পুজোর আগেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিকেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিং এবং ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে প্রায় ১৫০-এর বেশি আসনে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। শেষ পর্যন্ত দেখা যায় ওই কয়েকটি আসনের জন্য আবেদন জানিয়েছেন ২০০০-এর বেশি পড়ুয়া, দাবি কর্তৃপক্ষের।
অগস্ট মাসের শেষেই রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়ামিনেশন বোর্ড (ডব্লিউবিজেইইবি)-র তরফে রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফলাফলের ভিত্তিতে বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির লক্ষ্যে কাউন্সেলিং শুরু করা হয়। সেই কাউন্সেলিং শেষে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের যে আসনগুলি ফাঁকা ছিল, সেখানে বিকেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে পড়ুয়া ভর্তি নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়। যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং-এ ১৬টি বিভাগে শূন্য আসনের সংখ্যা ছিল ১৫৯। সেখানে বিকেন্দ্রীভূত কাউন্সেলিং-এর জন্য ‘ফ্রেশার’-দের পাশাপাশি যাদবপুর বা অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে এ যাঁরা আগেই ভর্তি হয়ে গিয়েছিলেন অথবা কোথাও ভর্তি হয়েও পরে তাঁদের আসন বাতিল করেছিলেন, তাঁরাও আবেদন জানাতে পারতেন। বুধবার ছিল সেই কাউন্সেলিংয়ে যোগদানের জন্য আবেদনের শেষ দিন।
বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র ১৫৯টি আসনে এ বছর প্রায় ২,২১৮ জন পড়ুয়া ভর্তির আবেদন জানিয়েছেন। এ বছর ওবিসি সংরক্ষণ সংক্রান্ত জটের কারণে জয়েন্টের ফল প্রকাশ এবং কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া দেরিতে শুরু হওয়ায় আশঙ্কিত ছিলেন শিক্ষকেরা।
দেখা যায়, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ওপেনিং র্যাঙ্ক (যে র্যাঙ্কে ভর্তি শুরু হয়েছে) ৮৩। কিন্তু সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সেই র্যাঙ্কই গিয়ে ঠেকেছে ১,৫১৮-তে। কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এ বার ক্লোজ়িং (যে র্যাঙ্কে শেষ হয়েছে ভর্তি) র্যাঙ্ক ২৩৮। কিন্তু সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ক্লোজ়িং র্যাঙ্ক নেমেছিল ২,৫৩৭–তে। এতে প্রশ্ন উঠছে পড়ুয়াদের মেধা নিয়ে।
আরও পড়ুন:
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সংগঠন (জুটা)-এর সম্পাদক পার্থপ্রতিম রায় অবশ্য বলেন, “খুব বেশি মেধার পতন ঘটছে এমনটা নয়। সাধারণত কিছুটা এমনই চিত্র থাকে যাদবপুরে। তবে এ বছর মেধাতালিকায় কাট-অফ র্যাঙ্ক খানিকটা নেমেছে, সে কথা সত্য। ধরা যাক, অন্য বছর যদি কোনও বিভাগে ১৫০ তম র্যাঙ্কের পড়ুয়া যাদবপুরে পড়ার সুযোগ পেয়ে থাকেন, এ বছর ২০০ তম র্যাঙ্কের পড়ুয়াও তা পাবেন।” এর জন্য রাজ্য জয়েন্টের ফল প্রকাশে দেরি হওয়াকেই দায়ী করেছেন তিনি।
তবে, বিকেন্দ্রীভূত প্রক্রিয়ায় বেশ কিছু সংখ্যক পড়ুয়া আবেদন জানিয়েছেন, যা বেশ আশাব্যঞ্জক বলেই মনে করছেন কর্তৃপক্ষ। পড়ুয়াদের আবেদন এবং তাঁদের যোগ্যতার ভিত্তিতে আগামী ১৩ থেকে ১৫ অক্টোবরের মধ্যে কাউন্সেলিং এবং স্পট অ্যাডমিশনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়াদের ভর্তি নেওয়া হবে।