Advertisement
E-Paper

ক্রিকেট ১০০০, ফুটবল ১১০০! কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এসএফআই সদস্য তাজিমুল হক সরাসরি দাবি করেছেন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার নাম করে টাকা তোলার চেষ্টা করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাঁরা এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ১৭:৫১
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও লোগো ব্যবহার করে পড়ুয়াদের থেকে টাকা তোলার অভিযোগ উঠল একদল ছাত্রছাত্রীর বিরুদ্ধে। অভিযোগের তির তৃণমূল ছাত্র পরিষদের দিকে। সম্প্রতি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি ক্যাম্পাসে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে বলে একটি প্রচারপুস্তিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তার পরই ছড়িয়েছে বিতর্ক।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এসএফআই সদস্য তাজিমুল হক অভিযোগ করেছেন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতার নাম করে টাকা তোলার চেষ্টা করছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ। তাঁরা এ বিষয়ে উপাচার্যের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, “কর্তৃপক্ষের নাম ব্যবহার করে এই ধরনের প্রতিযোগিতার জন্য টাকা তোলা হচ্ছে। এ নিয়ে আমরা অভিযোগ দায়ের করেছি। যাঁরা এ সব কাজ করেছেন, তাঁরা সকলেই টিএমসিপি-র সঙ্গে জড়িত।” তৃণমূল ছাত্র পরিষদ অবশ্য এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেই দাবি করেছে।

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

ঘটনাটি গিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কানে। সেখানকার অন্তর্বর্তী উপাচার্য শান্তা দত্ত দে বলেন, “কিছু পড়ুয়া একটি প্রচারপুস্তিকা প্রকাশ করেছেন। সেখানে এমন ভাবে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির নাম উল্লেখ করা হয়েছে যে, মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষ ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করছেন। অথচ, আমরা এই প্রতিযোগিতার অনুমতিই দিইনি। এটি সম্পূর্ণ বেআইনি।”

বিতর্কিত ওই প্রচারপুস্তিকায় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার নাম দেওয়া হয়েছে ‘সংগ্রাম ২.০’। দাবি করা হয়েছে, ‘ইউনিভার্সিটি কলেজ অফ সায়েন্স, টেকনোলজি অ্যান্ড এগ্রিকালচার’ এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। ৭ থেকে ১০ নভেম্বর বিধাননগরে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি ক্যাম্পাসে হবে প্রতিযোগিতা। পুস্তিকায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরবান্বিত ইতিহাসও ফলাও করে ছাপানো হয়েছে। জানানো হয়েছে, প্রথম বারের সাফল্যের পর দ্বিতীয় বার বার্ষিক ক্রীড়ানুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।

এরই সঙ্গে প্রায় ২০-২২টি খেলার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ক্রিকেট, ফুটবল থেকে শুরু করে খো খো, দড়ি টানাটানি এমনকি, তাসের প্রতিযোগিতা বা ভিডিয়ো গেমও রয়েছে তার মধ্যে। এক একটি প্রতিযোগিতায় যোগদানের জন্য এক এক রকম মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যেমন, ক্রিকেটে নাম দিতে গেলে দলভিত্তিক ভাবে দিতে হবে ১০০০ টাকা। ফুটবলের জন্য ১১০০, ব্যাডমিন্টন ১০০ ও ২০০, দড়ি টানাটানির জন্য প্রতি দলকে দিতে হবে ১০০ টাকা। দাবা খেলার ক্ষেত্রে স্পষ্ট করে লেখা রয়েছে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা নাম দিলে ৭৫ টাকা, বহিরাগতদের জন্য ১০০ টাকা।

অন্তর্বতী উপাচার্য সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এমন ক্ষেত্রে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ও লোগো ব্যবহার করা বেআইনি। তাঁর কাছে যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, সে কথাও তিনি জানিয়েছেন। কিন্তু সে অনুমতি দেওয়া হয়নি বলেই বক্তব্য উপাচার্যের।

এ দিকে অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক বিদ্যুৎ পাল দাবি করেন, “ক্রীড়া প্রতিযোগিতার নামে টাকা তোলার অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি।”

জানা গিয়েছে, পুজোর ছুটির ঠিক আগে কয়েক জন পড়ুয়া কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীড়া আধিকারিক আমিনুল হকের কাছে যান। উপাচার্যের একটি চিঠি দেখান তাঁকে। কিন্তু তা গ্রাহ্য হয়নি বলে দাবি আমিনুলের। তিনি বলেন, “পড়ুয়াদের আবেদন খতিয়ে দেখার অনুরোধ করে চিঠি পাঠিয়েছিলেন উপাচার্য। কিন্তু পড়ুয়ারা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ঠিক কী চাইছেন, তার স্পষ্ট উল্লেখ ছিল না তাঁদের আবেদনে। শুধু ক্রীড়া প্রতিযোগিতার অনুমতি চাওয়ার কথা উল্লেখ ছিল। তাই আমি ফের চিঠি লিখে আনার নির্দেশ দিই ওই পড়ুয়াদের।” আমিনুলের দাবি, পড়ুয়ারা দ্বিতীয় বারও অসম্পূর্ণ চিঠি নিয়ে হাজির হন। সে বারও তাই কোনও অনুমতি বা অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়নি বলে বক্তব্য ওই আধিকারিকের।

এ দিকে, গোটা ঘটনায় তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জড়িত নয় বলেই দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেন্সর হওয়া ছাত্রনেতা অভিরূপ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছেন। আমরা এর সঙ্গে যুক্ত নই। সাধারণ যে কোনও পড়ুয়াই এই প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে পারবেন, দেবেন। শুধুমাত্র পুরস্কারের দায়িত্ব বহন করবে টিএমসিপি।” এসএফআইয়ের তোলা যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলেই তাঁর দাবি করেন অভিরূপ।

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, “বিষয়টি জানা নেই। তবে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে না। অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। যাঁরা এ সব করছেন, তাঁরা প্রচার চাইছেন।”

Calcutta University
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy