Advertisement
E-Paper

বিএলও-র কাজ সেরে কবে স্কুলে ফিরতে পারবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা! কমিশনের নয়া নির্দেশে উঠছে প্রশ্ন

বিএলও হিসাবে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ করা হয়েছে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের। প্রাথমিক শিক্ষকদের দৈনন্দিন পঠনপাঠন ছাড়াও, মিড-ডে মিল, ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প রূপায়ণ-সহ নানা কাজ করতে হয়। বহু স্কুল ভুগছে শিক্ষক সঙ্কটে।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ১৪:৫১
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও) হিসাবে কর্মরত শিক্ষক-শিক্ষিকারা কবে স্কুলে ফিরবেন, তা নিয়ে ফের উঠল প্রশ্ন। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যত দিন পর্যন্ত না খসড়া তালিকা প্রকাশিত হচ্ছে, ততদিন বিএলওরা কাজ চালিয়ে যাবেন। আর এর পরই পঠনপাঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকেরা। ডিসেম্বরের মাঝামাঝিও স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব মিটছে না, স্কুলগুলির খাতা দেখা থেকে শুরু করে পরীক্ষা নেওয়ার কাজ চালাবেন কারা।

অভিযোগ, বিএলও হিসাবে সবচেয়ে বেশি নিয়োগ করা হয়েছে প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকদের। প্রাথমিক শিক্ষকদের দৈনন্দিন পঠনপাঠন ছাড়াও, মিড-ডে মিল, ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প রূপায়ণ-সহ নানা কাজ করতে হয়। বহু স্কুল ভুগছে শিক্ষক সঙ্কটে। তার উপর এসআইআর-এর জন্য বিএলও হিসাবে কাজ করতে হচ্ছে শিক্ষকদের। প্রায় তিন মাস লাগবে তাঁদের সে কাজে। এর মধ্যে ডিসেম্বরে পরীক্ষা, ফলপ্রকাশ, জানুয়ারিতে নতুন শিক্ষাবর্ষে ভর্তির প্রক্রিয়া, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, শীতকালীন ভ্রমণ-সহ নানা কর্মসূচি থাকে। কে সামলাবে সে সব?

পরিস্থিতির কথা ভেবে উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা‌ও। তাঁদের দাবি, অনেক স্কুলে প্রথম প্রজন্মের ছাত্রছাত্রী রয়েছে। মূলত স্কুলের পড়াশোনায় উপর ভরসা করেই এগোতে হয় তাদের। শিক্ষকেরা স্কুলে সময় কম দিলে, ভুগতে হবে পড়ুয়াদের। বহু স্কুলের প্রধানশিক্ষককেও বিএলওর কাজে নিযুক্ত করা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে স্কুল পরিচালনায় সমস্যা হচ্ছে।

রাজারহাটের ভাতেন্ডা আন্নাকালী স্মৃতি মন্দির গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা অনামিকা চক্রবর্তী বলেন, “এমনিতেই শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে বেহাল স্কুলগুলি। বহু জায়গায় বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নেই। সামনে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা, স্কুলের পরীক্ষার খাতা দেখার কাজও রয়েছে। পরিস্থিতি সঙ্গীন।”

শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, বিএলও-রা গত অক্টোবর মাস থেকেই কোন‌ও না কোনও ভাবে এসআইআর-এর কাজ করছেন, বিশেষ করে শিক্ষক শিক্ষিকারা। স্কুলের পরীক্ষা, খাতা দেখা, ফল প্রকাশ ও রেজাল্ট আপলোড করার কাজ দারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “এমনিতেই এ রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে, বিশেষত গ্রামীণ এলাকার। তারপর এই পরিস্থিতি। নির্বাচন কমিশনের উচিত নির্দিষ্ট দিনের পর বিএলও হিসেবে কাজ করা শিক্ষক শিক্ষিকাদের দ্রুত মুক্ত করা।”

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী ১১ ডিসেম্বর শেষ হয়ে যাওয়ার কথা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বিএলও হিসাবে কাজের মেয়াদ। খাতা দেখা ছাড়াও, বাংলার শিক্ষা পোর্টালে ফলাফল আপলোড-সহ নানান কাজ করে থাকেন শিক্ষকরা। কারণ বেশির ভাগ স্কুলেই শিক্ষাকর্মীর অভাব রয়েছে। কিন্তু কমিশন জানিয়েছে প্রাথমিক খসড়া না প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত শিক্ষকরা কাজ চালিয়ে যাবেন। এতে ক্ষতি শিক্ষাব্যবস্থায়।

জেলা শিক্ষা দফতরের এক আধিকারিক যদিও বলেন, ‘‘স্কুলের কাজকর্ম যাতে স্তব্ধ হয়ে না যায়, সে ভাবেই বিএলও তালিকা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বারবার সময় বাড়ানোর জন্য সমস্যা হচ্ছে, বিকল্প কিছু করা যায় কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, “আমি চাইব তাঁরা দ্রুত স্কুলে ফিরুন। তবে বিএলওদের নির্বাচন কমিশন যে ভাবে অমানুষিক ভাবে খাটিয়েছে, যে ভাবে কাজ করাচ্ছে তাতে কতজনের স্কুলে শারীরিক ভাবে ফেরার ক্ষমতা থাকবে সেটা দেখার বিষয়।”

BLO WB Teachers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy