পরিষদীয় সচিব আইন বাতিল করল কলকাতা হাইকোর্ট। সোমবার প্রধান বিচারপতির এক ডিভিশন বেঞ্চ এই আইন বাতিল করে। আদালতের যুক্তি, এই আইন সংবিধানের ১৬৪/১-এ ধারার বিরুদ্ধ। এ দিন হাইকোর্টের এই নির্দেশের ফলে ফের এক বার ধাক্কা খেল রাজ্য সরকার।
বিধানসভার সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন মন্ত্রকের যোগসূত্র স্থাপনে ২০১৩-য় এই আইন তৈরি করা হয়। আইন অনুযায়ী পরিষদীয় সচিব পদ সৃষ্টি করা হয়। এক জন রাষ্ট্রমন্ত্রীর সমান ক্ষমতা দেওয়া হয় সচিবদের। তত্কালীন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন বিলটিতে সম্মতি দেন। দু’দফায় ২৬ জন তৃণমূল বিধায়ককে পরিষদীয় সচিবের দায়িত্ব দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে শশী পাঁজা এবং আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় মন্ত্রী হয়ে যাওয়ায় এবং শীলভদ্র দত্তকে তাঁর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় বর্তমানে মোট ২৩ জন পরিষদীয় সচিব রয়েছেন।
পরিষদীয় সচিব আইন নিয়ে তৃণমূল-শাসিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব হয়েছিল বিরোধীরা। এই আইনকে আটকানোর জন্য রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছিল বামফ্রন্টের পরিষদীয় দল। তাদের অভিযোগ ছিল, এই আইন কার্যকর হলে সংবিধানের ১৬৪/১-এ ধারাকে লঙ্ঘন করবে। পাশাপাশি, রাজ্যের কোষাগারে অহেতুক বোঝা বাড়বে। একই দাবি ছিল কংগ্রেসের পরিষদীয় দলের।
কী কারণে এই আইন?
রাজ্য সরকারের স্বপক্ষে যুক্তি দেখানো হয়েছিল, রাজ্যে আইএএস, আইপিএস এবং অন্যান্য আধিকারিকের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। উন্নয়নমূলক কাজে গতি আনতেই এই পরিষদীয় সচিব পদের সৃষ্টি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এ দিন বিধানসভাও সরগরম হয়ে ওঠে। সভার প্রথমার্ধে এই বিষয়টি উত্থাপন করেন সিপিএম বিধায়ক রামেশ্বর দলুই। তবে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে আলোচনা খারিজ করে দেন। এর পর উল্লেখ পর্বে বিষয়টি ফের উত্থাপন করেন সিপিএম বিধায়ক আনিসুর রহমান। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আলোচনায় অনুমতি দেননি স্পিকার। পরিবর্তে বিধানসভার কার্যবিবরণী থেকে বিষয়টি বাদ দিয়ে দেন তিনি। সরকারি সূত্রে জানানো হয়েছে, বিষয়টিতে তারা গুরুত্ব দিতে নারাজা। আইন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য বলেন, “ হাইকোর্টের নির্দেশ হাতে না পাওয়া পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে কিছু বলা যাবে না।” তবে হাইকোর্টের এ দিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিরোধীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy