- ফাইল চিত্র
তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়-মুকুল রায় দ্বৈরথের উত্তাপ আরও বাড়ল। মুকুল-পুত্র শুভ্রাংশু রায় তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কার্যত সরাসরি চ্যালেঞ্জ ছোড়ায় এ বার বিড়ম্বনা বাড়ল দলীয় নেতৃত্বের। যে কারণে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দিন তিনেকের মধ্যেই সুপারিশ করতে চলেছে তৃণমূলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি।
বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কল্যাণীর ভোটে মুকুলবাবু এবং তাঁর পুত্র শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে অন্তর্ঘাতের অভিযোগ নিয়ে মমতা সরব হওয়ায় সমস্যা বাড়ছিলই। বীজপুরের বিধায়ক শুভ্রাংশু দলনেত্রীর সেই অভিযোগ নস্যাৎ করে পাল্টা অভিযোগ তুললেন মমতাকে লক্ষ্য করেই। সংবাদমাধ্যমে শুভ্রাংশু শুক্রবার দাবি করেছেন, কল্যাণীতে ভোটের দায়িত্ব দলের তরফে তাঁকে দেওয়া হয়নি। কল্যাণীতে তৃণমূলের ভোট কমার যে অভিযোগ উঠেছে, তার জবাবে শুভ্রাংশুর পাল্টা দাবি, “গত লোকসভা ভোটে শ্রীরামপুর, বিধাননগরে দলের ভোট কমেছিল। এমনকী, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরেও তৃণমূল পিছিয়ে পড়েছিল।” দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরের বিধায়ক মমতা নিজে। সেই কেন্দ্রে কেন দল পিছিয়ে পড়েছিল, তারও তদন্ত দাবি করেছেন শুভ্রাংশু।
দলনেত্রীর দিকে মুকুল-পুত্রের এমন ‘আস্ফালন’-এ স্বভাবতই ‘ক্ষুব্ধ’ তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের কোনও নেতাই যে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ করে রেহাই পাবেন না, তা-ও এ দিন স্পষ্ট করে দেন দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বৈদ্যুতিন মাধ্যমে শুভ্রাংশুর বক্তব্য দেখে দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি প্রাথমিক আলোচনায় বসে। দল শুভ্রাংশুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, এই ইঙ্গিত দিয়ে ওই কমিটির অন্যতম সদস্য তথা দলের মহাসচিব পার্থবাবু বলেন, “বীজপুরের বিধায়ক যে ভাষায় ও যে কায়দায় কথা বলেছেন, তাতে আপাতদৃষ্টিতে দলীয় লাইনের নির্দেশিকা লঙ্ঘিত হয়েছে।” বৈদ্যুতিন মাধ্যমে শুভ্রাংশুর বক্তব্যের ভিডিও ক্লিপিং এবং সংবাদপত্রে তাঁর বক্তব্য নিয়ে আগামী তিন দিন পরে ফের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বৈঠক করবে বলে পার্থবাবু জানান। তাঁর কথায়, “৭২ ঘণ্টা পরে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি ফের বসবে। ওই বিধায়কের বক্তব্য পুঙ্খানুপুঙ্খ খতিয়ে দেখে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য তৃণমূলকে সুপারিশ করবে।”
দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির অন্যতম সদস্য মুকুলবাবু। ফলে কমিটি তাঁর সঙ্গে কথা বলেছে কি না, সেই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে পার্থবাবুর বক্তব্য, “আমাদের দলে কে কী করবে, তা স্থির করার দায়িত্ব আমাদের উপরে ছেড়ে দিন। যাঁরা এখন কলকাতায় রয়েছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। যাঁরা বাইরে রয়েছেন, ফোনে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়েছে।” ফলে মুকুলবাবুকে এড়িয়েই শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি তাঁর ছেলের ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে বলে দলীয় সূত্রের খবর।