আগেই তাঁরা দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। মঙ্গলবার জনগণের কমিটির ওই চার নেতাকে সাজা শোনালেন বিচারক। ছত্রধর মাহাতো ছাড়াও সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন সুখশান্তি বাস্কে, শম্ভু সরেন এবং সাগেন মুর্মু। এরই পাশাপাশি রাজা সরখেল ও প্রসূন চট্টোপাধ্যায় নামে দু’জনের সাজা শোনান মেদিনীপুরের চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক কাবেরী বসু। এঁদের সকলেরই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।
সোমবার ইউএপিএ (আনলফুল অ্যাক্টিভিটিজ প্রিভেনশন অ্যাক্ট) মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন ছত্রধর-সহ জনগণের কমিটির চার নেতা। রাজা এবং প্রসূনের বিরুদ্ধে যদিও ইউএপিএ ধারায় মামলা রুজু হয়নি। ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২১ ধারায় তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এই প্রথম মেদিনীপুর আদালতে ইউএপিএ মামলায় কোনও বিচারাধীনের শাস্তি হল।
২০০৯-এর ২৬ সেপ্টেম্বর লালগড়ের বীরকাঁড়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়েন ছত্রধর। সে দিনই তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ-র পাঁচটি এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ছ’টি ধারায় মামলা রুজু হয়। তার মধ্যে অস্ত্র আইনও ছিল। ওই দিন লালগড় থানায় মূল যে অভিযোগটি দায়ের হয়েছিল, তার ভিত্তিতে পরবর্তী কালে আরও ছয় জনকে গ্রেফতার হয়। সব মিলিয়ে ধৃত সাত জনের মধ্যে রঞ্জিত মুর্মু জেল হেফাজতেই মারা যান। ছত্রধর-সহ বাকি ছয় জনকে সোমবার হাজির করানো হয় মেদিনীপুর আদালতে। এঁদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টার অভিযোগও এনেছিল পুলিশ। তবে আদালত তা খারিজ করে দেয়।
সাজা ঘোষণার দিন ছত্রধরের মুখে ছিল গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা। আদালতেই তিনি বলেন, “জঙ্গলমহলের মানুষের আন্দোলনকে এ ভাবে হেয় করা যাবে না। সে আন্দোলন চলবে।” সাজা শোনার পরেও ছ’জনের কাউকে দৃশ্যত ভেঙে পড়তে দেখা যায়নি। বরং সমস্বরে তাঁরা গেয়ে উঠেছেন, ‘আমরা ক্ষুদিরামের ভাই, আমরা ভগৎ সিংহের ভাই/ আমরা দেশের কাজে আছি, আর অন্য কোনও কাজে নাই।’