Advertisement
E-Paper

খয়রাশোলে নাবালিকার বিয়ে বন্ধ করল প্রশাসন

দিনমজুর গরিব বাবা ভেবেছিলেন, বিয়ে দিলে মেয়ের ভবিষ্যত্ সুরক্ষিত হবে। কিন্তু, মেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিল। শুধু এ কথা বাড়িতে বলে উঠতে পারেনি সে। অনিচ্ছার বিয়েতে সায় দিতে না পেরে তাই সোমবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল বীরভূমের সিউড়ির খয়রাশোলের পাঁচড়ার ওই নাবালিকা। অবশেষে পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্যোগে তার বিয়ে বন্ধ হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০১৫ ১৮:১৬

দিনমজুর গরিব বাবা ভেবেছিলেন, বিয়ে দিলে মেয়ের ভবিষ্যত্ সুরক্ষিত হবে। কিন্তু, মেয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেয়েছিল। শুধু এ কথা বাড়িতে বলে উঠতে পারেনি সে। অনিচ্ছার বিয়েতে সায় দিতে না পেরে তাই সোমবার বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিল বীরভূমের খয়রাশোলের পাঁচড়ার ওই নাবালিকা। অবশেষে পুলিশ ও প্রশাসনের উদ্যোগে তার বিয়ে বন্ধ হল।

পুলিশ জানিয়েছে, সোমবার সব জিনিসপত্র গুছিয়ে বাড়ি থেকে পালায় বছর ১৬-র ওই কিশোরী। খয়রাশোল থেকে বাস ধরে সে এসে পৌঁছয় রাজনগরের চন্দ্রপুরে। কিন্তু কোথায় গিয়ে উঠবে, কী করবে— ঠিক করতে না পেরে রাস্তায় বসে কাঁদতে শুরু করে সে। খবর পেয়ে রাজনগর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সুকুমার সাধু তাকে নিজের বাড়িতে নিয়ে আসেন। কিশোরীর কাছ থেকে সব কথা শোনেন তিনি। রাতটুকু এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থাও করে দেন। পরের দিন সকাল হতেই সুকুমারবাবু সব কথা জানান খয়রাশোলের বিডিও-কে। খবর পাঠান সেখানকার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অসীমা ধীবরকেও। পুলিশে খবর যায়। তার পর সুকুমারবাবুর উদ্যোগে মঙ্গলবার সকালে ওই কিশোরী ফিরে আসে তার বাড়িতে। এ দিন গায়ে হলুদের কথা থাকলেও পুলিশ ও প্রশাসনের নির্দেশ মতো বন্ধ হয়ে যায় তার বিয়ে।

নাবালিকার বাবা টিনু দাস জানান, তাঁর আরও দু’টি মেয়ে এবং একটি ছেলে আছে। অভাবের সংসারে ভবিষ্যত্ সুরক্ষিত করার জন্যই তিনি মেয়েদের বিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েই শুরু হয়েছিল সেই উদ্যোগ। কিন্তু, নাবালিকার বিয়ে যে আইনত নিষিদ্ধ, সে কথা জানতেন না বলে তাঁর দাবি।

বিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেন অথৈ জলে পড়েন টিনু। এর মধ্যেই বিয়ের জন্য অনেক খরচ হয়ে গিয়েছে তাঁর। দুবরাজপুরের পাত্রপক্ষকে পণ দিতে হয়েছে তিরিশ হাজার টাকা। এ ছাড়াও পাত্রের জন্য কিনেছিলেন সাইকেল, ঘড়ি ও অন্যান্য যৌতুক। প্রীতিভোজের আয়োজনও প্রায় শেষের মুখে। টিনু বলেন, “আমরা তো গরিব। এ দিকে আবার তিন মেয়ে। তাই বিয়ে দিয়ে ভাল ভাবে রাখতে চেয়েছিলাম। বিয়ের তারিখও চূড়ান্ত। অথচ প্রশাসন বিয়ে দিতে বারণ করছে। কী করব বুঝতে পারছি না!”

বিয়ে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ওই কিশোরী বলে, “আমি বিয়ে করব না বলে পালিয়েছিলাম। আমি আরও পড়তে চাই।”

পুলিশ জানিয়েছে, বিয়ে বাবদ ইতিমধ্যেই টিনুবাবুর খরচ হয়ে যাওয়া টাকা ফেরতের আশ্বাস দিয়েছে প্রশাসন। দুবরাজপুরের ওসিকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে যাতে পাত্রপক্ষের তরফে পণের টাকা ফেরত পান তিনি।

Khoyrasole marraige of minor girl birbhum minor marraige minor girl
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy