নবম-দশম শ্রেণির জন্য শিক্ষক নিয়োগের নথি যাচাইয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। শুক্রবার ওই তালিকা প্রকাশের পরই দেখা গিয়েছে, প্রায় ৪০,০০০ পরীক্ষার্থীকে ডাকা হয়েছে ইন্টারভিউয়ের জন্য। এ ক্ষেত্রে কাট অফ মার্কস ৭০-এর মধ্যে রাখা হয়েছে। অর্থাৎ, অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর-সহ ৭০ নম্বর পেলেই ইন্টারভিউয়ে ডাক পাচ্ছেন প্রার্থীরা। কিন্তু এর পরও নতুন চাকরিপ্রার্থীরা বঞ্চনার অভিযোগ তুলছেন।
নতুন চাকরিপ্রার্থীদের আশঙ্কা, তাঁরা অনেকেই ইন্টারভিউয়ে ডাক পাবেন, কারণ নবম-দশমে শূন্যপদের সংখ্যা বেশি, তাই কাট অফ মার্কস কমেছে। কিন্তু তাতে সমস্যার সমাধান হবে না। শেষ পর্যন্ত চাকরিটা তাঁরা পাবেন না।
আরও পড়ুন:
নতুন চাকরিপ্রার্থীরা এর আগে অভিজ্ঞতার নিরিখে দেওয়া ১০ নম্বর বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। দাবি উঠেছিল, ওই নম্বর ইন্টারভিউয়ের আগে দেওয়া যাবে না ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের। শুরু হয়েছিল আন্দোলন। নবম-দশম শ্রেণির জন্য শিক্ষক নিয়োগের তালিকা প্রকাশের পরও সেই বিতর্কই ফের মাথাচারা দিল।
যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশন সূত্রের খবর, একাদশ-দ্বাদশ বা নবম-দশম— উভয় ক্ষেত্রেই ইন্টারভিউয়ে যাঁরা ডাক পেয়েছেন তাঁদের ৫০ শতাংশই নতুন চাকরিপ্রার্থী। এসএসসি-র হিসাব বলছে, নবম-দশম শ্রেণির জন্য ইন্টারভিউয়ে ডাকা হবে প্রায় ৪০ হাজার প্রার্থীকে। এঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার নতুন চাকরিপ্রার্থী। আবার একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য যেখানে ২০ হাজারের কিছু বেশ প্রার্থীকে ডাকা হয়েছে ইন্টারভিউয়ের জন্য, সেখানে নতুন প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার।
এ প্রসঙ্গে এসএসসি চেয়ারম্যান সিদ্ধার্থ মজুমদার বলেন, “তালিকা অনুযায়ী নবম-দশম ও একাদশ দ্বাদশ মিলিয়ে প্রায় ৬০ হাজারের প্রার্থী ইন্টারভিউয়ের ডাক পেয়েছেন। এঁদের প্রায় ৫০ শতাংশরই নতুন পরীক্ষার্থী।”
এর আগে একাদশ-দ্বাদশে অনেক নতুন চাকরিপ্রার্থীই পূর্ণমান ৬০-এর মধ্যে ৬০ পেয়েও ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি বলে অভিযোগ। কারণ, সে বার কাট অফ মার্কস ৭০-এর বেশি ছিল। কিন্তু নবম দশমের ক্ষেত্রে এই ধরনের অভিযোগের জায়গা নেই। তবু আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে, ইন্টারভিউয়ের পর চাকরি পাবেন না তাঁরা।
নতুন চাকরিপ্রার্থী সুলতান মামুদ বলেন, ‘‘নবম দশম-এ ৭০ বা ৭০ এর নিচে ন্যূনতম নম্বর রয়েছে, সে কথা ঠিক। কিন্তু তাঁরাই সুযোগ পাবেন, যাঁরা পূর্ণমান ৬০-এর মধ্যে ৬০ বা ৫৬ পেয়েছেন। বেশির ভাগ পরীক্ষার্থীর পক্ষেই ১০০ শতাংশ নম্বর পাওয়া সম্ভব নয়। আমরা মনে করি, এসএসসি আমাদের সঙ্গে বঞ্চনা করেছে।’’
তবে শুধু নতুন চাকরিপ্রার্থীরা নন, ২০১৬ প্যানেলের ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের অনেকেই ঠাঁই পাননি একাদশ-দ্বাদশ বা নবম-দশমের তালিকায়। সংখ্যাটা প্রায় হাজারের কাছাকাছি। এ দিক সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের পুরনো চাকরির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫। ‘যোগ্য’ চাকরিহারা সঙ্গীতা সাহা বলেন, “অঙ্ক ও ভৌতবিজ্ঞান— এই দু'টি বিষয় অনেকেই ডাক পাননি। সংখ্যাটা ঠিক কত, তা হিসাব করে দেখতে হবে।”
শূন্যপদ কমে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ভৌতবিজ্ঞানেই। চাকরিহারাদের একাংশের অভিযোগ ২০১৬-র তুলনায় আসন কমেছে ২০২৫-এর নিয়োগে কোনও কোনও বিষয়ে শূন্যপদ কমেছে প্রায় ২০০-৪০০।