উচ্চ মাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হলেও জীবনের পরীক্ষায় হার মেনেছেন চন্দননগরের সুজলি পাত্র। এপ্রিল মাসের ২৮ তারিখে মারণরোগে (ক্যানসার) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুজলির। উচ্চ মাধ্যমিকে ৩১৬ পেয়ে উত্তীর্ণ হলেও এই নম্বর বাকি সকলে চোখে দেখতে পেলেও সুজলি নিজে আর দেখতে পেলেন না।
চন্দননগর লালবাগান বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুজলির স্বপ্ন ছিল শিক্ষক হবেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘বরাবরই মেধাবী ছিল। মাধ্যমিকেও প্রথম বিভাগে পাশ করেছিল। সুজলি বেঁচে থাকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল, শেষ পর্যন্ত হার মানতে হল।’’
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালে প্রথম ক্যানসার ধরা পড়ে সুজলির। প্রথমে ওভারিতে টিউমার তার পর এই টিউমার থেকে ক্যানসার ছড়িয়ে পড়ে। এর পর নিজেকে একাধিক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গিয়েছিল। প্রথমে অস্ত্রোপচার, তারপর কেমোথেরাপি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিল। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সিট পড়েছিল চন্দননগর কৃষ্ণভাবিনী নারী শিক্ষা মন্দিরে। সেখানেই পরীক্ষা দিতে গিয়ে অসুস্থ হওয়ায় কলকাতার নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতাল (এনআরএস)-এ ভর্তি করানো হয়েছিল। হাসপাতালের বিছানা থেকেই পরীক্ষা দেন তিনি। একটাই ইচ্ছে, ভাল ফল করে শিক্ষক হবেন।
১১ দিন বয়সে মায়ের মৃত্যু। বাবা ওই বয়সের সুজলিকে ছেড়ে অন্য সংসার পাতেন। বাবা-মা হারা মেয়েটির দায়িত্ব নেন তাঁর মামা সত্যজিৎ রায়। তাঁর দিন আনা দিন খাওয়া সংসারে মণ্ডলপাড়া জুট মিলে কাজ করে কোনওমতে সংসার টানেন। তাঁর মধ্যেই ভাগ্নির যতটা সম্ভব চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু শেষরক্ষা হল না, এটাই বড় আফসোস মামার।