জলমগ্ন শ্রীনগরের বহু দোকান। ছবি: এপি।
উপত্যকা জুড়ে প্রবল বৃষ্টি। বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে নদীগুলি। রাজ্যের সমস্ত স্কুল-কলেজ সরকারকে ছুটি ঘোষণা করতে হয়েছে। বৃষ্টি কবে থামবে, সে ব্যাপারে কোনও আশার কথা শোনাতে পারছে না আবহাওয়া দফতর। এরই মধ্যে সোমবার জলমগ্ন জম্মু-কাশ্মীরে বন্যা সংক্রান্ত সতর্কবার্তা জারি করল মুফতি সরকার।
গত বছরের বন্যার ক্ষত শুকোনোর আগেই ফের টানা বৃষ্টির কবলে পড়ায় উপত্যকা জুড়ে আতঙ্কের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। ২০১৪-র সেপ্টেম্বরে বন্যায় প্রবল ক্ষতি হয় রাজ্যের। গৃহহারা হন প্রচুর মানুষ। মৃত্যু হয় শতাধিক মানুষের। রাজ্যে তখন কংগ্রেস সমর্থিত ওমর আবদুল্লার সরকার। কেন্দ্রে যদিও বিজেপি সদ্য ক্ষমতায় এসেছে। সাহায্যের সব রকম হাত উপত্যকার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছিল মোদী সরকার। এখন রাজ্যে বিজেপি সমর্থিত মুফতি সরকার। এ দিন বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মুক্তার আব্বাস নকভি-সহ একটি উচ্চ পর্যায়ের দল পাঠিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। নকভি বলেন, “ভূস্বর্গের বন্যা পরিস্থতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় কেন্দ্র সব রকম সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।” শ্রীনগরে যান মুখ্যমন্ত্রী সঈদ মহম্মদ মুফতি। তিনি দুর্গতদের ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেন। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী নঈম আখতার বলেন, “গত বছরের বন্যা থেকে শিক্ষা নিয়েছে রাজ্য। পরিস্থিতি মোকাবিলায় তাই আগে থেকেই ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।” আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত রাজ্যের সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এ দিন সকাল থেকে ভারি বৃষ্টি না হলেও রাতভর টানা বৃষ্টিতে বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে ঝিলম নদী। আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টার বিরতি দিলেও পাকাপাকি ভাবে বৃষ্টি থামার কোনও সম্ভাবনা নেই। শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মীরের সঙ্গম এলাকায় জলস্তর দ্রুত বাড়তে থাকায় নদী লাগোয়া বসত এলাকাগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। বেশ কিছু এলাকায় মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্রীনগরে আটকে পড়েছেন বহু পর্যটক। বদগাম জেলায় দু’টি বাড়ি ধসে পড়েছে। অন্তত ১৬ জন সেখানে আটকে পড়েছেন বলে আশঙ্কা করছে পুলিশ। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ডিরেক্টর ও পি সিংহ জানিয়েছেন, চারটি দলকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপত্যকার বৃষ্টি কবলিত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে। সব রকম পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাঁদের। এরই পাশাপাশি, রাজ্যের মানুষকে আতঙ্কিত না হতে আবেদন জানিয়েছেন তিনি।
পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে শনিবার থেকে প্রবল বর্ষণ শুরু হয় উপত্যকায়। টানা বৃষ্টির জেরে বেশ কিছু জায়গায় ধস নামে। ভেঙে পড়ে বহু ঘরবাড়ি। জলমগ্ন হয়ে পড়ে কাশ্মীর ও শ্রীনগরের বহু এলাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy