছেন। কলকাতা সংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল এবং সভার জন্য, ছাত্রছাত্রীদের নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কলেজে পৌঁছতে অসুবিধা হবে। এই মর্মে বেশ কিছু ছাত্র-ছাত্রী চিঠি দিয়েছেন। পড়ুয়াদের অসুবিধার কথা ভেবেই পরীক্ষার দিন বদলের আর্জি জানানো হয়েছিল।