Advertisement
E-Paper

একশো বছরের স্কুলে চালু হচ্ছে ইংরেজি মাধ্যম! সামাজিক উন্নয়ন নিয়ে আশাবাদী শিক্ষকেরা

শ্যামবাজারের এক ছোট গাড়িবারান্দায় গড়ে উঠেছিল কলকাতার অন্যতম প্রাচীন স্কুল দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৮:২৩
The Park Institution

দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশন। নিজস্ব চিত্র।

অবশেষে ইংরেজি মাধ্যম চালু হতে চলেছে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশন-এ। স্কুলের শতবর্ষ উদ্‌যাপনে আরও এক সাফল্যের পালক জুড়ল স্কুলের মুকুটে। এর ফলে বৃহত্তর ক্ষেত্রেও উন্নতি হবে বলে মনে করছেন শিক্ষকেরা।

স্বাধীনতার আগে ১৯২৬ সালের ২ জানুয়ারি পথচলা শুরু শ্যামবাজারের এক ছোট গাড়িবারান্দায়। কলকাতার অন্যতম প্রাচীন স্কুল দ্য পার্ক ইনস্টিটিউশন পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন কুলদাপ্রসাদ লাহিড়ী। তার পর দীর্ঘ সময় অতিক্রান্ত। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক থেকে নিট, জয়েন্টের মতো যোগ্যতা নির্ণায়ক পরীক্ষাতেও স্কুলের পড়ুয়াদের ফলাফল বরাবর নজর কেড়েছে। প্রাক্তনীদের তালিকায় রয়েছে ক্রিকেটার অরূপ ভট্টাচার্য, শৈবাল রায়চৌধুরী থেকে অভিনেতা বিপ্লব চট্টোপাধ্যায়-এর মতো বহু বিশিষ্টজন।

বর্তমানে শহরের বুকে ইংরেজি মাধ্যম স্কুলগুলি মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। অধিকাংশ অভিভাবকও চাইছেন সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলের চেয়ে বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলেই নিজের সন্তানদের ভর্তি করতে। ফলে যত দিন যাচ্ছে পড়ুয়া ভর্তি কমছে সরকারি বাংলা মাধ্যম স্কুলে। পর্যাপ্ত পরিকাঠামো, শিক্ষক-পড়ুয়ার অভাবে উঠে যাচ্ছে বহু স্কুলও। পার্ক ইনস্টিটিউশনের প্রধানশিক্ষক সুপ্রিয় পাঁজা বলেন, “স্কুলের বেশিরভাগ পড়ুয়াই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া ঘরের। সরকারি স্কুল হওয়ায় এখানে প্রায় বিনামূল্যেই তারা পড়ার সুযোগ পান। কিন্তু যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে প্রায় ৩০০-৩৫০ জন পড়ুয়ার অভিভাবকেরা স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু করার জন্য আমাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছিলেন।”

তিনি জানান, এর জন্য তাঁর কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। এর পরই তাঁদের এই ভাবনা বাস্তবায়নের পদক্ষেপ করা হয়। ২০২৪-এর একেবারে গোড়ার দিকে স্কুলের পরিচালন সমিতির তরফে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ইংরেজি মাধ্যম চালুর যাবতীয় প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। কলকাতার ডিআই অফিস, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এবং উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাসংসদ এবং শেষমেশ বিকাশ ভবনের তরফে তাঁদের আবেদন খতিয়ে দেখা হয়। স্কুলে বাংলা মাধ্যমের পাশাপাশি ইংরেজি মাধ্যম চালু করার পর্যাপ্ত পরিকাঠামো রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখার জন্য পরিদর্শনে আসেন আধিকারিকেরা। এ বছর পুজোর ছুটির আগে সরকারি তরফে অনুমোদন মেলে।

প্রধানশিক্ষক বলেন, “আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই স্কুলে ইংরেজি মাধ্যম চালু হয়ে যাবে। প্রাথমিক ভাবে আমরা উচ্চ প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণিতে এবং উচ্চ মাধ্যমিকে একাদশ শ্রেণিতে নয়া ব্যবস্থা কার্যকর করব বলেই ভেবেছি। এর পর বাকি শ্রেণির ক্লাসও হবে ইংরেজি মাধ্যমে। তবে এ বিষয়ে পরিচালন সমিতির বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।”

তাঁর দাবি, স্কুলে ক্লাসঘরের অভাব নেই। শিক্ষকেরাও এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছেন। তবে পড়ুয়াদের ইংরেজি মাধ্যমে পড়ানোর জন্য সরকারের সঙ্গে যৌথ ভাবে বা নিজস্ব প্রচেষ্টায় শিক্ষকদের আলাদা প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে বলে তিনি জানান। এ ছাড়া, পড়ুয়াদের পাঠ্যসামগ্রীর জোগান দেওয়া, ক্লাসের সময়সূচি স্থির করা নিয়ে এখন আলোচনা চলছে। তবে এই ব্যবস্থা কার্যকর করতে কোনও অসুবিধা হবে না বলেই তিনি মনে করেন।

সুপ্রিয় পাঁজা খানিক গর্বের সুরেই বলেন, “শততম বর্ষে এ আমাদের বড় পাওনা বা উপহার বলা যেতে পারে। এলাকাবাসীর এতদিনের ইচ্ছেপূরণ করতে পারব আমরা। যে বিপুল খরচে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করতে হয়, আমাদের স্কুলে এ বার থেকে প্রায় নিখরচায় সেই সুবিধা পাবেন গরিব ঘরের পড়ুয়ারা।”

উল্লেখ্য, স্কুলের ১০০ বছর উদ্‌যাপনে জন্য বৃক্ষরোপণ, দাবা প্রতিযোগিতা, গাছের তলায় ক্লাস করানো-র মতো একাধিক বিষয়ে উদ্যোগী হয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

The Park Institution centenary celebration English medium in WB govt school New Initiative by The Park Institution
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy