রাস্তায় আর অবস্থান আন্দোলন নয়। সোমবার খুলেছে রাজ্যের সরকারি স্কুল। গরমের ছুটির পর স্কুলমুখী ‘যোগ্য’ শিক্ষক শিক্ষিকারা। পাশাপাশি, দু’টি পৃথক পরীক্ষার দাবিতে আইনি পথে হাঁটতে চলেছেন তাঁরা।
‘যোগ্য’ শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, সোম এবং মঙ্গলবার রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে তাঁদের বিরুদ্ধে হওয়া ‘অন্যায়’-এর বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন তাঁরা। অভিভাবকদের মধ্যে বিলি করবেন লিফলেট। এর পর বুধবার থেকে ‘রোটেশন’ পদ্ধতিতে অবস্থান আন্দোলন চলবে সেন্ট্রাল পার্কের পাশে। একই সঙ্গে, বৃহস্পতিবার রাজ্য জুড়ে ডাক দেওয়া হয়েছে ধিক্কার মিছিল এবং ‘ন্যায়যাত্রা’র। এই কর্মসূচিতে স্কুলের অন্য শিক্ষকশিক্ষিকাদেরও পাশে চাইছেন চাকরিহারারা।
আরও পড়ুন:
অবস্থান আন্দোলনের পাশাপাশি ফের আদালতের দ্বারস্থও হচ্ছেন ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকারা। তাঁদের দাবি, রিভিউ পিটিশনের আগে নতুন করে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া বা তার ফর্ম পূরণ করা যাবে না। যদি পরীক্ষা হয়, তা হলে তা নিতে হবে দু’টি ভাগে। যে শিক্ষকেরা যোগ্যতার নিরিখে ২০১৬-র প্যানেলে চাকরির সুযোগ পেয়েছিলেন, তাঁদের পরীক্ষা আলাদা করে নিতে হবে। কারণ, নতুন নিয়োগ পরীক্ষার বিধিতে তাঁদের যে সুবিধা দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে, তা পুরনো মামলার ভিত্তিতেই। এর ফলে তাঁদের পরীক্ষা আলাদা ভাবে গ্রহণ করলে চাকরিহারারা ‘যোগ্য’ শিক্ষকরা পৃথক ভাবে দু’টি পরীক্ষাতে বসার সুযোগ পাবেন।
এ ছাড়া, ওবিসি মামলা এখনও আদালতে বিচারাধীন। আর তাই সেই জটিলতার জন্য বহু যোগ্য শিক্ষকরা নিয়োগ পরীক্ষায় বসার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবেন। তাঁদের জন্য কী করবে সরকার, তারও স্পষ্ট উল্লেখ নেই। এই ধোঁয়াশা কাটাতে হবে।
তাঁদের দাবি, বর্তমান যে গেজেট প্রকাশিত হয়েছে, সেই গেজেট অনুযায়ী আলাদা একটি পরীক্ষা নেওয়া হোক। নতুনদের থেকে আলাদা পরীক্ষা নেওয়া হোক পুরনোদের। এই পরীক্ষা নেওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, কারা পরীক্ষা দিতে পারবেন এবং কারা পারবেন না অর্থাৎ ‘যোগ্য’ এবং ‘অযোগ্য’ পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হোক। শুধু তাই নয় তাঁদের দাবি, সরকার প্রায় চার হাজার ‘অযোগ্য’র তালিকাও প্রকাশ করুক।
আরও পড়ুন:
চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে এমন বহু পরীক্ষার্থী রয়েছেন, যাঁরা শারীরিক ও মানসিক কারণে পরীক্ষা দিতে পারবেন না। তাঁদের সম্পর্কেও নয়া বিধিতে কিছু উল্লেখ করা হয়নি। তাই সরকারকে আইনি পথ অবলম্বন করে ‘রিপ্যানেল’-এর দাবি করতে হবে।
নিরপরাধ নির্দোষ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষা কর্মীদের যে কোন মূল্যে চাকরি ফেরানোর রাস্তা সরকারকে প্রস্তুত করতে হবে বলে দাবি করা হয়েছে। ‘যোগ্য শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চ’-এর আহ্বায়ক মেহেবুব মণ্ডল বলেন, “আমাদের কাছে খবর রয়েছে বিরুদ্ধ পক্ষ আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছে। তাঁদের দাবি, নতুন পরীক্ষার্থীদের কোনও সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না। আমরা আদালতে দাবি জানাব আমরা ‘যোগ্য’, আমাদের সুযোগ-সুবিধা থাক। যে বিধি প্রকাশিত হয়েছে তা মেনে পরীক্ষা গ্রহণ করা হোক কিন্তু দু’টি ভাগে।”