ঘটনার এক সপ্তাহ পার। কসবার আইন কলেজের ধর্ষণের ঘটনায় এ বার মুখ খুললেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রাজনৈতিক দাদাগিরিতে উষ্মা প্রকাশ করে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দিয়েছেন।
গত ২৫ জুন দক্ষিণ কলকাতার আইন কলেজের ভিতরে ঘটে গিয়েছে ধর্ষণের ঘটনা। এ বার সেই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ রাজ্যপাল তথা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের। রবিবার রাজভবন থেকে এই নিয়ে বিবৃতি জারি করা হয়। রাজ্যপাল জানিয়েছেন, কলেজ ক্যাম্পাসের ভিতর এমন ভয়াবহ ঘটনায় তিনি উৎকণ্ঠিত। ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শান্তা দত্ত দে-র সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রেখে চলেছেন তিনি। একই সঙ্গে পড়ুয়াদের স্বার্থে উপাচার্যকে সমস্ত নিয়মবিধি মেনে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশও দিয়েছেন। এ ছাড়া, ভয়মুক্ত শিক্ষাপ্রাঙ্গণ সুনিশ্চিত করতে বলেছেন তিনি, যাতে পড়ুয়ারা পড়াশোনা করতে পারেন এবং কলেজের স্বাভাবিক ছন্দ অক্ষুণ্ণ থাকে।
আরও পড়ুন:
শিক্ষার গুণমানে বরাবরই এগিয়ে রাজ্য— পশ্চিমবঙ্গের সেই ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন রাজ্যপাল। বর্তমানে কলেজ ইউনিয়নের মুষ্টিমেয় রাজনৈতিক নেতার ক্ষমতা অপব্যবহারকে তীব্র ভর্ৎসনা করেছেন রাজ্যপাল। তিনি বলেন, “কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ রকম রাজনৈতিক দাদাগিরি এবং নারী নির্যাতনের মতো কুৎসিত বা ঘৃণ্য ঘটনা ঘটতে পারে না। সে ক্ষেত্রে দেশের আইন কোনও ভাবেই তা বরদাস্ত করবে না।” তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, আইনের উপর কেউ নয়।
রাজ্যপাল জানিয়েছেন, তবে কসবার ঘটনার পর কলেজ স্তব্ধ হয়ে গেলে চলবে না। আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে হবে। শুরু করতে হবে পঠনপাঠন। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কলেজ এবং রাজ্য প্রশাসন যথাযথ পদক্ষেপ করবে বলেই তাঁর আশা।
উল্লেখ্য, ২৫ জুন কসবার সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজের ক্যাম্পাসের রক্ষীর ঘরে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে ওই কলেজেরই দুই ছাত্র এবং এক প্রাক্তনীকে। ওই প্রাক্তনী আবার কলেজের অস্থায়ী কর্মী হিসাবেও নিযুক্ত। যদিও মূল অভিযুক্তকে কলেজের চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ, ছাত্রীকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তা খারিজ করার পরেই তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। বয়ানে অসঙ্গতি থাকায় কলেজের নিরাপত্তারক্ষীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, অভিযুক্তরা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)