কলকাতা বিমানবন্দর চত্বরে উত্সবের আবহ। চার দিকে ঢাক বাজছে। বাজছে কাঁসরও। আবির খেলা চলছে। চলছে ঢাকের তালে নাচ। ঘরের ছেলে ঘরে ফিরল যে!
প্রায় চার মাস পর জঙ্গিদের কবল থেকে মুক্ত দীপ মণ্ডল সোমবার বাড়ি ফিরলেন। ইম্ফল থেকে বিমানে প্রথমে কলকাতা, তার পর বাঁকুড়ার ইন্দাস। মুক্ত দীপকে অভর্থনা জানাতে এ দিন ইন্দাস থেকে দু’টি বাসে করে তাঁর বাবা ও বোনের সঙ্গে শ’দুয়েক মানুষ এসেছিলেন কলকাতায়। ঢাক-কাঁসরের তালে শরীর দোলানোর পাশাপাশি তাঁরা এ দিন আবির খেলাতেও মাতেন। দীপের পাড়া থেকে আসা এক জন বললেন, “আমাদের জীবনে গত কয়েক মাস ধরে কোনও আনন্দ ছিল না। দীপ ঘরে ফেরায় আজ আমাদের আনন্দের দিন। তাই রঙের খেলায় মেতেছি।”
সোমবার বিকেল ৩টে ২০ নাগাদ কলকাতায় নামার কথা ছিল এয়ার ইন্ডিয়ার ‘এ ওয়ান ৭১৩’ উড়ানের। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের প্রায় ২ ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে পাঁচটা নগাদ রানওয়ের মাটি ছোঁয় উড়ানটি। তত ক্ষণে আনন্দে মাতোয়ারা ইন্দাসবাসী দীপের বাবা নিখিল মণ্ডলকে কাঁধে তুলে নাচছেন। উচ্ছ্বসিত নিখিলবাবু বললেন, “যে দিন প্রথম শুনলাম দীপকে ছেড়ে দিয়েছে ওরা, নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারিনি। আর যেন তর সইছে না। এক এক ঘণ্টা মনে হচ্ছে এক একটা দিন।”
অবশেষে বাড়ির পথে দীপ। সোমবার সন্ধ্যায় শৌভিক দে-র তোলা ছবি।
এ দিন ইন্দাস থেকে এসেছিলেন দীপের বোন মধুমন্তী। তিনি ইন্দাস কলেজে পড়েন। মধুমন্তীর সঙ্গে তাঁর কলেজের প্রায় ২০ জন সহপাঠীও হাজির ছিলেন বিমানবন্দরে।
যাকে ঘিরে এত উচ্ছ্বাস তাঁর কী প্রতিক্রিয়া?
দীপ বললেন, “ছাড়া পেয়ে আমি খুশি। পশ্চিমবঙ্গ ও মিজোরাম সরকারকে ধন্যবাদ।”
সংবাদমাধ্যম এবং বিমানবন্দরে নিরাপত্তার বেড়াজাল ছাড়িয়ে পৌনে সাতটা নাগাদ ভাড়া করা বাসে ইন্দাসের উদ্দেশে রওনা হন দীপ ও তাঁর পরিবার। দৃশ্যতই উচ্ছ্বসিত দীপ বলেন, “এ বার বন্ধুদের সঙ্গে দোল খেলব।”
তবে এত আনন্দের মধ্যেও দীপকে নিয়ে পুরোপুরি চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না ইন্দাসবাসী। তাঁদের এক জনের কথায়, “ঘরে ফেরার আনন্দের মধ্যেই আমরা দীপকে নিয়ে উদ্বিগ্ন। ছেলেটা তো বেকার হয়ে গেল। রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের আবেদন, কাছেপিঠে যদি ওর একটা চাকরির ব্যবস্থা করা যায়। তা হলে ওকে আর দূরে কোথাও যেতে হবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy